লজ্জার অনিশ্চয়তা
– রীণা চ্যাটার্জী
-
সুধী,
সমাজ সচেতনতা গড়ছে আজ নতুন রূপকে, স্বার্থের মোড়কে, ক্ষমতার প্রাবল্যে, অস্তিত্ব জাহির করার অন্ধ উন্মাদনায়। মানবতা, সহিষ্ণুতা,ধর্ম, বিবেক, জীবন সবকিছুই রাজনীতির ফাঁদে অসহায়, অস্তিত্বের সঙ্কটে। ক্ষমতাবলে তৈরী করে দেওয়া কিছু নিয়মের কাছে নতিস্বীকার করতে বাধ্য করা, মানবিতার দায় এড়াতে ‘উন্নয়নের খসড়া’ তৈরী করে দৈনন্দিন জীবনে চাপিয়ে দেওয়া …. স্বৈরাচারের চরম নিদর্শন।শরণার্থী,সন্ত্রাসবাদ, অনুপ্রবেশকারী,আতঙ্কবাদ শব্দগুলো সমার্থক হয়ে উঠেছে… আমরা স্বাভাবিক প্রশ্ন করি, ‘এরা কেন?’ প্রশ্ন রাখি না ,’কেমন করে?’ বলি না ‘ওরাও মানুষ’, ভাবিনা,’কি করে হলো?’ একটি ‘গণপ্রজাতান্ত্রিক’ (1971সালে) ঘোষিত রাষ্ট্র কেন স্বাধীনতার প্রায় পঞ্চাশ দশকের গোড়ায় এসেও তাদের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ!! কেন সেই রাষ্ট্রের সংখ্যালঘুরা আজো শরণার্থী (অনুপ্রবেশকারী)? একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের কাছে তো এ চরম লজ্জার। কেউ কি শখ করে শরণার্থী হতে চায় অনিশ্চয়তার পথে পা দিয়ে… প্রাণ নিয়ে পালিয়ে বাঁচতে চাওয়া অনুপ্রবেশকারীদের আতঙ্কবাদের দীক্ষা কারা দিচ্ছে? কারা বাধ্য করছে? এদের অসহায়ত্ব নিয়ে স্বার্থের খেলা খেলছে কারা? সত্যিই কি অজানা? কখনো কখনো সত্যিকারের দুর্বৃত্তরা অনুপ্রবেশকারীর মুখোশের আড়ালে আতঙ্ক ছড়িয়ে যাচ্ছে। নিরীহদের চিহ্নিত করার উপায় তো নেই। দেশ-বিদেশের প্রমুখ নেতৃবৃন্দদের সৌজন্য সাক্ষাতকার, চুক্তি বিনিময়, স্বাক্ষর, স্বীকৃতি সব হয় পর্যায়ক্রমে, কিন্তু এই নিরীহ নির্যাতিত মানুষেরা সযত্নে বঞ্চিত হয় যদিও এক শ্রেণীর সুবিধা ভোগীরা তাদের উদ্দেশ্য ও স্বার্থ পূরণকরে চলে অবলীলায়। রাজনীতির প্রয়োজনে, ধর্মের দাবীতে বঞ্চিত মানুষদের পরিচয় বদলে যায়। রাজনীতির প্রয়োজনে উন্নয়নের গন্ধে এদের উৎখাতের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। ‘উন্নয়নের’ অর্থ,লক্ষ্য, অন্য আজ ‘উৎখাত’। মানবাধিকার (মৌলিক অধিকার) নিয়ে নির্লজ্জ মিথ্যাচারের এ লজ্জা আজ কোথায় লুকাই!
বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রাসঙ্গিক বিষয়ের লেখায় অনুপ্রাণিত,’সর্বহারার দেশ’ ,’শরণার্থী’। কবিপ্রণামে সমৃদ্ধ ‘তুমি ছাড়া নাই’, ‘আজ মুক্তির দিন’। দৈনন্দিন রচনায় মনছোঁয়া কিছু লেখা– ‘মতলবী মন’, ‘আত্মকথন’, ‘অন্দরমহলের চারুলতা’,’অচেনা’, ‘রূপান্তর’,’মিষ্টি’, ‘আরো একবার ভিজবো’, ‘ এক ফালি চাঁদ’, ‘নাগরিক’,’ যদি খোঁজো’ আরো বেশ কিছু রচনা।
কৃতজ্ঞতা, ভালোবাসা সকল স্বজন সাথী ও পাঠকের জন্য। কুশল কামনা করি সবার জন্য।