অণু গল্প

অনুতপ্ত

অনুতপ্ত
-রাখী চক্রবর্তী

 

যন্ত্রণা, ,,,যন্ত্রণা, ,,,বুঝলে গিন্নি ,বুকে হাত ভোলাতে ভোলাতে সোমনাথ বলছে রীতাকে।
“তোমার তো চিন্তা শেষ। তা যন্ত্রণা টা কিসের তাহলে “বেশ ব্যঙ্গের সুরে বলল কথাগুলো রীতা সোমনাথকে।
মেয়ের বিয়ে হয়ে গেল। অষ্ট মঙ্গলাতে মেয়ে জামাইকেে তো ভালোই দেখলাম। বেশ মিলমিশ ও আছে। ভাবনা তো আমাদের শেষ। নীলা আমাদের একমাত্র সন্তান, সুখে থাকবে, ব্যাস আর কি চাই।পথের কাঁটাকে অনেক বছর হল,,,,,,,,,
রীতা কেন আবার পুরানো কথা তুলছো। সব ভুলে যেতে চাই।
রীতা–ভুলব বললেই তো আর ভোলা যাবে না।আমাদের পাপের শাস্তি যেন আমাদের মেয়ে নীলা না পায়। তোমার সাথে পাপ কাজটাতে আমিও তো সামিল ছিলাম। হয়তো স্বামীর কাছে আদর্শ পত্নী হওয়ার জন্য।বাদ দাও,ও সব কথা। নতুন করে আবার কি হল?এতদিন তো কিছু বলোনি।
সোমনাথ ভেজা গলায় বলল,নীলাকে এতদিন আগলে রেখেছিলাম এখন ও স্বামীর ঘরে ভয়টা ওখানেই তো।আমি আমার কাজে অনুতপ্ত। দগ্ধে দগ্ধে মরছি রোজ।বেশ কিছু দিন ধরে অনামিকা আসছে আমার কাছে।বলছে ,বাঁচাও দাদা আমি বাঁচতে চাই। আমি সর্বদা আতঙ্কে থাকি। আমাদের পাপের শাস্তি যেন নীলা না পায়।
রীতা তাচ্ছিল্যর স্বরে বলল,আমি তোমাকে অনেক বার বলেছিলাম “মাথা খারাপ তোমার বোনের। গায়ে যখন আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করতে গেল ওকে তুমি বাঁচাও ।না তুমি বাঁচাতে গেলে না আমাকে যেতে দিলে। পাগলী বোন তোমার না হয় ভুল করেই ফেলল। তুমি তাকে বাঁচালে না। আমিও তো তোমার সাথে সমান দোষের ভাগীদার হয়ে গেলাম। আমি যদি তোমার কথা না শুনে ছুটে যেতাম তাহলে হয়তো,,,,তখন অবশ্য আমি ভয় পেয়েছিলাম সংসার হারানোর, তোমাকে হারানোর।আজ আমি অনুতপ্ত। রোজ ক্ষমা চাই আমি অনামিকার কাছে ।
সোমনাথ অনামিকার ফটোর সামনে দাঁড়িয়ে হাত জোড় করে বলছে,”আমায় ক্ষমা করে দে বোন। নীলাকে বাঁচতে দে। ওর ক্ষতি করিস না। আজ আমিও অনতাপের দগ্ধ জ্বালায় জ্বলছি রে।সারা গা জ্বলছে রে সারা গা জ্বলছে।

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page