এলোমেলো স্বপ্নের দিন
-অরুণ কর
আড়চোখে একবার তপুকে দেখে নিয়ে কয়লার উনুনে জোরে জোরে হাওয়া দিতে লাগল ফটিক। সকালবেলা সবে আঁচ দিয়েছে, এ সময়ে তপুকে দেখে মনে মনে বিরক্ত হলেও মুখে কিছু বলল না। আজ সবে মাসের পনেরো তারিখ, এর মধ্যেই সাতান্ন টাকা ধার। মাসের শেষে ধারটা কতোয় গিয়ে দাঁড়াবে, মনে মনে হিসেব করতে লাগল। সক্কালবেলা ধেরো খদ্দের কেই বা পছন্দ করে!
বাইরে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি, তার মধ্যেইকয়লার উনুন থেকে বগবগিয়ে সাদা ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠছে। তপু প্রতিদিনকার অভ্যেসমত বেঞ্চখানা ফুঁ দিয়ে ভালো করে ঝেড়ে নিয়ে ঝুপ করে বসে পড়ল।
প্রথম প্রথম তপুকে বেশ খাতির করত ফটিক। ছোটবেলায় প্রাইমারিতে একসঙ্গে পড়েছে। নিজের থেকে চায়ের গেলাসে এক খাবলা সর ফাউ দিত। কখনো বা নিজের থেকে একটা বিড়ি এগিয়ে দিয়ে নিজেও একটা ধরাত। কিন্তু এখন সেসব খাতির-যত্ন উবে গেছে। মাসের পর মাস সকালবেলা থাপনজুড়ে বেঞ্চখানা আঁকড়ে থাকে বলে ফটিক যে বিরক্ত হয়, তা কি টের পায় না তপু? জড়ভরতের মত চুপচাপ বসে কী যেন ভাবে।
একে একে দোকানে খদ্দের আসতে শুরু করেছে। ফটিকের বাণিজ্যভাগ্য ভালো। সারাদিন দোকানখানা মোটামুটি জমজমাট থাকে। বিকেলে মুড়ি-তেলেভাজার জন্যে তো মাঝে মাঝে লাইন পড়ে যায়। এর মধ্যেই আবার একখানা বৌ এবং গোটা তিনেক বাচ্চা নিয়ে ফটিকের ভরভরন্ত সংসার। তপুর মত থম মেরে বসে থাকা কাঠ বেকারের উপর বিরক্ত হওয়ার হক ওর নিশ্চয় আছে!
বহুক্ষণ ধরে দুধ-চিনি দিয়ে ফোটানো সস্তা সিটিসি চায়ের নির্যাসে চুমুক দিতে দিতে তপু দেখল, ফটিক কাচের গেলাসে দ্রুত হাতে চামচ চালিয়ে খটাখট শব্দ তুলছে। কয়লার উনুনে সেঁকা চারফালি করে চেরা কোয়ার্টার পাউরুটি খদ্দেরদের হাতে হাতে ঘুরছে। এই পাউরুটি সেঁকার গন্ধটা বড় ভালো লাগে তপুর। পেটের মধ্যে খিদেটা যেন পাক মেরে ওঠে।
বসন কাউরার ছেলে লখাই নতুন ভ্যান কিনেছে। হাটবারে সবজি আর রাখীমাল বয়, অন্যসময় মগরা-বাগজোলা খেপ খাটে। লখাইয়ের হাতে চায়ের গেলাস ধরাতে ধরাতে ফটিক বলল, দশটার দিকি অ্যাকবার আমার বাড়ির দিকি যাস তো লখাই। তোর বৌদিরি হাসপাতালে নে যেতি হবে।
লখাই ফটিকের দিকে তাকিয়ে চোখ মটকে বলল, কী ফটিকদা, আবার বাঁধালে নাকি?
ফটিক বেজায় চটে খিচিয়ে উঠল, তাতে তোর বাপের কী র্যাক হারামজাদা? রুগি হাসপাতালে নে যাবি, নগদা পয়সা পাবি, ব্যাস, গপ্পো শেষ! কী আমার বাপকেলে গার্জেন এলেন র্যা , সব খতেন দিতি হবে!
