প্রতিজ্ঞাবদ্ধ
-সাত্বকী বসু
গভীর রাত,যখন নিশুতি হয়ে আসে,একলা মন যখন ডুকরে ওঠে,
কিছু নোনা জল ভিড় করে এসে কলমের ডগায়,একরাশ বিষন্নতায় ।
তখন কেমন যেন মনখারাপের ভিড় শরীর জুড়ে ক্লান্তি নামায়,
কেরোসিনের বাতি ঝিমিয়ে পড়ে, থমকে যায় পরিবেশে।
কিছু কালো ছায়া চুন সুরকির দেওয়ালে চিত্রিত করে সমাজের এই ভয়ংকর অবক্ষয়।
তবু দুটি অবসন্ন হাত লিখে চলে,হলদেটে কাগজের বুকে,
আমি হয়তো কারোর যোগ্য নই, তাই হয়তো ভালোবাসা পাইনি কারোর কাছে,
ব্যার্থতা গ্রাস করেছে কালচে দুটো চোখ,রুক্ষ কেশ।
যন্ত্রনা,ব্যার্থতা,বিরহ,ভাঙা,গড়া সব কিছু উগড়ে দি, কিছু ধূসর কবিতায়।
হয়তো সেই সাদা কালো কবিতাগুলো আমার মতই ব্যার্থ,
অকবিতার ভিড়ে আজ তারা অস্তিত্বের সংগ্রামে।
তবু জানি তারা শেষ যাত্রায় সাজবে এক গুচ্ছ অলঙ্কারে,
কোনো ব্যার্থ প্রেমিক,কোনো বন্যায় গৃহহীন সেই কবিতায় প্রাণ খুঁজবে,
কোনো ধর্ষিতা নারী তার সংগ্রামের রসদ খুঁজবে,
কোনো বিধস্ত বিপর্যস্ত সৈনিক আবার অস্ত্র হাতে উঁচিয়ে ধরবে,
কোনো ব্যার্থ ছাত্র খুঁজে পাবে নতুন করে অধ্যায় শুরুর রসদ।
রেখা অক্ষরে রক্ত মাংসের সমাহার কবিতার চিত্রে চিত্রিত।
তিলে তিলে মৃত সেই অক্ষরাদি চিত্রিত করবে,
প্রতিবাদের ধুম্র কালচে কুণ্ডুলি।
ভোরের সূর্যোদয়ের রক্তিম কিরণে সূচিত হবে নতুন এক অধ্যায়।
তাই তো ক্লান্ত বিকৃত দুটো হাত লিখে চলে,
সমাজের বুকে ব্যার্থতা ঘোচাতে বারবার।
ব্যার্থ আমি,কলমে ব্যার্থতা ঘোচাবো,এই আমার প্রতিজ্ঞা।