Site icon আলাপী মন

অশান্ত সময়

অশান্ত সময়
-রুদ্র প্রসাদ

 

 

অশান্ত সবই, সবেগে ধাবমান সময়ের ব্যস্ত গতি,
জীবনের বাতি নেভালো নদীর পাগল পারা মতি ;
কলের পুতুলের মতো ছোটে সব এদিক-ওদিকে,
অস্তিত্ব বজায়ের লড়াইয়ে সবই শূন্য দিগ্বিদিকে!
কালের নিয়মে সবাই তো হয়েই গিয়েছে যান্ত্রিক,
প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে মানুষ হ’ল দানবিক!
থাকবে কেমনে অস্তিত্ব টিকে আজকের নিরিখে?
সমবিব্যহারে না একান্তেই, সঙ্গিন এই তারিখে…!
অকারণ আস্ফালনে কদর্য ক্ষমতা প্রদর্শন চলে,
মানবতার রবি হতাশার আবহেই গেল অস্তাচলে!
স্বার্থান্বেষী মাংসাশীরা আড়ালে মুখ মুছতে থাকে,
সদা অহিংস বৈষ্ণব সাজে ঠকাতে চাইছে কাকে?
কর্মহীন কতশত যুবা হচ্ছে দিশাহারা প্রতিনিয়ত,
আত্মহননে মুক্তির পথ খোঁজে হেরে যাওয়া যত ;
মাতৃজঠরে হিংসার বলী শৈশবের অপাপবিদ্ধতা,
মরম শরমহীন, অনুতাপে পরিহাসে দগ্ধ মুগ্ধতা ।
অস্থিরতা মেখে আলোচনায় মুখরিত কোলাহল,
ধ্বংস মুখে দাঁড়িয়ে বিবেকের অন্তহীন দোলাচল ;
শতেক ওঠা পড়ার ফাঁকে মেলে মহাকালের সাজা,
তারই মাঝে অলীকে বিভোর, সবাই উলঙ্গ রাজা ।
তবুও চাতকের মতোই চাওয়া এক পশলা বৃষ্টির,
অলিন্দে চেতনা জাগিয়ে ধোঁয়াশা কাটবে দৃষ্টির ;
শীতল উষ্ণতা নিয়েই প্রশান্ত হবে অখণ্ড চরাচর,
ধন্য হবে মানব জনম, হরষে বিকশিত আপামর ।
বসে আশা ভাবে আনমনে, লাগবে হাওয়া পালে,
অবগুণ্ঠন সরালেই মিলবে দেখা দিকচক্রবালে ;
সাজে রেঙে ধরা দিয়ে যাবে তার ঐ আবর্তনীতে,
অকিঞ্চনে সমাহিত আগামী, বদ্ধ সুদৃঢ়বেষ্টনীতে ।
আজও কল্পলোকে শ্রুতিতে অশ্রুত বেহাগ রাগিণী,
অসুখে সুখের শীৎকার খোঁজে কাঙ্খিত আগমনী ;
কূপমণ্ডূকসম অর্বাচীনের হাহাকারে প্রশ্ন যত রয়,
বিশ্বাসেই বৈতরণী পার হবে চপলমতি এই সময় ।
সঞ্চারিত আবাহনে নিরুদ্বেগ মুহূর্ত হবে সমাদৃতা,
সজ্জিত অনুভূতির স্পর্শেই সুঠাম হবে সমাগতা ;
স্থবিরতা আসবে নেমে নবোদয়ের প্রতীকী সাজে,
সোচ্চারে নীরবে অপেক্ষারই মন্দ্রিত ধ্বনি বাজে।।

Exit mobile version