প্রাপ্তবয়স্ক
-অযান্ত্রিক
মাঝে মাঝে আমার খুব গরম লাগে, ঘাম হয়,
চারিদিক থেকে পুড়তে থাকে চামড়া, রাবনের চিতায় রয়েছি মনে হয়
বড়ো বড়ো কাঠ আগুনের শাড়ি পরে ,জড়িয়ে ধরতে চায় প্রেমিকার মতো,
গলার কাছে ধূসর বিরক্তিবোধ, ঝাঁঝালো ধোঁয়ার মতো দলা পাকিয়ে ওঠে।
পাশ দিয়ে চলে যাওয়া মানুষগুলোকে মনে হয় শ্মশান যাত্রী ,নিজেকে জ্বলন্ত শব।
কেউ আসেনা সে আগুনে নেভাতে,কেউ আসে না জল দিতে,
শুধু নীরবে পাশাপাশি শুয়ে থাকি আমি আর তীব্র লিঙ্গহীন যন্ত্রণা।
বোধগুলো হঠাৎ করে পরিণত হয়ে ওঠে, প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে।
কোনোদিন দিন খুব সকালে ঘুম ভাঙলে , স্নানঘরে আয়না বিদ্রুপ করে,
আমি ,আয়নায় দেখি আমাকেই, কিন্তু চিনতে পারিনা
অবিকল আমার মতো কিন্তু আমায় দেখে আর হাসে,বিদ্রূপে।
আমার বিছানা ছুঁয়ে সদ্য ভাঙা ঘুম আমায় জেগে ওঠার বানান শেখায় ,
বোঝায়,আলোর প্রতিফলন বা প্রতিসরনের সংজ্ঞা খুব কঠিন,
পাথরের মত কঠিন।
আমার ভিতরে ঘুমিয়ে থাকা আমি’র ঘুমও ভাঙে না প্রতিদিন।
তাই আজকাল সকালে আমি আর আয়না দেখি না।
প্রাপ্তবয়স্করা নিজেদের আয়নার বিদ্রূপে দেখতে ভয় পায়, বিরক্ত হয়।
মাঝে মাঝে বুকের ভিতর একটা নোনতা কুন্ঠাবোধ ,জেগে ওঠে, ডালপালা নারে,
যেভাবে, আমিও গাছের মতো বেড়ে উঠছি আমার মায়ের বুকের ভিতর,
স্ত্রীর বিছানার পাশে, মেয়ের নিষ্পাপ হাসিতে,
মৃত্যুর জন্য জন্মেছি ,একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছি চিতার দিকে।
বুকের ভিতর অবিরাম রক্তিম ক্ষরণ,মানসী রজঃস্বলা নিয়মমাফিক।
আস্তিনে লুকিয়ে রাখি নিজের না পারাগুলো,
প্রাপ্তবয়ষ্করা প্রকাশ্যে জামা পাল্টাতে লজ্জা পায়, কুন্ঠাবোধ হয়।