ফটিক সুবোলের স্পেশাল বিড়ির প্যাকেট ভেঙে কয়লার উনুনে ধরিয়ে নিয়ে আয়েস করে ধোঁয়া ছাড়ল। তারপর লখাইয়ের দিকে আগুনচোখে একবার তাকিয়ে বজলু শেখের সঙ্গে পটলের দর নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিল।
লখাইও আর কথা বাড়াল না, পাছে সকালের ভাড়াটা মার যায়!আজকাল ডালছাড়া ভূত বেশি। চারিদিকে ভ্যানের ছড়াছড়ি।
দেবেন ঘোষের ছেলেটা ক্লাস এইট এবং নাইনে দু’বছর করে কাটিয়ে এবার সবে টেন-এ উঠেছে। তাকে বৈতরণি উৎরে দেবার চুক্তিতে টিউশ্যানি। মাসে পাঁচশ’, তার মধ্যে তিনশ’ নগদে, বাকিটা ছেলে পাশ করতে পারলে এককালীন। তবে নগদ দেবার পদ্ধতিটা বড় বিচিত্র। সপ্তাহে চারদিন হিসেবে প্রতিদিনকার টাকা প্রতিদিন নগদে দেবার ব্যবস্থা। সেক্ষেত্রে একদিন কামাই মানে একদিনের পয়সা বাদ। দেবেন ঘোষের তেজারতির কারবার। লোক খাটিয়ে কী করে পয়সা উসুল করে নিতে হয়, দেবেন ঘোষ তা খুব ভালো করে জানে। তবে ছেলের রেজাল্ট বেরোলে যদি সে পাশ করে, তবে উপরি হিসেবে একখানা পুরনো সাইকেল দেবে বলে লোভ দেখিয়ে রেখেছে।
ইদানীং তপু ভোরবেলা বাড়ি থেকে বেরিয়ে ঘন্টা দু’য়েক ফটিকের চায়ের দোকানে কাটায়। দেবেন ঘোষের ছেলে পড়াশুনোয় ঢ্যাড়স হলেও খেলেধুলোয় খুব চৌকস। গতবছর জেলার সেরা ফুটবলার হয়েছে সে। ওর ইচ্ছে, কলকাতার নামি দলে খেলা। সকালে ঘন্টা দু’য়েক মাঠে প্রাক্টিস করে তবে সে পড়তে আসবে। ততক্ষণ তপুর অখন্ড অবসর।
কাচের গেলাসে চা-টা অনেকক্ষণ শেষ হয়ে গেছে। এমন বাদলা দিনে আরেকবার চা পেলে বেশ হত। কিন্তু ফটিকের হাবভাব দেখে সে কথা বলতে পারল না তপু। কব্জিতে বাঁধা পঁচিশ টাকার চিনা ঘড়িটা উল্টে দেখল, সাতটা বাজতে মিনিট কুড়ি দেরি। বাইরে বৃষ্টির বেগ যেন বাড়ছে। এর পর বসে থাকলে আর হয়ত আজ যাওয়াই হবে না। তাছাড়া বৃষ্টির মধ্যে ভোম্বল নিশ্চয় ভিজে ভিজে প্রাক্টিস করবে না।
ফটিকের চায়ের দোকান থেকে বেরিয়ে সবে দু’পা এগিয়েছে, অমনি ঝেঁপে বৃষ্টি এল। বাধ্য হয়ে আবার দোকানের ঝাঁপের তলায় সেঁধোতে হল তপুকে। কিন্তু ঢুকে দেখল, ওর ফেলে যাওয়া জায়গাটাতে ফকির আলি জুত করে বসে চায়ে চুমুক দিচ্ছে। অগত্যা বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচাতে দাঁড়িয়ে রইল তপু।
বর্ষাকালে একখানা ছাতা না হলে কি চলে? বাড়িতে অবশ্য খান তিনেক ছাতা, কিন্তু সবগুলোই নাকি কাজের! যেটাতেই হাত দিতে যায়, অমনি কেউ না কেউ রে রে করে তেড়ে আসে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তন্ময় হয়ে বৃষ্টি দেখতে লাগল তপু। চাকরির জন্যে পরীক্ষা দিতে দিতে আঙুলে কড়া পড়ে গেল, তবু এখনো পর্যন্ত শিকে ছিড়ল না। শেষে গ্রুপ ডি পোস্টের জন্যে পি এস সি পরীক্ষা দিয়ে প্যানেলে নাম উঠেছিল। কিন্তু হঠাৎপরিবর্তনের সরকার এসেই সে প্যানেল বাতিল করে দিল। আগের সরকারের করা প্যানেল তারা কেন মানবে? ভাবখানা এমন, যেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারটা উঠে গিয়ে নট্ট কোম্পানির যাত্রাপালার সরকার এল!
যারা এ নিয়ে কোর্টে কেস করেছিল, তাদের অবশ্য একটা হিল্লে হয়েছে। শুধু তপুর কিছু হল না। কোর্টে কেস করতে গেলেও ট্যাঁকের জোর লাগে!
হঠাৎ একটা জোর হাসির হল্লা শুনে তপু পেছন ফিরে তাকাল। ফটিক বলছে, ফসল হবে না জানলি কি আর চাষ কত্তি ইচ্ছে করে? ওসব ফেমিলি পিলানিং টিলানিং ফালতু কতা, আসল কতা হল মুরোদ। বাপ হতি গেলি মুরোদ লাগে! ভাগ্যিস লেকাপড়াটা শিখিনিকো। তালি মুরোদের কী হাল হত, সেতো চোকির সামনে দেকতি পাচ্ছি!
