বিলুপ্তি
-সুদেষ্ণা সরকার
ঋতুদের বাড়ির পাশের খালে একটা কুকুর মরে পড়ে আছে।কাল রাতেই হয়তো মরেছে, কি উৎকট গন্ধ বেরিয়েছে।কৌতূহলী লোকজন কারণ অনুসন্ধানে ব্যস্ত,কুকুরটার একটা পা ভেঙ্গেছে, রক্তটা শুকিয়ে জমাট বেঁধে গেছে।সাত সকালে এই অনাসৃষ্টি কান্ডকারখানাতে অনেকেই বিরক্ত।পাড়ার ছেলেগুলো গভীর আলোচনাতে মগ্ন
বাপাই এর মা নাকে কাপড় চাপা দিয়ে ব্যালকোনি থেকে চেঁচিয়ে বলল-“আরে করপোরেশনের লোকদের ডেকে এটার একটা ব্যবস্থা করতে পারছো না? উফফ!! যত উটকো ঝামেলা।
দীপা কাকিমা থেকে ঋতুর মা সবাই বিরক্ত হয়ে উঠছে।সকালটা বুঝি তাদের নষ্ট হয়ে গেল।
কিন্তু ঋতু কিছু বলছে না।মৃত কুকুরটার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে।জমাট বাঁধা রক্তগুলোর উপর মাছি ভন্ ভন্ করছে,হয়তো এক্ষুনি বেঁচে উঠে একরাশ কাঁচা তুলতুলে মাংসের উপর থাবা বসাবে।ভয়ে গা শিউরে উঠল ঋতুর।বিপ্লবের মতো মানুষেরা কাউকে মারতে ভয় পায়না।
সাত সকালে একটা কুকুর মারা যাওয়াতে বুঝি এক মনোরম সকালটার বারোটা বাজতে পারে,কিন্তু কেউ হয়তো জানে না এই কুকুরটা মারা না গেলে পাশের বাড়ির মেয়েটাকে আজ সকাল থেকে পাওয়া যেত না।