অন্তর্জাত আবাহন
-রুদ্র প্রসাদ
আকাশে – বাতাসে মিশে বিষ,
সমাজ ব্যবস্থা ধ্বস্ত ;
হতাশারই সুর বাজে অহর্নিশ,
গণতন্ত্র ভীত – সন্ত্রস্ত ।
শিক্ষার নামে কালোবাজারী,
ক্ষয়িষ্ণু আজ সভ্যতা ;
শৈশব কবে স্বপ্নেই গেছে চুরি,
বিপণনের সার নগ্নতা ।
মূল্যায়ন যে অলীক জলসত্র,
‘পুঁজিবাদ’ই শেষ কথা ;
ধর্ষণ, নির্যাতন, হত্যা যত্রতত্র,
অনুষঙ্গে বিপন্ন মানবতা ।
বৈঠকী আড্ডায় সীমিত আলোচনা,
পরশ্রীকাতরতাই কোলাহল ;
পরার্থে নিয়োজন হাতে গোনা,
অজাচারে নিষ্পেষিত হলাহল ।
স্বার্থ বিনে নেই, সবই অধঃগতি,
এই তো সামাজিক বিচার ;
গুমরে খুঁজে ফেরে চপলমতি,
কোথায় শেষ এই অনাচার ?
তবুও জাগে আশা ভবে,
বধির হবে অরাজকতা ;
যেদিন শপথ নিয়ে চলব সবে,
ছোঁয়ায় থাকবে সজীবতা ।
হোক সেই আনন্দ শুরু আজ,
হোক এখনই সেই বপন ;
মিলেমিশে ভাগ করা হোক কাজ,
সাকার হোক সবার স্বপন ।
হিংসা আর দ্বেষ হোক বিদুরিত,
ভ্রাতৃ-বিরোধ বন্ধ হোক ;
মনুষ্যত্ব সবার হোক বিকশিত,
পৃথিবীটা হোক জ্যোতির্লোক ।
নারী – পুরুষের সমানাধিকার,
প্রতিবন্ধীরও সমান মান ;
অবারিত হোক বিবেকের দ্বার,
সকলের তরে সমান টান ।
সীমার বিভেদ ঘুচে যাক,
সেবা-কার্যই সর্ব ধর্ম হোক ;
জাত-পাত-ভেদ দূরে চলে যাক,
আপ্লুত হোক মর্মলোক ।
মানুষ ছিলেন কৃষ্ণ – বুদ্ধ,
হজরত – যীশুও ছিলেন তাই ;
সকলেরই বাণী সত্যশুদ্ধ —
‘জাগ্রত হোক বিবেকটাই’ ।
এ নব উষায় এসো আজ সবে,
মিলিত কন্ঠে দিই সে ডাক ;
“ জাগো হে মানুষ, মানুষের ভবে,
হীনমন্যতা নিপাত যাক ” ।
মিলে মেলানোর সাজেই যথার্থতা,
আন্তঃসৌন্দর্যরে করে যতন ;
ভালো থাকা-রাখার মাঝে সার্থকতা,
প্রচেষ্টা হোক মনের মতন ।
বর্তমান হোক পরাক্রমী আশার,
অকৃত্রিম আদি হতে অনন্ত ;
হোক আগামীর সুদৃঢ় পদসঞ্চার,
পাড়ি দিতে শেষসীমা পর্যন্ত ।।