তপু আর দাঁড়াল না। মাস দু’য়েক আগে পর্যন্ত বংশী নাপ্তের নাতনিটা পড়ত তপুর কাছে। সকাল ছ’টা থেকে সাড়ে সাতটা। বংশীর ছেলে অমল কলকাতায় পোস্টাল ডিপার্টমেন্টের গ্রুপ ‘ডি’। সেখানে ছোট কোয়ার্টার। জায়গা হয় না বলে বড় মেয়েটাকে গ্রামে ঠাকুর্দা-ঠাকুমার কাছে থেকে পড়াশোনা করত।
সবে ক্লাস এইটে উঠেছিল মেয়েটা। পড়াশুনোয় খুব একটা খারাপ ছিল নামীরা। তবে সাজগোজের ঘটা ছিল খুব। মাঝে মাঝে তপুর দিকেই এমন করে চাইত, যে ওর বুক ঢিপ ঢিপ করত। হঠাত মাথায় কী যে দুর্মতি চাপল, ক্লাস নাইন-এ পড়তে পড়তে জঙ্গলপুরের বোদো আমড়ার সঙ্গে পালিয়ে গেল সে। বোদো আমড়া মানে বদরুল ইসলাম,বাঁশতলা মোড়ে তার মনিহারির দোকান। আর তার জন্যে যত দায় এসে পড়ল তপুর ঘাড়ে।
–তুমি মাস্টের দৈনিক ঘন্টাদু’য়েক করে মেয়েডারে পড়াতে, তুমি কিচু টের পাওনি? বিধর্মীর ব্যাটা মেয়েডারে ফুঁসলে নে গেল!তুমিও তো তার দোকানে গে মাঝে মাঝে আড্ডা দিতে! তোমার কোন দায়িত্ব ছিল না?
তপু বলতে পারেনি, আমি তো সপ্তাহে চারদিন মাত্র ঘন্টা দু’য়েক করে পড়াতাম। বাকিসময় তো তোমাদের চোখের উপর থাকত সে, তোমরা কেন বুঝতে পারলে না? তাছাড়া বোদো-র দোকান থেকে টুকটাক জিনিস কিনতাম ঠিকই, কিন্তু ওর সঙ্গে আড্ডা দেয়ার সময় কোথায় আমার?
তপুরমুখে আজকাল যেন সময়মত কথা যোগায় না। কাউকেই কিছু বলে উঠতে পারে না সে।
টিউশ্যানিটা তো গেলই, সঙ্গে দু’মাসের বকেয়া বেতন। কিন্তু তার চাইতেও বড় ক্ষতি, এই ঘটনার পরে অনেকগুলো টিউশ্যানি একসঙ্গে চলে গেল। সকলেরই এক কথা, যে মাস্টারের কাছ থেকে ক্লাস নাইন-এর মেয়ে পালিয়ে যায়, তার কাছে মেয়েকে পড়তে দেওয়া আর বাঘের কাছে ছাগল পুষতে দেওয়া –একই কথা!
তপু শুনেছে, মীরা এখন মীরাতুন নাহার হয়ে ডেড়েমুশে সংসার করছে! তপুমনে মনে ভাবে, গেলি তো গেলি, বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় ‘তপুদার কাছে পড়তে যাচ্ছি’ বলে যাওয়ার কী দরকার ছিল?
আগে তবু সকালের চা’টা বাড়িতে পাওয়া যেত। ইদানীং আদিত্যর বউ রান্নাঘরের পার্ট টাইমার হওয়ায় সেটা বন্ধ। সকালে নাকি নাইটি পরে আইবুড়ো ভাসুরের সামনে চায়ের কাপ নিয়ে যেতে লজ্জা করে সুলতার।
শুনে মা মিন মিন করে বলার চেষ্টা করেছিল, তা তুমি ওর চা’টা রান্নাঘরে চাপা দিয়ে রেখে আসতে পারো। ও গিয়ে নিয়ে নেবে!
শাশুড়ির কথা শুনে ঝাঁঝিয়ে উঠেছিল সুলতা, বেকার মানুষ, তাঁর কি ঘুম থেকে ওঠার কোন সময়ের ঠিক আছে! আমি চা রেখে আসি, আর জুড়িয়ে জল হয়ে গেলে বাবু রাগ দেখিয়ে ফেলে দিক! তাতে অবশ্য কারো কিছু আসে যায় না! পয়সা তো আর দিতে হয় না! সবই যখন একজনের ঘাড়ের উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে!
