‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’-একটি ছুটির দিন
–রীণা চ্যাটার্জী
রক্তিম পতাকার উত্তোলনে, রক্তিম অভিবাদনে উদযাপিত হচ্ছে ‘মে দিবস’, ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’। ছবি,বানী, পোষ্টার, জমায়েত, মিছিলের মাধ্যমে পালন করা হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমও সামিল এই কর্মসূচিতে। বিভিন্ন ভাবে স্মরণ বার্তা পাঠিয়ে অভিবাদন জানানো চলছে। শ্রমিকদের নামের উৎসর্গিত একটি ছুটির দিন। তাহলে আজ একটি ছুটির দিন…পাওয়া যাবে খানিকটা ‘অবসর’। দেখা হবে বহু দিন না দেখা হওয়া বন্ধু বা পরিজনদের সাথে, নাহলে নিভৃতে বিশ্রাম। সকাল বেলায় তো জানানো হয়ে গেছে রক্তিম অভিবাদন, শুভেচ্ছা বিভিন্ন মাধ্যমে…দায় সম্পূর্ণ!
এই বিশেষ দিনটিই কেন ‘শ্রমিক দিবস’ খুব কম মানুষই জানতে বা শুনতে চাইবে, জানাতে চাইলেও বিরক্ত প্রকাশ করবে। আবার বিপরীত দিকটিও আছে যে জানার উৎসাহ প্রকাশ করবে সে হয়তো বা উপহাসের কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। তাই ইতিহাস , তথ্য,তত্ত্ব আদান-প্রদানে নাই বা গেলাম। আনুষ্ঠানিক নামটির মধ্যে বেশ একটা দরদী ভাব মিশে আছে…একে অপরকে বললেই তো প্রমাণিত কতটা দরদী!
সাধারণের কথা গেল,আসি পালনকারী ‘কর্মজীবী শ্রমিক এবং বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়নের’ কথায়। ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দরা কর্মসূচি তৈরী ও রূপান্তরিত করে দায়িত্ব পালন করেন। দৈনিক আট ঘন্টা কাজের সময় নির্ধারণের দাবীতে এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তার দাবীতে আন্দোলনের রূপ নেওয়া ও সংগঠনগুলির ডাকে ১মে তারিখে শ্রমিকদের কাজ না করার সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করা হয় পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশ জুড়ে। সমবেত দরদী চিন্তা ভাবনা। কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা উচিত সমস্ত শ্রমজীবী ও শ্রমিকদের।
খুব ছোট্ট নিরীহ একটি প্রশ্ন—‘শ্রমিক’রা সুরক্ষিত তো? আটঘন্টা শ্রমের দাবী মেনে নিয়ে জানতে চাই সবার শ্রম সঠিক মূল্যায়ন করা ও শ্রম বিনিময়ের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরী হয়েছে তো? একটিও শ্রমিক আজ নিরন্ন থাকবে না তো? বা নির্ভাবনায় দিনটি কাটবে তো আজকের বা ভবিষ্যতের নূন্যতম ক্ষুধান্নের জন্য চিন্তা না করে? যা তার শ্রমের বিনিময়ে সহজলভ্য হতে পারে! যদি তাই হয় রক্তিম অভিবাদন ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’। সংশয় যদি থাকে তাহলে শ্রমিকরাই তাদের নেতাদের লাল রঙের পতাকার নয় (শ্রমিক রক্ত সহজলভ্য!!)রক্তের রক্তিম অভিবাদন জানাক। পালিত হোক ‘আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস’…একটি উপভোগ্য ছুটির দিন।