ভাবিয়া দেখো মন
-রাজীবলোচনে বালা
বিবাহ নিয়ে সদর্থক লেখা বেশ , একটু ভাববার বিষয়_
নতুন ধরে পুরাতন ছাড়ে এতে নাকি রুচি বাড়ে !
কত বিধান শাস্ত্রে হৃদয় মেলাবার , দারুণ ব্যাপার
একটি মেয়ে সব ছেড়ে যাবে অপরিচিত বাড়িতে নববধু সেজে।
জানেন ও পাড়ার রুমকি – চুমকির বিয়ে হয়েছিল,
বেশ ভালো করে, বাপ তার সর্বস্ব নিলাম করে দেয়।
আনন্দের ধারা বহে ছেলের বাড়ি, মেয়েকে নিঃস্ব রিক্ত করে,
তাই তাদের বিয়ের নামে , আহা নামে নয় অজুহাতে
শেষে গরীবের মেয়েকে আগুনে পুড়তে হয় , ঝুলতে হয়।
সত্যিই ভাবি একান্তে, এ জগতে “বিবাহ” হয় শুধু মাত্র _
বড়লোকের ছেলে- মেয়েদের আর বাকি সব নাটক।
বিয়ে ,পবিত্র বন্ধন ঠিক আছে। তবে ভাববার বিষয়_
একটা মেয়ের জীবনের সবথেকে বড় পরীক্ষা এই বিবাহ।
ভালো ঘর, খারাপ ঘর দুটো বিষয়,তদমধ্যে চাহিদাকে বলে মনের মিলন , ওটা বড়লোকেদের সাজে।
এই পাড়ার হারাধনের মেয়ের নয়, এতে শুধু যৌতুকের কৌতুক।
প্রেম প্রেম প্রেম বিবাহ মানেই দুটি হৃদয় যদি এক হৃদয়ে মিলন হয়,
তবে এর মাঝে কনে পক্ষের তরফ থেকে বিয়েতে যৌতুক কেন?
একি মনের না সম্পদের এক দেহে মিলন? অদ্ভুত !
তাই দেখে মন ভারাক্রান্ত , টাকা না দিলে হয় বদন ক্লান্ত – কালো।
যতদিন না বিয়েতে যৌতুক নেওয়া বন্ধ না হয়,
মনের মিলন হৃদয়ের মিলন ভন্ড কথা হয়ে যেন রয়।
ওই যে মেয়েটি যার কথা বলছি
কি সুন্দর, বিবাহ হল তার সাধ-আশায় মন টলমল
হঠাৎ পড়লো গায়ে কেরোসিন, আগুনের তেজ তাকে গলিয়ে ফেলল।
চৌমাথায় দাঁড়িয়ে বিয়ের সানাই আর ঢাক বাজছে।
“বিবাহ” করে কি ভেবেছিল, কত স্বপ্ন ছিল মেয়েটির
“বিবাহ” তার স্বপ্ন দেহে মিলে, লাভা ছাই হল নিঃশেষে।
যৌতুক একটা অভিশাপ সোজা বাংলায়।
তাই বিবাহ বা হৃদয়ের মিলন শুধু শুনতেই শ্রুতিমধুর।
আরেকটি খুব ভালো কথা হঠাৎ মনে পড়ে
মেয়ে যুবতী হলে বিয়ে দিতে হয়, সামাজিক কাজ
নাহলে অসুবিধা আছে, লোকের মুখ তো আর থামে না !
যখন বাবা মেয়েটিকে তুলে দেয় অচেনা পরিবারের নন্দনের হাতে,
একটি শাস্ত্রীয় মন্ত্র পড়ে পুরোহিত মশাই বলে কন্যা সম্প্রদান কালে,
বাবা বলে হাতে পড়ে কত কি !!! বাবাজীবনেরে,
“কামাথ কামহেতু সমর্পয়ামি” অর্থাৎ এর মানে হল,
আমার মেয়ের শরীরে কামের উদ্রেক হয়েছে
তাই তোমার হাতে আমার আদরের কন্যাকে তুলে দিলাম, তুমি দেখো।
তাই যাহা ভাবি মূলত তাহা নয় , ধর্ষণ তো রোজই হয় ,
আমার হৃদয় তোমার হোক , তোমার হৃদয় আমার হোক_
এটা সবত্র খাটে না , তাই ভাবি সবই উল্টো।
সবই হাহাকার আর আর্ত চিৎকার ,
যার হারিয়েছে একবার সেই বুঝে।
যৌতুক বন্ধ করতে না পারলে বন্ধু
নারীমুক্তি , সাম্যতা আলমারিতে ঢুকিয়ে রাখো,
আর না হলে সুইটকেসে সাজিয়ে লোক দেখাও।
তাই বিবাহ ভাববার বিষয় , অবশ্যই সবাইয়ের_
নাহলে দেখো শেষে গলায় দাগ না পড়ে।