মাঝে একদিন রাত জেগে সিনেমা দেখে উঠতে সত্যি দেরি হয়েছিল তপুর। তখন অবশ্য সুলতা রান্নাঘরের চার্জ নেয়নি। মায়ের রাখা ঠান্ডা চা সত্যিই ফেলে দিয়েছিল তপু। তবে নিঃশব্দে। কথা বলার ইচ্ছেটা অনেকদিন ধরেই মরে আসছে তপুর। তবু সুযোগ পেলেই সুলতা সেই একই ভাঙা রেকর্ড বার বার বাজাতে থাকে! আগে তবু রাগ হত তপুর। আজকাল তাও হয় না।
আর রাগ করেই বাকী হবে? এখন সংসারের যেটুকু স্বাচ্ছন্দ্য, সবই তো আদিত্যর কল্যাণে। পড়াশুনোয় মন ছিল না বলে বাবা ওকে হাবড়ায় পাঠিয়েছিল সোনার গয়নার কাজ শিখতে।
তা শিখেছে ভালোই। বছর পাঁচেকের মধ্যে আদিত্যর শাটার-টানা সাজানো দোকান, সেখানে দু’জন কারিগর সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত কাজ করে। গাঁয়ে-গঞ্জে তো সোনার গয়নায় হলমার্ক লাগানোর দায় নেই! সম্প্রতি হাল ফ্যাসানের মোটর বাইক কিনেছে আদিত্য।
অনুকূল হাজরার গেছো মেয়ে সুলতা সেই বাইকে হুবহু বিজ্ঞাপনের ছবির মত আদিত্যর কোমর জড়িয়ে ধরে শ্যাম্পু করা খোলা চুল হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়ে খুশিতে ভেসে যায়।
তপু বৃষ্টির মধ্যেই হাঁটতে শুরু করল। নিম্নচাপের বৃষ্টি, থামার কোন লক্ষ্মন নেই। জামা-কাপড় থেকে মাথার চুল পর্যন্ত ভিজে জবজবে হয়ে উঠেছে। ভোম্বলদের বাড়িতে টিউশ্যানিতে এই ভিজে জামা-কাপড়েই যাবে কিনা ভাবছিল তপু। জামা-কাপড় বদলাতে হলে আবার বাড়ি যেতে হবে, কিন্তু ছাতা-ছাড়া আসতে হলে আবার ভিজতে হবে!
বাড়ি যাওয়ার কথা ভাবতে গিয়ে মনটা আবার বিরূপ হয়ে উঠল। তাছাড়া এ সময়ে বাড়ি ফেরার অন্য বিপদও আছে।রাস্তায় নির্ঘাত গ্যাঁড়ার সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে। এটা ওর বাজার যাওয়ার সময়। গ্যাঁড়া এল আই সি’র এজেন্ট থেকে কীসব পরীক্ষা-টরীক্ষা দিয়ে ডেভলপমেন্ট অফিসার হয়েছে। এখন তার দেদার উপার্জন। বাজারে যায় খালি হাতে। প্রতিদিন বড় মাছের ল্যাজা-মুড়ো দড়ি দিয়ে বেঁধে হাতে ঝুলিয়ে লোককে দেখাতে দেখাতে ফেরে।
তপুকে দেখতে পেলেই চাকরি পাওয়ার ফন্দি-ফিকির নিয়ে গুচ্ছের জ্ঞান দিতে শুরু করে। তার পর শুরু হয় নিজের সাফল্য নিয়ে হ্যাজানো। গ্যাঁড়া যে অল-থ্রু থার্ড ডিভিশনার এবং হায়ার সেকেন্ডারিতে বার দু’য়েক ব্যাক, সে কথাটা বলি বলি করেও বলে উঠতে পারে না তপু। ভাবে, কী লাভ? যে কোন মানুষই আল্টিমেটলি কী হল, সেটাই একমাত্র বিচার্য। অ্যাকাডেমিক কেরিয়ার নিছকই কিছু কাগুজে পরিসংখ্যান। বাস্তব জীবনে নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় এবং অযথা কথা।
ভিজতে ভিজতে খেলার মাঠে হরিতকি গাছটাতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল তপু। ছোটবেলার কথা মনে এলো। এই হেলানো গুঁড়িটাতে কত যে দৌড়ে উঠে স্লিপ খেয়ে নেমেছে! একবার নামবার সময় খোদলের মধ্যে সাপ দেখে লাফিয়ে পড়েছিল তপু। তারপর মচকানো পা নিয়ে বাবার সাইকেলে চড়ে বেশ কিছুদিন স্কুলে যাওয়া-আসা। তপু সে সময়ে বাবা-মায়ের চোখের মণি ছিল। বাবা-মাও কি খুব বেশি বদলে গেছে?
–কীরে তপু, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজছিস কেন?
তপু দেখল, এক হাতে ছাতা ধরে সাইকেল ঠেলতে ঠেলতে ভাস্করজ্যোতি আসছে। সোমার জ্যাঠতুতো দাদা। তপুদের ক্লাসে একদম পেছনের বেঞ্চে বসে লুকিয়ে স্বপন কুমারের গোয়েন্দা গল্প পড়ত। ছোটবেলা থেকেই চোখে মোটা লেন্সের চশমা পোর্ট বলে পন্ডিতমশায় মজা করে জ্যোতিহীন ভাস্কর বলে ডাকতেন।তখন তপুর সঙ্গে গলায় গলায় ভাব ছিল। পরীক্ষার সময় যে করেই হোক তপুর পাশে বসত ভাস্কর। এখন পৈতৃক দশকর্মার দোকানে বসে। মাস ছ’য়েক আগে বিয়ে করেছে। তপুকে বৌভাতে নেমতন্ন করেছিল। কিন্তু তপু যায়নি। আজকাল আর পরিচিত লোকজনের মাঝে যেতে ইচ্ছে করে না তপুর।
–ভাস্কর বলল, কীরে, কথা বলছিস না কেন? দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভেজার কোন মানে হয়?
