অণু গল্প

জন্তুম্যানড্যাডের মুখোশের আড়ালে

জন্তুম্যানড্যাডের মুখোশের আড়ালে

-অঞ্জলি দে নন্দী

একটি জন্তু-ম্যান, ড্যাড হল। শিশুটি হামাগুড়ি দিচ্ছে….. মেঝের ওপরে, কখন লুকিয়ে, ছুঁচ ফেলে রাখলো। মাটি খুবই ঈশ্বর নির্ভর! সদা সর্বদা ঈশ্বরকে বলে যে তিনি যেন তার পুত্রকে রক্ষা করেন। তাই, তার নজরে এলো, ঠিক সময়ে ছুঁচটি। আর একটু দেরী হলেই, ছেলের কচি হাতে গেঁথে যেতো। মা তুলে নিল। ছেলেটির হামাগুড়ির পথ থেকে।
এবার হামাগুড়ির পথে T V এর, ফোনের তার টানলো। শিশুটির পায়ে, হাতে, জড়িয়ে যেতে লাগলো। মাটি চেষ্টা করলো, ওগুলিকে ওপর দিয়ে টানার। কিন্তু তার ওপরে নির্যাতন করলো। তাই মাটি তা করতে পারলো না।
বাচ্চাটি ডাস্ট এলার্জির জন্য তখন চিকিৎসাধীন। ডাক্তার বলেছেন যে, ট্রিটমেন্ট করালে, কয়েক বছর পর, সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে। রাতে, একটি মশারীর মধ্যে, তিনজনে সুতো। এতো নিচু যে, হাঁটু মুড়লে, শুয়ে শুয়ে, মশারীর ওপরটা, হাঁটুতে ঠেকে যায়। কারেন্ট অফ হয়, রোজ রাতে, কয়েক ঘন্টা, নিয়মিত ভাবে। অনেক করে, পায়ে ধরে, বলা স্বত্বেও মশারীটিকে, কিছুতেই, উঁচু করতে দিল না। এরপর, উচ্চ শব্দে নাক ডাকা। বাচ্চা ছেলেটি, চমকে উঠে, কেঁদে উঠতো। মা, অনেক অনুনয় বিনয় করেও ড্যাডকে অন্য রুমে শোয়াতে পারলো না। বেশি জোর করলে, মায়ের হাত ঘুরিয়ে পিছন দিকে করে, চেপে ধরে রাখতো। মাটি বলতো, ” ছেড়ে দাও! আর বলবো না! লাগছে! ” আর এমন ঘুমোত যে, পাশ ফিরে যেই শুতো, মাটি বিছানা থেকে, নিছে পরে যেতো। আর শিশুটির গায়ে মোটা ভারী ড্যাড-এর পা-তোলা – সে স্বাস নিতে না পারায়, ছটপট করছে। মা পা সরিয়ে, ছেলেকে কোলে নিয়ে সারারাত জেগে কাটিয়ে দিতো। মাথায় মশারীর ছোঁয়ার জন্য, নিচু করেই থাকতো। হাতে হাতপাখা চলছে।
আর বাইরের পরিচিত সবার কাছে এমন বলতো, যেন পুত্র তার অতি প্রিয়। মাটি চুপ করে শুনতো। মুখ খুলেই অত্যাচার যে! ………

Loading

One Comment

Leave A Comment

You cannot copy content of this page