বহ্নিশিখা
– রীণা চ্যাটার্জী
ইচ্ছেরা অবাধ্য হয়ে উঠছিল,
কোনো অনুশাসনে চাইছিল না বাঁধ মানতে, ডানা মেলবার নানা অজুহাতে বেপরোয়া হতে চেয়েছিল।
লোকলজ্জায়, ভয়ে ছিন্ন ভিন্ন করেছি তাকে নির্মম দু’হাতে।
তখনো…তখনো সমস্ত সত্তা একাগ্ৰ প্রতিবাদে চীৎকার করে উঠছিল বারবার!
অযথা কোলাহলের আতঙ্কে-ভয়ে,
শত্রুতা আর নৃশংসতার মুখোশে…অবলীলায় করেছিলাম অগ্নি সংযোগের আয়োজন।
রূদ্ধ কপাটে জ্বলেছিল উদ্দাম লেলিহান শিখা, রক্তিম আভায় দেখলাম তার অসহায় করুণ আর্তি।
অসহ্য দহনে মনের গভীরে, রুধির তপ্তধারায় ভিজেছিল কপোল, নীরবে নিরুচ্চারে।
জ্বালানো দগ্ধ আত্মার সাদা ভস্ম, অনুভূতি জুড়ে থাকা একমুঠো কঠিন শীতলতা।
সফেদ বায়বীয় নিস্তব্ধতার নিস্তেজ ফ্রেমে বন্দী আমার স্বপ্ন আর আমার স্বপ্নের ইচ্ছেরা।
ইচ্ছেরা কংক্রিটের কবরে, তাই ইতিহাসও পায়নি কোনো পূতিগন্ধ।
স্বপ্নের, ইচ্ছের নীরব হত্যাকারী.. নিত্যদিনের ধিকিধিকি আগুনে পোড়ে।
সমাজ দেখে জ্বলন্ত অগ্নি শিখা।
জানা-অজানা প্রশ্নের ভিড়ে,
নিজের কাছে অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ আজ।
চাই না কোনো মূল্যে মীমাংসা, শুনতে চাই না অহেতুক মূল্যায়ণ।
আমি, শুধু আমিই জানি অনল প্রশ্বাসে কেন আমি শুধুই ‘বহ্নিশিখা’।