‘ভালোবাসা’ তোমার অপেক্ষা
-রীণা চ্যাটার্জী
প্রিয় ভালোবাসা
কেমন তুমি ‘ভালোবাসা’? খুব জানতে ইচ্ছে করে। শতরূপে দেখি তোমাকেই বারেবার। তোমাকে অনুভবে খুঁজে নিতে হয়? না কি তুমি নিজেই ধরা দাও? অনুভূতি, স্পর্শ, চাহনি ঘিরে তোমার অবয়ব? যুগল হৃদয়ের আকুতিতে তোমার অস্তিত্ব? মনে হয় অপেক্ষা,অছিলা, বিরহ, স্বপ্ন,জাগরণের স্বমূর্ত প্রকাশ তুমি।
প্রিয়কে দেখার, কাছে পাওয়ার অপেক্ষা সে তো তুমি ‘ভালোবাসা’। তোমাকে পাওয়ার আছিলায় কত কথা,কত অভিমান,কত অনুনয়,অনুযোগ! বিরহের আকুল আবেদনে তুমি যেন ভীষণ অসহায় ‘ভালোবাসা’। স্বপ্নে তুমি ধরা দাও অতৃপ্তি মিটিয়ে দিতে , ভীষণ আপন হয়ে। আর জাগরণে? ‘…. ভিতরে বাইরে আছো তুমি হৃদয় জুড়ে’।
কত কলমে কত কথামালা শুধু তোমার জন্য। অনুভূতিরা এঁকে দেয় পাতায় পাতায় হৃদয়ের আল্পনা শুধুই তোমার ছোঁয়ায়। তোমাকে পেতে কত গান হয়ে ওঠে কলতান। মনে পড়ে কবিগুরুর অনেক গান, সেখানেও অপূর্ব সুললিত তোমার অবয়ব, অকৃপণ হয়ে তুমি ধরা দিয়েছো কবির কল্পনায়। নীরব চাহনি বাঙ্ময় হয়ে ওঠে, দু’টি হৃদয়ের না বলা অনেক কথা ধরা দেয়… সে তো শুধু তোমায় উপলব্ধি করে।
এক প্রেমিক মনের কথা-‘যখন বালুকাবেলায় একা হেঁটে যাই মনে হয় ধরার মতো হাত যদি হাতে থাকতো..’ কি গভীর উপলব্ধি তুমি! থেকে আছো, না থেকে ও আছো, মনের গহীন গভীরে সূক্ষ অনুভূতিতে তুমি বিরাজিত। জানি না সে তোমাকে ভোরের রবির উষ্ণতায়, নাকি জ্যোৎস্নার স্নিগ্ধতায় চেয়েছিলো, কিন্তু তার স্বরে ছিলো অব্যক্ত আকুতি। তার সেই কথায় ছিলো না কোনো লিপ্সা, লালসা,কোনো অশালীনতা। তোমাকে কাছে না পেয়েও, সাথে না পেয়েও তোমাকে সাথে নিয়ে চলার দুরন্ত ইচ্ছা.. কি শুদ্ধ, অমোঘ তোমার উপস্থিতি! আলোড়িত করে গেছিল আমায়। প্রার্থনা করেছিলাম ওই প্রেমিক মনের জন্য “ভালোবাসা ধরা দাও।”
তোমার আর এক রূপ বিরহ। তোমাকে চেনা যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায় বিরহ ছাড়া। বিচ্ছেদের আকুল সেই মুহূর্ত শুধুই অপেক্ষা করে থাকে অসীম অধীরতায় প্রিয় মিলনের। বিরহের অসহায়ত্ব নিয়েও বেঁচে থাকার অবলম্বন যে শুধু তুমি ‘ভালোবাসা’। অপরূপ তোমার রূপ, অপরিসীম তোমার শক্তি, স্নিগ্ধ, শান্ত, শুদ্ধতায় অনন্য তোমার অস্তিত্ব। এসো ভালোবাসা তুমি সবার জীবনে। সবার যে তোমাকে চাই। তাই তোমার তরে সবার আহ্বান চিরন্তনী,চিরকালীন।
আলিঙ্গন নিও ভালোবাসা।
অপেক্ষা