ম্লান হেসে তপু বলল, বেশ লাগছে ভিজতে!
–বেশ লাগছে? সাধে কী আর আজকাল লোকে তোকে ক্ষ্যাপা বলে? আয় আমার সঙ্গে।
–তুই যা। আমার টিউশ্যানি আছে।
–এই অবস্থায় টিউশ্যানিতে যাবি? না! মাথাটা তোর একেবারেই গেছে দেখছি। বাড়ি গিয়ে জামা-কাপড় ছেড়ে আয় আগে, তারপরে যাস।
ভাস্কর একপ্রকার জোর করেই তপুকে ওর ছাতার তলায় নিয়ে এল। তারপর গলা নামিয়ে বলল, সোমা এসেছে। তোর কথা জিজ্ঞেস করছিল।
ভাস্কর ভেবেছিল, সোমার কথা শুনে অন্তত তপু কিছু বলবে। কিন্তু অবাক হয়ে দেখল, তপু একই রকম নির্বিকার। ভাস্করের মনে হল, তপু যেন অনেক রোগা হয়ে গেছে। মাথার লম্বা লম্বা চুলগুলো ভিজে কপালের উপর নেমে এসেছে। অযত্নে বেড়ে ওঠা দাড়ি থেকে টুপ টুপ করে জল ঝরে পড়ছে। চোখের দৃষ্টিটা কেমন যেন ঘোলাটে।
হঠাত ভাস্করের ছাতার তলা থেকে বেরিয়ে তপু বলল, তুই যা। আমি একেবারে টিউশ্যানিটা সেরেই ফিরব।
ভাস্কর অবাক হয়ে দেখল, বৃষ্টি মাথায় করে হন হন করে হেঁটে চলেছে তপু।
দেবেন ঘোষের ছেলে ভোম্বল তপুকে ওই অবস্থায় ভিজে ভিজে আসতে দেখে খুব অবাক হল। বলল, তপুদা, তোমার কি শরীর খারাপ?
–কেন?
–তোমার চোখ দু’টো তো লাল দেখাচ্ছে। এমন ভিজে ভিজে এলে কেন? ইশ, তোমার জামা-কাপড় সব তো ভিজে জব জব করছে! দাঁড়াও, আমার পাজামা টা নিয়ে আসছি। তুমি বরং ভিজে জামা-প্যান্ট ছেড়ে ফেলো, আমি আদা দিয়ে চা করে নিয়ে আসছি।
অনেকদিন পরে ভোম্বলকে খুব ভালো লাগল তপুর। বাপটা কুসীদজীবী হলেও ছেলেটার মন বাপের মত নয়। খুব স্নেহের স্বরে বলল, কিচ্ছু করতে হবে না ভোম্বল, তুই শুধু একটু মন দিয়ে পড়, যাতে এবারে মাধ্যমিকটা উতরোতে পারিস। তুই হয়ত ভাবছিস, আমি মাসে মাসে বকেয়া দু’শ টাকা আর একখানা পুরনো সাইকেলের জন্যে তোকে এসব বলছি। কিন্তু তুই বিশ্বাস কর, এখন আর কোন কিছুই আমার খুব একটা দরকার হয় না। শুধু তোকে পাশ করাতে পারলে আমার খুব ভালো লাগবে।
তপুর বলার মধ্যে এমন একটা অসহায় আর্তি ছিল যে ভোম্বলের মনটা আর্দ্র হয়ে এল।
‘একটু আসছি’ বলে ভেতরে গিয়ে আদাকুচি-পেঁয়াজ-লঙ্কা দিয়ে মাখা একবাটি মুড়ি নিয়ে তপুর সামনে ধরল। বলল, তুমি খেতে থাকো, আমি চা নিয়ে আসছি।
ভোম্বল চা-হাতে ফিরে এসে দেখল, মুড়ির বাটি তেমনি পড়ে আছে। তপু ওর অঙ্কের খাতাখানা টেনে নিয়ে একমনে কী যেন লিখে যাচ্ছে। ওর জামার ভিজে হাতা থেকে চুঁইয়ে-পড়া জলে খাতাটাও ক্রমশ ভিজে উঠছে।
বিকেলের দিকে তপুর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এল। সঙ্গে সারা গায়ে অসহ্য যন্ত্রণা। বিকেলে দু’টো টিউশ্যানি আছে, দুজনেরই এবার মাধ্যমিক। এ সময়ে ডুব দিলে গার্জেনদের কাছে টিউটরের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়। বার দু’য়েক ওঠারও চেষ্টা করল, কিন্তু পারল না। মনে হল, মাথায় কেউ যেন বিশ মণ ভার চাপিয়ে দিয়েছে। বাধ্য হয়ে আবার শুয়ে পড়ল তপু।
