একটি প্রতারনা
-চিন্ময় মহান্তী
মেয়েটা জেগে থাকে – ঝাড়বাতি অতীত , তবুও —
বহমান বহর তার , মনের অলিন্দে অলিন্দে ।
মেয়েটা জেগে থাকে – মনের দেওয়ালে জমে ছত্রাক
মুখে যদি দেখে কখনো কোনো শীতলতার ছায়া কারো –
মেয়েটা জেগে জেগে – পড়ে যায় ধন্দে ।
পোশাকের বহর দেখে ভাবে —
বিকেলে ঘুম ভেঙেছিল হয়তো অন্য কোনো ছন্দে ।
মনে উঁকি দেয় সেই দিনটার কথা —
কতো আশা বুকে নিয়ে এঁকেছিল শূন্য সিঁথিতে সিঁদুর ,
কয়েকটা রাত সোহাগ পেয়েছিল – মন্দের ভালো ।
তারপর —
বিক্রি হয়ে গেল — তার ঠিকানা হলো এঁদো গলি ।
দ্বিতীয় ঈশ্বরের আশীর্বাদ নিল তার স্বামী
হয়তো সেই খাপরার চালা আজ নেই , দেবগৃহের ।
আজ বোঝে সেটা দেবগৃহ নয়- ছিল নরক ভূমি !
মনের ক্যানভাসে দেখে মেয়েটা — নরকভূমিতে অট্টালিকা
দ্বিতীয় ঈশ্বরের আশীর্বাদ ।
মেয়েটা দেখে জেগে – চতুর্দিকে তার কালো রাতি ।
চোখের কোনার রূপান্তরিত রক্ত মোছে মেয়েটা —
মা বাপের কথা মনে পড়ে – দোষ দেয় না ,
ওরা যে গরীব – তাই হুজুগের কবলে পড়ে খোঁজ নেয় নি
বাবার সুরা পানের বন্ধু কি যেন নাম ! মনে পড়েনা আজ
খোঁজ দিয়েছিল-সেই রাতেই সাতপাক ।
কোনোক্রমে নাম সই করতে শিখেছিল মেয়েটা-
মানুষটার মন , সে বুঝতে পারেনি ! বুঝবার কথাও নয় ।
হানিমুনের নাম করে নিয়ে এল – ‘ আসছি’ বলেও এলো না
সেদিন থেকেই ঠিকানা তার এঁদো গলি ।
নাহ্ ! আর অতীতের স্মৃতি রোমন্থন করার সময় নেই
দরজার ঠক্ ঠক্ শব্দ বাড়ছে – কমছে ফারাক ,
কাঁপা কাঁপা হাতে খিলটা খুলে দেয় মেয়েটা
তারপর —
চিরপরিচিত জগতে ভেসে যায় -গা সওয়া
এখানে কোনো প্রতারনা নেই ,আছে শুধু লেনা-দেনা ।