তুফান চাই বারে বারে
-রাজীব লোচন বালা
ঋতু যায় ঋতু আসে, ভাববার দরকার নেই,
বৈশাখে, কালবৈশাখী আসবেই
চিন্তার কিছু নেই মনে-প্রাণে!
কালবৈশাখী আসবে – ফিরবে, তবুও হুঁশ হবে না।
বারেবারে পঙ্ক থেকে উঠবে শব! আর্তনাদ আর ত্রাহি ত্রাহি রব
রইবো ঘরে নিস্তব্ধ নিশ্চুপে! যেন কিচ্ছুটি হয়নি!!!
কার কি আসে যায়, নিজে বাঁচলেই হল তাই না?
নিজের ঘরের সন্তান-সন্ততি ভালো থাকলেই হল,
ভালোভাবে চললেই হল, কি আর চাই?
দেখো নি মুখ ফিরিয়ে, একটু মাথা তুলে,
হয়তো কোনো ‘বৈশাখী’, লড়ছে মন্দিরে
কালবৈশাখীর ঝড়ে তীব্র যন্ত্রনায়, আর্ত চিৎকার শেষে___
অত্যাচারের শেষে, নিশ্চল শীতল হবে শেষে!!!
পরের দিন উন্নাসিক দৃষ্টির বাঁকে, বৈশাখী বেলায়,
আলতো হাওয়া লেগে মনে, এসে বলবে সবাই
মানুষ! একি হল শান্তির বৈশাখী মেলায় হায়রে !!!
ভাবতে ভাবতে মানুষ দিন কাঁটাবে,
চলতে- ফিরতে, খবর আরও রাঙ্গিয়ে ছাপা হবে।
নাড়ু গোপাল সেজে মিথ্যা যন্ত্রণার অভিনয়
বুক ফাঁটানো দরদ উথলে উঠে তখন জানান দেবে,
হায় ঈশ্বর!!! একি কাল সময় বয়ে চলছে মানুষ?
হবে না কিছু, ‘রাখাল’ না হলে, চঞ্চল বাস্তবিক না হলে_____
চার দেওয়ালে আবদ্ধ থেকে যেমন,
কালবৈশাখী না যায় দেখা;
বোতাম আঁটা জামার তলে শান্তিতে ঘুমন্ত থেকে,
সাত্যিক একাত্মতায় মেশা যায় না, ভাব বোঝা যায় না।
ভাব সাগরে দেহ মেলে, আয়েসি শরীরপোষন করে দিলে,
তুফান না উঠলে জীবন সায়রে,
কালবৈশাখীর ঝড়ে সঙ্গ হারা হতে
বদনে সময় বেশী আর নাই।
প্রকৃতিতে কালবৈশাখী এসে বলে দেয়,
জীবনটা শক্ত করো, দৃঢ় করে তোলো, কেই কারও নয়___!
নইলে উড়িয়ে নিয়ে যাব, কালের গহনে,
তাই শুধু মানুষ রুপেই সেজে বসে থাকলে!
ঝেড়ে ফেল সমস্ত শব্দ-কবিতা আর গান,
মনুষত্বের অবনমনের নাটক দেখতে এ সংসারে।
তবুও, তুফান চাই এই “মরা গাঙ্গে”,
মানুষের অন্তর হৃদয়ে কাল বৈশাখী রুপে
নব সমুজ্জ্বল দিগন্ত উন্মোচনে।
হৃদয় মন্দিরে তুফান নিয়ে জেগে দাঁড়াও আবার,
সমস্ত ঝড়কে, ছিন্নমূল করতে_____
সজাগ, সাহসী রাখাল ছেলে হয়ে,
সিংহপরাক্রমে তুফান তুলে কালে কালে এ ভূ- মন্ডলে।