এক টুকরো স্বাধীনতা

এক টুকরো স্বাধীনতা
-রাণা চ্যাটার্জী

পাগলিটা আজ মার খেয়েই গেল…..
হ্যা,সত্যি বলছি,একটু আগে পাগলিটাকে বেধড়ক
মার, ঘাড় ধাক্কা নিজের আস্তানা থেকেই..!

আমার পাড়ার ক্লাবে, পতাকা উত্তোলনের সাজো সাজো রব, দেশাত্মবোধক সংগীতের সুমধুরতা।
ব্যালকনি থেকে গর্বিত হয়ে উপভোগ করছিলাম
তেরঙ্গা পতাকার অসাধারণত্ব।
ছোট স্কুল বাচ্চাদের শৃঙ্খলিত লাইন, হাতে চকলেট
আর স্টেজে মান্যবর অতিথি বিধায়ক, গর্বে সাধের
কেতা দুরস্ত পাঞ্জাবি সামলাতে বেশ মগ্ন।

মুহু র্মুহু ক্যামেরার ঝলকানি, গাঘেঁষে সেলফি
নেবার অস্থিরতা কোনো কিছুই নজর এড়াচ্ছিলো না!
পাশের গাছ তলায় থাকা পাগলিটার আস্তানা, ওই গাছ তলা থেকে সবেধন ওর একমাত্র সম্বল, ময়লা পুঁটলিটা ছুঁড়ে ফেলে, পাতা বেঞ্চে খোশ মেজাজে দলীয় চামচা আর দুচার আইন রক্ষক!
সামনে বিধায়কের দামী দুধ সাদা সজ্জিত গাড়ি।

স্বাধীনতা দিবস পালনে ব্রতী সাধারণ জনগণ,
দলীয় অনুগত ভিড়, টপকে পাগলিটা, নিজের আস্তানা চিনতে না পেরে, ভুল করে তার ময়লা
হাতটা রেখে ফেলেছিল ওই দামি গাড়িতে..!

রে রে করে ওঠা, পার্টির তাঁবেদার, স্বেচ্ছাসেবকরা,
পাগলীটা কিছু বোঝার আগেই, লাঠি পেটা করে
মেরে ওকে তাড়িয়ে দিল সেখান থেকে!

ততক্ষণে মঞ্চে শুরু হয়েছে স্বাধীনতার মাহাত্ম্য, উন্নয়নের জয় গান, বিধায়কের ভাষণ,পুষ্পবৃষ্টি।

পাগলিটার মাথা ফেটে গল গল রক্ত, ফোঁটা ফোঁটা ঝরে,খানিক আগে বৃষ্টির, জমা জল লাল করছে!

Loading

One thought on “এক টুকরো স্বাধীনতা

Leave A Comment