কবিতা

আগুন জ্বালো

আগুন জ্বালো
-পারমিতা চ্যাটার্জী

 

 

খেলব নাকি আগুন নিয়ে খেলব না কি একটু –
চতুর্দিকে জ্বলছে শুধু আগুন –
এ আগুন কি নিভবে শুধু জলে-?
এ আগুন নেভাতে গেলে খেলতে হবে আগুন নিয়ে–
ঘর জ্বলছে, জ্বলছে পথ, জ্বলছে প্রতি দেশের কোণ–।
হাসপাতালে শিশুর মৃত্যু ডাক্তারের লোভের আগুন–
ঘরের গৃহবধু মরছে অত্যাচার আর লাঞ্ছনার আগুন–
ঝোপের আড়ালে নারীর লজ্জা পুড়ছে কামনা আর লালসার আগুন —
মায়ের কোল খালি হচ্ছে মিথ্যা হানাহানির আগুন-
চতুর্দিকের হিংসার আগুনে পুড়ে যাচ্ছে মানব চেতনা–
হিংসা আর হানাহানির আগুনে পুড়ে যাচ্ছে নিত্য প্রাণ–
কোথায় তবে শান্তির জল? কে নেভাবে এই আগুন-?
দেখিনা ভাই আগুন নিয়ে খেলে একটু — নেভে কিনা সমাজের আগুন–?
ধর্ষকদের চোখে জ্বালি না জ্বলন্ত একটা রংমশালের আগুন —
অত্যাচারী পুরুষের গায়ে দি না কেরোসিন ঢেলে–
দেখ না কেমন লাগে?
প্রাণঘাতী ওই ডাক্তার গুলোর গায়ে দি না ছুঁড়ে জ্বলন্ত দেশলাইয়ের একটি কাঠি–
তবে যদি প্রাণে বাঁচে অসহায় রোগীর –
তবে যদি কান্না থামে সন্তান হারা জননীর-
আগুন দিয়েই নেভাতে হবে সর্বত্র জ্বলন্ত আগুন –।
এই তো সেই ভারতবর্ষ – যে মাটিতে জন্মেছিলেন বীর সুভাষ আর সূর্য সেন–
এ তো সেই মাতৃভূমি যেখানে হাসতে হাসতে ফাঁসির দড়ি গলায় দিয়েছেন ক্ষুদিরাম–
আজও তো গান গাই আমরা বন্দে মাতারম–
আজ কোথায় ক্ষুদিরাম?
কোথায় বীর সুভাষ? কোথায় সূর্য সেন?
ফাঁসির দড়ির বদলে আজ যুবক নারীর রক্ত খায়–
পরাধীন ভারতের রক্তপাত এখন স্বাধীন ভারতে হয়–
বীর সন্তানের সন্তান হারা জননীরা কাঁদতেন পুত্রের বীরত্বের গর্বে–
স্বাধীন ভারতের জননী কাঁদেন অপরাধী সন্তানের লজ্জায় —
কেন এই আগুন চতুর্দিকে?
আছে কি কোন উত্তর?
সুভাষ একদিন বলেছিলেন, ” তোমরা আমায় রক্ত দাও আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব”–
আজ আমরা গাই কবিগুরুর গান– অন্য মানে নিয়ে- ” ব্যার্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলে আগুন জ্বালো”-

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page