ধর্ষক
-তন্ময় সিংহ রায়
‘ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিওনা।’ বহুল প্রচলিত অর্থহীন নয় এমন প্রবাদ বাক্যটির মূল্য, মানবিকতার উজ্বল কলঙ্কিত সেই ‘ধর্ষক’ নামক চরিত্রটির কাছে বর্তমানে নিছক কয়েকটি শব্দের সমষ্টি ব্যতীত অন্য কিছুই নয়। প্রশ্ন যদি তৈরী হয় কারণ? কারণ, অনায়াসে নির্দ্বিধায় হীন মানসিকতার পরিচয় সম্পন্ন করার পরেও আইন পদদলিত করে যে তারা খুব স্বাভাবিক ভাবেই সমাজের মূল স্রোতে শরীর ভাসিয়ে দিতে যথেষ্ঠ সক্ষমতার পরিচয় বহন করবে তা তারা নিজেরাও জানে। প্রশাসনের এ হেন প্রতিবন্ধী ভূমিকায় বিপুল অনুপ্রেরণায় ধর্ষকমন্ডলী খুব সুষ্ঠ ও স্বাভাবিকভাবেই তাদের বংশগতির ধারা সমাজে অব্যাহত রেখে চলেছে। নিকৃষ্ট শ্রেণীর কলঙ্কিত এই সমস্ত ভদ্র পোষাকি জীবের ভবিষ্যৎ টার্গেট বোধকরি কোনো চতুষ্পদী যে হবেনা এমন ভাবাটা বিশেষ আশ্চর্যের কিছুই নয় কারণ, যৌনাচার যখন চুড়ান্ত বিকৃত পর্যায় তখন প্রতিবাদিহীনা চতুষ্পদীর কাছে এদের আধিপত্য অপেক্ষাকৃত অনেকাংশেই বেশি। ‘আত্মসন্মান’ শব্দটা শ্রুতিগোচর হলেও একজন মানুষের সম্পূর্ণ জীবনে এর তাৎপর্য ঠিক কতটা, মানসিকভাবে অশিক্ষিত এ সমস্ত বিচিত্র দ্বিপদীরা তা জানেইনা। ‘অনুতাপ’ এদের বিশেষ বেগ প্রদান করেনা।এদের কুকর্মের ফলে সাধারণ ভদ্রজনেদের ফুসফুসে দুষিত বর্জ্যের যে কিরূপ প্রভাব পড়তে পারে তাও এদের জানার বাইরে। এরাও হাসে, খাদ্য গ্রহণ করে, আপাদমস্তক পোষাকে সুসজ্জিত হয়, মিশে থাকে ভদ্রজনের মাঝেই কিন্তু মনের গভীরে ঝরতে থাকে যৌন লালসার রস। আজ ‘আশারাম’, কাল ‘বাবুরাম’ তো পরশু ‘রহিম রাম।’ ধর্ষণ জগতের বিশেষত সেলিব্রিটিদের শাস্তির কৃত্রিমতা ভবিষ্যৎ সমাজের হাজারো উদিয়মান ধর্ষকের বিপুল অনুপ্রেরণা। এদের পূণ্য স্নানে গঙ্গাও অপবিত্র হয় ও তুলনামূলকভাবে বর্জ্যের গন্ধ এদের চরিত্রের গন্ধ অপেক্ষা শ্রেয় তবুও এরা মুক্ত অক্সিজেনের অংশীদার। গভীর মনোযোগী এ হেন ধর্ষকবৃন্দের মুক্ত অক্সিজেনের হেতু যে শুধুমাত্র অর্থ তা বিশ্লেষণ করে বোধগম্য করানোর কোনো মানেই হয়না। বলাবাহুল্য দরিদ্র ধর্ষক-ও সামাজিক জীবরূপে তাদের অস্তিত্বের নিদর্শন রেখে চলেছে তথাপি উজ্বল নক্ষত্রের ন্যায় ধর্ষকরুপে বিবেচিত হয় একমাত্র অর্থবান ধর্ষকরাই।