হয়ত একটু ঘুমিয়েই পড়েছিল। হঠাত সুলতার কাংসনিনাদে ঘুম ভেঙ্গে গেল। সুলতা চেঁচিয়ে যেন পাড়া মাথায় করে তুলছে। তপু মড়ার মত নিশ্চুপ পড়ে রইল খানিকক্ষণ। সুলতা তখনো চিৎকার করে চলেছে,
– আমি পারব না। সাফ বলে দিচ্ছি, আমি পারব না। আমরা মুখে রক্ত তুলে খাটব, আর বাকিরা আরাম করে শুয়ে-বসে কাটিয়ে দেবে, এটা দীর্ঘদিন চলতে পারে না। বাপ-মায়ের একী একচোখোমি! ছোট ছেলে লেখাপড়া শেখেনি বলে কি সে বানের জলে ভেসে এসেছে? দিনরাত খেটে সংসারের যাবতীয় দায় একজনকেই সামলাতে হবে? আর দু’পাতা কী সাপ-ব্যাং লেখাপড়া শিখে আরেকজন ঠ্যাঙের উপর ঠ্যাং তুলে আয়েশ করবে! অমন লেখাপড়ার ক্যাতায় আগুন। যে লেখাপড়ায় সংসারে দুটো পয়সা দেবার ক্ষ্যামতা হয় না, তেমন লেখা পড়া শেখার চাইতে মুখ্যু হয়ে থাকা ঢের ভালো। মুড়ো খ্যাংরা মারি অমন লেখাপড়ার মুখে!
পাশের ঘর থেকে মা হয়ত চিঁচিঁ করে কিছু একটা বলবারচেষ্টাকরছিল।কিন্তু সুলতার অ-মাইক কন্ঠস্বরে তা চাপা পড়ে গেল।
তপু আর শুয়ে থাকতে পারল না।মাথাটা যেন বড় বেশি দপদপ করছে, চোখ দু’টো জবা ফুলের মত লাল।বিবর্ণ জিনসের উপরে পাঞ্জাবীটা গলাতে গলাতে ভাবল, আজ যে করেই হোক একটা ছাতা কিনতে হবে।মাসের মাঝামাঝি,কিন্তু এর মধ্যেই হাত প্রায় খালি হয়ে এসেছে।মুখ ফুটে চাইতে পারে না বলে আজকাল অনেকেই টিউশ্যানির টাকা বাকি রাখে।
আপাতত ভূপালের দোকান পর্যন্ত পৌঁছনো দরকার।ভূপাল এখন প্রায় হাফ ডাক্তার।রোগ-জ্বালা শুনে শুনেই দিব্যি ওষুধ দেয়।
বাইরে বেরিয়ে দেখল, টিপটিপ করে তখনো বৃষ্টি পড়ে চলেছে।দিনের আলো প্রায় মরে এসেছে।তার উপর আকাশ মেঘলা।ঝড়ের মত পূবালি হাওয়া ছেড়েছে। তপুর রীতিমত শীত করতে লাগল।
সব শুনে ভূপাল ডাক্তারের মত গম্ভীর মুখে গোটা কয়েক ট্যাবলেট দিল।পয়সা দিতে গেলে হেসে বলল, তুই বেকার মানুষ, তোকে স্যাম্পেল ফাইল দিলাম পয়সা দিতে হবে না। কত গরিব-গুর্বো মানুষকেই তো স্যাম্পেল ওষুধ দি।
তপু অবাক হয়ে দেখল, ভূপালের কথা শুনে ওর একটুও রাগ হচ্ছে না।অথচ ভূপালকেও ইচ্ছে করলেই অনেক কথা শোনাতে পারত।এই যে ‘দি ওয়েস্ট এন্ড ড্রাগ হাউস’, পুরোটাই তো ওর দাদার পয়সায়। ওর দাদা নেভিতে চাকরি করে।ফলে বছরের বেশির ভাগ সময় তাকে জলে-বন্দরে কাটাতে হয়। ভূপাল সম্পর্কে নানা লোকে নানা কথা বলে।ওর দাদার অনুপস্থিতির সময়ে দাদার সব কিছুই নাকি ভূপাল দেখভাল করে।ইঙ্গিতটা অবশ্যই ওর বৌদিকে নিয়ে।লোকে বলে, এইজন্যেই নাকি ভূপাল বিয়ে করছে না।
হঠাত ভূপাল তপুর দিকে তাকিয়ে বলল, কী ভাবছিস তপু? অমন মরা কাতলার মত চোখে তাকিয়ে আছিস কেন?যাই বলিস ভাই,বেড়ে আছিস তুই।ভাই কামাচ্ছে, ভাইবৌ রাঁধছে, আর তুই আইবুড়ো ‘বাছুর’ বসে বসে খাচ্ছিস!
