স্বামী
-পাপিয়া ঘোষ সিংহ
তোমার জন্য মাথায় সিঁদুর, তোমার জন্য শাঁখা,
তোমার জন্য বারোমাসে তেরোটি উপোস রাখা।
তোমার রঙে রঙ মেলানো, তোমার নামে নাম,
তোমার কাছেই আমার, তবু থাকেনা কোনো দাম।
পতি হলেন পরমগুরু, পত্নী হ’ল দাসী,
দাসী হয়ে প্রভু তোমায়, কেমনে ভালোবাসি?
তুমি না থাকলে জীবন আমার সাদা থানেতে মোড়া,
আমি না থাকলে কোনো নিয়মে থাকো না তো ঘেরা।
তোমার স্থান, আমার মাথায়!! আমার স্থান পায়ে!!
আর কতকাল আহত হবো, ভালোবাসার ঘায়ে?
খারাপ কিছু ঘটলে পরে, সবই আমার দায়!
যতই কম হওনা তুমি বিচারের যোগ্যতায়।
আমার গর্ভে সন্তান রয় দশ মাস দশ দিন,
জন্ম নিলেই তোমার বংশ, আমি হই বিলীন।
আমি তোমার অর্ধাঙ্গিনী, নয়তো পূর্ণ মানুষ,
তুমি কেন নও অর্ধেক অংশ? পূর্ণ তুমি পুরুষ !
তুমি, আমি সমান সমান,তফাৎ যতখানি থাক,
মানে,মর্যাদায়, রীতি, নীতিতে সমানাধিকার থাক।
তুমি আমার হৃদয়ে থাকো ,ভালোবাসা হয়ে,
সাথী হয়ে, বন্ধু হয়ে, হাতে মোর হাত নিয়ে।
স্বামী, স্ত্রী, একে অপরের প্রভু বা দাসী নয়।
এ সমাজ আজও এত বৈষম্য! অন্ধকারময়!
এ সংসারে যত সৃষ্টি, যত করি তুমি আমি মিলে,
এসো সখা মোর স্বর্গ, রচনা করি বিভেদ ভুলে।