বহুড়ী
-চন্দন ব্যানার্জী
এ বাবু একটা কাজ দিবি?
বাপটা দুই মাস ঘরে বসে আছে!
কারখানাটা কারা যেন বন্ধ করে দিলো।
ঘরে চাল নাই, ডাল নাই, ওষুধ নাই!
আমি মাধ্যমিকে লেটার নিয়ে পাস করেছি,
ঘরের সব কাজ করতে পারি।
মা সেই যেবার ছেড়ে গেলো,
সব কাজ আমায় একাই করতে হয়।
বাপটা বড্ড ভালো মানুষ জানিস!
এতো কষ্ট, কিচ্ছুটি টের পেতে দেয়না।
এ বাবু একটা কাজ দিবি?
চল ফুলকি আমরা শাদি করি।
মেয়েমানুষ হয়ে কাজ করবি?
না না! তোর বাপ আমার বাপ,
আজ থেকে সব দায়িত্ব আমার।
আয় সংসার পাতি নতুন করে,
কোন কষ্ট, দুঃখ, অভাব থাকবেনা,
রাজরানী হয়ে থাকবি আমার,
আমি,তুই, আর বুড়া বাপ।
তুই বাড়ির সব কাজ করবি,
আমার আর বাপের সেবা করবি,
চল ফুলকি আমরা শাদি করি।
দ্যাখ বাবু আজ কতো সুখী আমি!
সিঁদুরের লাল টিপ আর হাতে নেই আমার,
ওরা আমার হাতে লাল গ্লাস ধরিয়ে দিয়েছে।
তুই তো দিব্বি রাজরোগ নিয়ে স্বর্গে গেলি,
শেষ উপকারটাও নাহয় করেই যেতিস।
শকুনিগুলো যখন রোজ রাতে আমায় ছিঁড়ে খায়,
আমার শীৎকার এর প্রতিধ্বনি শুনতে পাস?
বাপটাকে বিষ খাইয়ে মেরে দিয়েছি,
না আত্মহত্যা না, আমি মেরেছি তাকে!
পরের জন্মে মেয়ে হলে অসুররূপে চাই তোকে,
দ্যাখ বাবু আজ কতো সুখী আমি।