আবহে হতাশাতন্ত্র
-রুদ্র প্রসাদ
ধিকিধিকি, ঠিক যেন ছাইচাপা তুষের আগুনে,
দহন জ্বালায় জর্জরিত, ক্ষতবিক্ষত প্রতিক্ষণে!
উদ্দেশ্যহীনতার দুঃসহযাত্রা চলছে বিরামহীন,
ছায়াবাজীর নিষ্ফল আক্রোশে সবই কায়াহীন!
চাহিদার অন্ত খোঁজা, জবাবে, নাই আর নাই ;
অনন্ত বাসনা পূরণের হদিস কোথা গেলে পাই?
উদ্যমে ভর করেই হতে চেয়েছি এক কর্মযোগী,
কর্মাভাবেই অলস মস্তিষ্ক হয়েছে হতাশাভোগী ।
আবাদী উদ্যোগে ফলাতে চাই সোনার ফসল,
সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনে চাষের জমিও বিরল!
গ্রাসাচ্ছাদনের কারণেই দরকার একটা চাকরী,
সুযোগ মেলা ভার, খুঁটি ষোলো আনা দরকারী!
আতুর মন হাহাকার তোলে ‘চাই আজ বাঁচতে’;
সাধ অনেক সাধ্যবহুল, উপায়ই নাই সাজতে!
সুবর্ণ এই গোলকধামেই হয়তো আছে ভরা সব,
কানাগলির ঠোক্কর খেয়ে প্রায় হতে চললাম শব!
অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে চাই, কিন্তু নেই ছাড়পত্র,
পথ হারিয়ে, আজ উপরে খুঁজেই ফিরছি ছত্র ।
নীরবতা কাঁপিয়ে উঠে আসতে চায় আর্তনাদ,
কিন্তু কিভাবে সোচ্চার হবে ভাষাহীন প্রতিবাদ?
সংঘবদ্ধ মিছিলে তুলতে চাই সমবেত অনুরণন,
হায়! ন্যায়ালয় কেড়ে নিয়েছে তার অনুমোদন!
শান্তির ধর্মঘটে সরব হওয়াও সাযুজ্যে রয়েছে,
সেখানেও বাধা আইনের, সত্তাই বিকিয়ে গেছে ।
ছড়িয়ে আপন সৌরভ চাই আজ ভালোবাসতে,
প্রেমের আধুনিকীকরণ সংজ্ঞা চায় বদলাতে!
জীবনের স্মৃতি সাজিয়ে চাই বাঁচতে সুস্থভাবে,
অঙ্কুরেই বিনষ্ট সম্ভাবনা, পরিবেশেরই অভাবে!
সখেদে নিরাশা বেছে নেওয়ার পথই হল ‘মরণ’,
নিষ্পেষিত জীবন রেখা করেছে সে ‘সুখ’ হরণ!
জমে থাকা নিরাশাগুলো ফেটে পড়তে চায় সব,
ইচ্ছে করে হয়ে উঠি ভয়ানক, বিধ্বংসী দানব ।
তাই হতাশা ছাড়তে আজ সকলকে দেই ডাক,
‘একটি বার এসো, একই সাথে গর্জে ওঠা যাক ;
পর্যাপ্ত বারুদ নিজের ভেতরেই আছে মনে কর,
কলিজায় ভরে দম, এগিয়ে এসো, শপথ কর’।
চেতনায় জাগ্রত মানবিকতার রঙ মুঠোয় ভরে,
ছড়িয়ে দেব সকলের মাঝে উদারতা অকাতরে ;
স্বচ্ছ দৃষ্টি সজাগ রাখব জীবনের প্রতিটি বাঁকে,
আর হারাব না পথ, জাত-ধর্মের নোংরা পাঁকে ।
করব যে সবকিছুরই যুক্তিবাদী চুলচেরা বিচার,
গুঁড়িয়েই দেব, আছে যত, জীর্ণ সব কু-আচার ;
ক্ষতি নেই যদি তাতে সমাজ নাম দেয় বেয়াড়া,
তবুও ডিঙিয়ে যাব সমস্ত প্রাদেশিকতার বেড়া ।
সকলকে করে আপন, ভাবি সব বৈরিতা ছেড়ে,
হাতে হাত ধরে ধীরে ধীরে সমষ্টিতে উঠব বেড়ে ;
নিঃস্বার্থ নিয়োজনে সেবাধর্মেই সবাই হব ব্রতী,
উজ্জ্বলতর আশার আশায় সবে হবে মেহনতী ।
দাবানলের মতোই জ্বলে উঠবে আগুনে বিপ্লব,
বিত্ত-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই হয়ে উঠবে কুশীলব ;
প্রসারতার ইমারতে ভিত্তি, প্রতিটি হৃদয় মাঝে,
নব যুগ সূচনার আহ্বানের মন্দ্রিত ধ্বনি বাজে ।
জ্ঞানচৈতন্য উন্মেষ সাথে হবে আঁধার দূরীভূত,
আশার সঞ্চারে সমাহিত প্রেম, হতাশা পরাভূত ;
নবীকরণে পুনরুজ্জীবিত মন রইবে নাকো যন্ত্র,
বিদায়ীক্ষণ সূচীত? কাটবে আবহের হতাশাতন্ত্র?
দুর্দান্ত লেখা ।
ধন্য যোগে কৃতজ্ঞতা সতত…।
বাহ্ অপূর্ব
ধন্য যোগে কৃতজ্ঞতা সতত…।
রূঢ় বাস্তবের স্পষ্ট চিত্র
ধন্য যোগে কৃতজ্ঞতা নিরন্তর, তোর আর বাবা-মায়ের আশীর্বাদবলেই সামান্য প্রচেষ্টা, প্রণতি সতত দিদি…।