ভূপাল নিজের রসিকতায় নিজেই হো হো করে হাসতে লাগল। তপু আজকাল এসব কথায় কিছু মনে করে না। অপমান বোধটা কি ক্রমশ ভোতা হয়ে আসছে? পাথরের মত মুখ করে তপু ভূপালের দেয়া ওষুধের কম্পোজিশান পড়তে লাগল।
একটু বাদে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে ভূপাল একহাতে সেটা চেপে ধরে বলল, তপু, তুই একটু দোকানে বসবি? বেশি না, ঘন্টাখানেকের মধ্যেই আমি ফিরে আসব, একটু জরুরি কাজ পড়েছে, একবার বাড়ি যেতে হবে।
তারপর ওর মতামতের জন্যে অপেক্ষা না করে ক্যাশ বাক্সে চাবি দিল। দামি বিদেশি রেনকোটখানা গায়ে চাপাতে চাপাতে বলল, আজ ডাঃ গুপ্তর বসার দিন। ছ’টা নাগাদ আসবেন বলেছেন, কিন্তু যা বৃষ্টি বাদলা শুরু হয়েছে, একটু দেরিও হতে পারে। কোনো পেশেন্ট এলে এই খাতাটায় একটু নামটা লিখে রাখিস।আর খদ্দের-পত্তর এলে একটু বসতে বলিস, আমি যাব, আর আসব।
প্লাস্টিকের চাপা সরিয়ে দোকানের সামনে দাঁড় করানো বাইকে স্টার্ট দিল ভূপাল। তপু ওর টিউশ্যানিতে যাওয়ার কথাটা আর বলে উঠতে পারল না।
স্যাঁতসেঁতে জোলো বাতাসে বসে থাকতে হয়ত একটু ঝিমুনি এসে গিয়েছিল তপুর।
–ডাঃ গুপ্ত কি এসেছেন?
হঠাত মেয়েলি কন্ঠস্বর শুনে চমকে উঠল তপু।গলাটা যেন বড় চেনা চেনা মনে হচ্ছে! তাকিয়ে দেখল, কাউন্টারের ওপাশে সোমা দাঁড়িয়ে। ভূপালের জায়গায় তপুকে বসে থাকতে দেখে সোমাও হয়ত একটু অবাকই হয়েছে। মুখে অনেকদিন আগের সেই লাজুক হাসি। তপুর দিকে তাকিয়ে খুব কুন্ঠিত গলায় জিজ্ঞেস করল, কেমন আছ, তপুদা?
তপু অদ্ভুত উদাস দৃষ্টিতে সোমার দিকে চাইল। তারপর মুখ নামিয়ে বলল, ভালো। তুই?
সোমা কোন জবাব দিল না। কেমন অপরাধীর মত মুখ করে তপুকে দেখতে লাগল।
তপুর মনে হল, সোমার গায়ের রঙটা যেন আগের চাইতে ফর্সা হয়েছে। চোখেমুখে লাবণ্য চুঁইয়ে পড়ছে। শুধু পেটের দিকটা যেন ঈষৎ স্থূল, সামান্য বেঢপ লাগছে। গলায় মোটা সোনার চেন আর নাকে হিরের নাকচাবির উপর দোকানের তেরচা আলো পড়ে ঝলমল করছে। সব মিলিয়ে সোমার সর্বাঙ্গ জুড়ে যেন উপচে পড়া সুখের বিজ্ঞাপন।
অনেকদিন আগের সেই কিশোরী সোমাকে মনে পড়ে গেল তপুর। ওর জন্যে এই সোমাকে সে সময়ে তো কম নির্যাতন সহ্য করতে হয়নি! লুকিয়ে চুরিয়ে যখনই দেখা হত, ভালোবাসার চাইতে সেই সব অত্যাচারের কাহিনীই বেশি করে বলত সোমা।এক সময়ে সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে তপুর সঙ্গে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল সোমা। তপু রাজি হয়নি। শেষে সোমা একদিন কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল, এর চাইতে চল তপুদা, দু’জনে একসঙ্গে আত্মহত্যা করি!
সোমার মুখের দিকে দেখতে দেখতে আচমকা পাগলের মত খুব শব্দ করে হেসে উঠল তপু।
এই তপুকে সোমার কেমন যেন অচেনা মনে হচ্ছিল। মাথায় লম্বা লম্বা পরিপাটিহীন চুল, অযত্নে বেড়ে ওঠা একমুখ দাড়ি, গলাটা কেমন সরু আর লম্বা দেখাচ্ছে। হাতের শিরাগুলো বেরিয়ে পড়েছে। চোখগুলো কোটরে ঢুকে গেছে। গায়ের ঢিলঢিলে পাঞ্জাবিটা বোধ হয় অনেকদিন কাচা হয়নি। চোখের কোণে পিছুটি।
তপু হাসতে হাসতেই বলল, বেশ আছিস, তাই নারে সোমা? পানিপথের জল-হাওয়া বুঝি খুব ভালো?
