জীবন-আনন্দ

জীবন-আনন্দ
(কবি জীবনানন্দ দাশের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য)
-সঙ্কর্ষণ

সেদিন রাতে একটা মৃত্যু ঘটেছিলো
নিখাদ, নির্ভেজাল একটা মৃত্যু।

ঝোড়ো হাওয়ার প্রবল ধাক্কায় দুঃখরা
টুপটাপ ঝরে গিয়ে তৈরী করেছিলো আকাশের সাথে যোগাযোগ।
হাজারো জ্বলা নেভা তারাতে, স্থবির ধ্রুবতারা
নিশ্চল নির্বাক… যেদিকে তাকাও নেই প্রাণ,
নেই রূপ-রস-গন্ধ… তবু আছে
কবিতার আকাশে তারা হয়ে… নীল, ম্রিয়মান এক তারা।

নতুন আকাশ নয়…
উঠেছিলো সেই পুরোনো বরিশালের ডাক।
শহরের বুকে মরা পাতার বদলে,মরা ইটে ডাকেনি
কোনো ছাতারে পাখি…রূপসী বাংলার রাতগুলো
ধূসর হয়ে রঙ ধরিয়েছিলো ফেরত আসা পাণ্ডুলিপিতে,
হাজার বছর হেঁটেও তখনো ধরা দেয়নি নাটোর,
অপেক্ষা থাকেনি কোনো স্বপনচারিণীর, বোঝেনি
“এ কোন সকাল,এ যে রাতের চেয়েও অন্ধকার।”

কিন্তু সেদিন…,
সেদিন রাতে হাত ধরেছিলো কোনো এক বনলতা
একটুকরো বরিশাল জেগেছিলো পাষাণের বুকে,
বিভোর সে কাকলিতে শোনা যায়নি ট্রামের ঘণ্টী।
না কবি আজ কোনো দুঃখ নয়…
আজ শুরু হয়েছিলো অনন্তের পথে তোমার যাত্রা,
হে অপার্থিব, তোমার জীবন নেই, তোমার মৃত্যু নেই,
তোমার চলা আছে… হাজার বছরের পথ চলা।

সেদিন রাতে কেউ অমর হয়নি,
শুধু… একটা মৃত্যু ঘটেছিলো।
নিখাদ, নির্ভেজাল একটা মৃত্যু।

Loading

Leave A Comment