সম্পাদকীয়

সত্যান্বেষীর সন্ধানে

সত্যান্বেষীর সন্ধানে
রীণা চ্যাটার্জী

 

সুধী,
বৈশাখের আহ্বান সুসম্পন্ন করে আমরা বরণ করে নিলাম প্রচন্ড দাবদাহ আর ক্ষণিক অস্বস্তি ভুলানো কালবৈশাখী। কালবৈশাখীর আসার আশা-নিরাশার দোলায়, সে কখনো আসছে কখনো বা পথ হারিয়ে ফেলছে। রেখে যাচ্ছে অস্বস্তিকর পরিবেশ, দহনে দগ্ধ অশান্ত ক্ষণ।
শুধু অবাহাওয়া নয়, ভীষণ অশান্ত আবহে আছি আমরা সবাই। ‘অশান্ত’ ‘অশ্রদ্ধা’ ‘অন্যায়’ ‘অবজ্ঞা’ ‘অশ্লীলতা’ ‘অসংযম’ ‘অহংকার’ ‘অসততা’ সব যেন ভিড় করে আছে আমাদের চারপাশে। এই আবহে আমরা আসল ঘটনা জানা, বোঝার আগেই অভিযোগ আর অভিব্যক্তি প্রকাশে প্রতিবাদী হয়ে উঠছি। সেই প্রতিবাদের ভিন্ন আঙ্গিকের ভয়ঙ্কর রূপে আড়ালে চলে যাচ্ছে (ভীত???) বাদী-বিবাদী। থেকে যাচ্ছে শুধু প্রতিবাদের মোড়কে যুযুধান দুই পক্ষ, তাদের তির্যক মন্তব্যের তার্কিক অভিব্যক্তি ও তাদের একান্ত অনুগামীরা। এই প্রতিবাদের প্রতিযোগীদের সত্য অনুসন্ধানের প্রচেষ্টা সম্পর্কে, কিংবা নিপীড়িতের পাশে থেকে তাদের উপকার করার সদিচ্ছা সম্পর্কে যথেষ্ট সন্দেহ থেকেই যায়।
এমন অনেক ঘটনা আমাদের চোখের সামনে প্রতিনিয়ত হচ্ছে। রাস্তায় আকস্মিক দুর্ঘটনায় আক্রান্ত, হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়া মুমূর্ষু রোগী, মহিলাদের শ্লীলতাহানি আরো অজস্র ঘটনাই আমরা প্রাণভয়ে, মানভয়ে,,সময় অভাবে (অজুহাতে) এড়িয়েই যাই। এড়িয়ে যাবার অছিলায় বিবেক দংশন হয় বলেও মনে হয় না। অথচ কারোর ব্যক্তিগত আচার ব্যবহার নির্দ্বিধায় চোখ মেলে দেখে ‘উত্তেজিত’ হয়ে ‘শালীনতার’ মানের বিচারে বিধ্বংসী হয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠতে মান, সময় সব সুলভ হয়ে যায়। বিধ্বংসী আচারণ ছাড়া কি অন্য উপায় থাকে না? এই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যায় মানদন্ডের (উত্তেজিত) বিচারকদের কাছে।
এই ‘অশান্ত’ আবহে অসহায়ত্ব যেন গ্ৰাস করছে আমাদের। শ্রদ্ধেয় মানিক বাবু আমাদের যে সেই বুদ্ধিদীপ্ত দু’টি চোখের অন্তর্ভেদী দৃষ্টির ‘ফেলূ মিত্তির’ মহাশয়কে আজ ভীষণ প্রয়োজন। যাঁর সত্যান্বেষী মন তাঁর ‘মগজাস্ত্র’ ব্যবহারে অনায়াসে মিথ্যারোপ, মিথ্যাচারের জাল ছিঁড়ে সত্য উন্মোচিত করবে, তাতে রটনা সংবাদ পরিবেশিত বন্ধ হবে। সত্য উন্মোচনে হয়তো আমরা পেতে পারি শান্ত, সুন্দর, সংযত আবহ। হ্যাঁ, বোধহয় আমাদের সংবাদ মাধ্যমে সত্যিকারের ‘সত্যান্বেষী’ প্রয়োজন।
নানান বিরূপতায় মন আজ বিদীর্ণ সবার। তার মাঝেও স্বজন সাথীরা আমাদের সাথে থেকেছেন, কলম ব্যক্ত করেছেন নানা ব্যথা, কথা… কৃতজ্ঞ আলাপী মন তাঁদের কাছে। ‘লহ প্রণাম’,’অবক্ষয়’,’তুফান চাই বারেবারে’,’একটি প্রতারণা’,’অভিযাত্রী’, ‘সুমনের লাল প্রীতি’, ‘তারুণ্যের স্পর্ধা’ ‘দেখেছ কখনও’ ‘শুভ দিন’ ….মুগ্ধতার ছোঁয়ায়। কৃতজ্ঞতা স্বীকার করি মাননীয় সাহিত্যিক শ্রীঅরুণ কর মহাশয়ের কাছে -তাঁর কলমে সমৃদ্ধ করেছেন আলাপী মনকে।
সবার জন্য কুশলতার শুভকামনা রইলো।

Loading

2 Comments

  • রুদ্র প্রসাদ

    সময়োচিত ও অতিপ্রাসঙ্গিক, নির্দ্বিধায় সহমত পোষণ করছি, সত্যি সত্যিই আজ চারপাশের মেকি খোলসে ঢাকা সামাজিকতার তথা গণমাধ্যমের রঙীন বিপণনের সাথে সাথে অত্যুৎসাহী পরার্থে নিয়োজিত মুখোশাবৃতদের আবরণ উন্মোচন করার প্রয়োজন, প্রয়োজন স্বতঃসমালোচনা, প্রয়োজন পারস্পরিক সহমর্মিতা, দায়বদ্ধতা, সর্বোপরি প্রয়োজন মনুষ্যত্ব বিকাশের । সত্যাণ্বেষী সকলের মধ্যেই আছে, শুধু বিবেকবোধ দিয়ে তাকে জাগাতে হবে । যেদিন সকলে আক্ষরিক ভাবেই “সকলের তরে সকলে আমরা” হয়ে উঠতে পারব, সেদিন বাস্তবিক সবকিছুই সুন্দর হবে, সেই সুদিনের আশায় অপেক্ষায় সবাই ।

    ধন্যবাদ আলাপী মন, আমার সামান্য প্রচেষ্টাকে সম্মানিত করার জন্য, আগামী দিনে পাশে থেকে আরও কিছু উপহার দেওয়ার চেষ্টা নিশ্চয়ই করব, কৃতজ্ঞতা সতত…।

  • রীণা চ্যাটার্জী

    সহমত প্রকাশে ধন্যবাদ। পাশে থেকে আলাপী মনকে সমৃদ্ধ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Leave A Comment

You cannot copy content of this page