সোমা কী বলবে বুঝে উঠতে পারছিল না। ওর গলার কাছে কী যেন একটা অব্যক্ত যন্ত্রণা দলা পাকিয়ে উঠছিল।
তপু মাতালের মত জড়ানো গলায় বিড় বিড় করে আপন মনে বলে উঠল, খুব বেঁচে গেছিস সোমা, ভাগ্যিস সেদিন ঝোঁকের মাথায় আত্মহত্যাটা করে ফেলিসনি!বেঁতো ঘোড়ার উপর বাজি ধরে সর্বস্ব খোয়ানোর কোন মানে হয়?
তার পর আবার পাগলের মত অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল।ক্রমশ ওর মুখের কষে ফেনাজমে উঠল। জবা ফুলের মত টকটকে লাল চোখের জ্বলজ্বলে দৃষ্টিতে যেন শিশুর সারল্য।
সোমার বুকের মধ্যেটা কেঁপে উঠল। তপুর ক্রমশ বীভৎস হয়ে উঠতে থাকা মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কেমন যেন গা-গোলাতে লাগল!
সোমা ভাবল, দক্ষ জুয়াড়ির মত শেষ চালে খুব অল্পের জন্যে খুব বেঁচে গেছে সে। কিন্তু পরক্ষণেই মনে হল,সত্যিই কি বেঁচে গেছে সে? একে কি আদৌ বাঁচা বলে?
অনেকদিন পরে বুকের মধ্যে আবার সব-হারানোর যন্ত্রণাটা ফিরে এল। সোমা পেছন ফিরে হাঁটতে হাঁটতে শুনতে পেল, তপুদা হেসেই চলেছে।
Shikhito bekarer apoman, jantronar ek onobodyo obykto prakash. Darun laglo.
Shikhito bekarer obyakto jantroar anobodyo prakash. Khub valo laglo.
Onyoke obolombon kore medhahin ra sofol. Othocho somajer odhogotite medhabi hoye gechhe ‘porashroyee’. Jontronar chitroti khub mormosporshi. Erokom aro lekha chai…
The story pokes the Tapu within us . Many of us, though employed now, have gone through a similar phase ,in a part of our life. What a diction! Weaving emotion, depiction of characters…unique.
samajik odhogotite onyoke obolombom kore medhahin ra jekhane sofol, sekhane medhabi bekar je ‘porashroyee’ gonyo hobe ei sotyi ta tule dhora hoyechhe nipun bhabe…. Jontrona guli chhuye jay ontor…
Erokom lekha aro chai….
Mon ta bharakranta hoye galo
Koto swapno bhengechure jai… Sab guun nosto hoia jai shudhu matro uparjon korar akhhamotatr jonno. … Khub bhalo chobi ekechen.
বেকারত্বের এক কঠিন বাস্তবায়ন হল। খুব ভালো লাগলো।
👌🏻👌🏻👌🏻.. . এক নি:শ্বাসে পড়ে উঠলাম. . . . . দারুন!
Bah…..keep going sir….
Khub bhalo laglo. Sikhito o gorib baba r santaner bastab chalaman chabi
বাস্তব বড়ো নিরমম
লেখাটা যেন বর্তমান সমাজের প্রতিটি শিক্ষিত চাকরি অনুসন্ধানকারী বেকার যুবকের অব্যাক্ত মানসিক যন্ত্রনার আত্মপ্রকাশ। অসাধারণ। আত্মবিদারী।
‘শেষ হয়েও হইল না শেষ’ছোট গল্পের পুরো লখ্খণই বর্তমান গল্পটিতে।আজ জীবনের পড়ন্ত বেলায় সেই যৌবনের তপু যেন স্মৃতি হয়ে আবার ফিরে এলো। সবার জীবনেই বোধহয় এমন তপু আছে। সেই তপুর অমলিন স্মৃতিকে যেন ফিরে পেলাম গল্পটিতে।মন ছুয়ে গেল। এখানেই গল্পের সার্থকতা।আর লেখনী এমনই পড়া শুরু করলে ছাড়া যায় না। আরো লিখুন। সমৃদ্ধ হোকছোট গল্পের পরিসর।আর লেখককে উদ্বুদ্ধ করতে অন্তত 1000/2000 টাকা লেখককে দেওয়ার আবেদন জানাই।
আমরা সবাই একান্তে তপুর মতই মনে হয়, এ পৃথিবী বড় নির্জন, নিষ্ঠুর। আমরা অসহায় যাত্রী। হৃদয় ছুঁয়ে গেল।
যেসব বিদগ্ধ পাঠক ধৈর্যসহকারে গল্পটা পড়েছেন এবং তাদের মূল্যবান মতামত জানিয়েছেন,তাদের সকলকে আমার বিনম্র নমস্কার।
life is like that…,
excellent .