অমলের চিঠি
-সুমিতা পয়ড়্যা
অমল বলছি অমল,
রবিঠাকুরের সেই অমল
আমাকে তোমাদের মনে আছে কি,যা ব্যস্ততা !
নাকি ভুলেই গেছ ?
এখন মানুষ নিজেকে নিয়ে ত্রস্ত,
আত্মকেন্দ্রিকতার আলিঙ্গনে উষ্ণতায় ঢেকে জীবন গড়ে।
সুখের শ্বাস ভরে ভরে।
তবু আমি পৃথিবীতে ফিরতে চাই।
সুন্দর পৃথ্বী ,এখানেই সবাইকে এক ঐক্যতানে পেতে চাই।
দইওয়ালার সুর–দই ,দই,ভালো দই— বড় মধুর।
প্রহরীর ঘণ্টা ধ্বনি,রাজার চিঠি,
সবুজ টিয়ে,সুধার ফুল—-
রাজহরকরা-যে চিঠি নিয়ে আসত !
সুধা ভারী ভাল মেয়ে–ফুল আনত,
যখন সব কথা ভুলতে বসেছি তখন ওই ফুলের কথাই মনে পড়ত
আর এক ছুটে সোজা পৃথিবীর বুকে;
আমি তোমাদের সকলকে দেখতে চাই
যেখানে আছে সকলে সবাই।
ভাবছ তো !ফিরব কেমনে
আমার তো মৃত্যু হয় নি,তাই ফিরবার আশায়
আমি অসুস্থ হয়ে শুয়েছিলাম ঘরে বন্দীদশায়।
এক রাজার দূত এসে জানালা খুলে দিলেন,
“প্রদীপের আলো নিভিয়ে দাও”বললেন।
“আকাশের তারা থেকে আলো আসুক,”
ঘুম থেকে উঠে দেখি আমি সুস্থ।
ভরসায় বলি,ঐ সুন্দর পৃথিবীতে রক্ত নেই হত্যা নেই;
মানুষ অসুস্থ হয়ে হত্যা করে,হিংসা করে- —
বিশ্বাস আমার অসুখ একদিন সেরে যাবে।
আমি ছোট ছিলাম সবটুকু দেখিনি
অসুস্থ ছিলাম,বাইরেও বেরোতে পারি নি।
আমি তো কোনোদিন মরি নি,ঘুমিয়ে ছিলাম;
এবারে জেগেছি,এবার মরতেও হবে।
আমি এখন সবটুকু দেখতে চাই সব সব,
ঐ যে ধুলোর ঝড় উঠেছে,জীবন-মৃত্যু কে দেখব !
তোমরা ঘুমিয়ে পড়ো না—আমি আসছি,আমি আসব !
আমি আসব,আমি আসব।