যেতে হবে নিকেতনে
-প্রবীর কুমার চৌধুরী
চোখের জল মাঝে মাঝেই বিরক্ত করে
কি করে এড়াই তাকে?
সকল সময়েই জানালা খুলে রাখি,জ্যোৎস্না মাখি,
আর হাসিকে ডেকে বলি বন্ধু সাথে থেকো।
এইতো আমার আজীবনের চাওয়া,পাওয়া সকল স্বপ্ন –
এর বেশি আর চাইনি কিছু,আর কি আমার চাই ?
আয়, এরই জন্যে বাসর পাতা,আমার দীর্ঘ প্রতীক্ষা।
অক্ষরের সাথেই বেশিটা সময় কাটাই
বর্ণপরিচয়কে বুকের মাঝে আঁকড়ে ধরে
প্রেম নিবেদন করি,
আমাদের তৃপ্তির মিলনে কাব্যের জন্মহয়। দত্তকের নেশায়-
ঢলে ঢলে,কোলে কোলে চলে যায় গ্রাম,গঞ্জ, দূর সীমানায়।
সকাল সাঁঝে কাব্যতরী ভাসাই ,
কবি ও কবিতাকে মেলাতে মেলাতেই সময় যায় কেটে ।
শুধু মাঝে মাঝে পৃথিবীর মাটিতে বিতর্ক আর দুঃসংবাদ গর্ত খুঁড়ে বিঘ্ন ঘটায়,
এক বুক দুঃখ নিয়ে মন্দির,মসজিদ,গির্জা ডেকে ডেকে বলে-
এই দেখ আমরা কেমন পরস্পরের হাত ধরে বসে আছি,অনন্ত হাসির মাঝে ,শান্তির অভেদ্য সীমানায়,
তোমরাই কেবল বিভেদ আর ভাঙ্গনে আপনার স্বার্থে আমাদের কলঙ্কিত কর, দাও বৃথাই রক্তের আলপনা।
অক্ষর তুলে তুলে ভালোবাসাকে সাজাই, ক্লান্ত মনে স্বপ্ন দেখাই,
সুন্দর সুন্দর কথাগুলো মনের বাগানে ফুল হয়ে ফোটে,
আমি শ্বাসভরে হাসি,আমি সুখ সাগরে ভাসি,
বিনি সুতোয় মালা গাঁথি,তারপর-
জীবনহাটে ফেরি করি -ভালোবাসার মালা চাই গো ভালোবাসার মালা …..
রিক্ত,শূন্য ,অবসাদগ্রস্ত ক্ষত বিক্ষত মনগুলো ছুটে ছুটে আসে কাছে ,
বুকের চাতালে বসিয়ে-
আমি একটার পর একটা কান্নাজড়িত গলায় পড়িয়ে দিই মালা মনের সুখে।
বলতো এর বেশি কি চাওয়ার ছিল ,আর কি চাওয়া যায়?
ঠিক তখনই আমার খোলা জানালায় হাসিরা আসে মুক্ত বাতাসে ভেসে ভেসে, মুক্তির গান গায়।
আর দুঃখের বর্ষণে সৃষ্ট চোখের নোনা জলগুলো-
তৃষ্ণার্ত অংশুমালি শুষে শুষে,চুষে চুষে আপন কণ্ঠে ধারণ করেন।
ভুল গুলো বোবা কান্নায় ভেঙে পড়ে সমাধানের পায়ের তলায়,
একটার পর একটা সমীকরণ করুনায় হাত ধরে ধরে –
জীবনের ধারাপাত পড়াতে পড়াতে বলে
ঈশ্বর বললেন ভালোবাস ওরে ভালোবাস …..
একটা,দুটো ,তিনটে,চারটে ….অনন্ত প্রহর কেটে যায় নিস্তরঙ্গ জীবনের ,
দূরে,দূরে কালবেলার ঝাপসা সমাপ্তির অবয়ব ফোটে,
মনের খোলা জানালায় শান্তিদূত এসে দাঁড়ায় , বলে –
এই দেখ সখা তোমার ছুটির ঘন্টা বেজেছে, সানাইয়ে বিদায়ের সুর আন্দোলিত,
এবার তরঙ্গে তোমায় দিতে হবে বিসর্জন,
আমরাই কজন তোমায় ফিরিয়ে নিতে এসেছি অনন্ত শান্তির রাজ্যে।
মনের মুরতি মাখিয়ে শেষবারের মতো বলি –
হে প্রিয় পৃথিবী যদি ফের ফিরে আসি,
বুকে যেন আরো প্রেম নিয়ে আসি।
অপূর্ব রচনা শৈলী