সখী
-অমরেশ কুমার
সখী তোর চোখে জল
কী হয়েছে তোর ?
তুই আমায় বল ;
চুপ কেনো সখী ,
আজ কেনো তুই এত উদাস ?
লাগিছে তোরে দুঃখী !
নিশ্চুপ কিছুক্ষন ,
উত্তর আসে পরক্ষন —–
কি বলিব সখী তোরে
বাপের বাড়িতে আছি দু’মাস ধরে ;
রাগ আর অভিমানে বলেছিল —-
” যাও চলে , আসিওনা কখনো ফিরে ” ;
এক খানা থান পরে
বেরিয়েছিনু ছেলে কোলে ।।
কই সখী বলিস নি তো আগে
নাকি পারিসনি বলিতে
অভিমানের লাজে ?
এলোনা সে একবারও দেখিতে ,
বাঁচিয়া তো আছি মরিতে মরিতে ;
কী বলিব সখী ,
এ অভাগীর মনের কথা
কে বা বুঝিবে
এ অভাগীর মনের ব্যাথা ।
আসেনি কখনো ফিরায়ে নিতে ?
ভেবেছিনু , সে আসিবে ফিরে
সম্মুখে দাঁড়ায়ে বলিবে ——
“এতদিন পারিলে থাকিতে
আমায় ছেড়ে ?”
মনটা উঠিবে আনন্দে দুলে
সব ব্যাথা ভুলিব ,অশ্রু জলে ;
হায় ! সে তো আজ ও আসে নায় ।।
সখী , জীবন যে বেদনাময়
এ সংসারে কেহ কারো নয় ,
যা সখী ; যা ফিরে ,
নিজ ঘরে ।
কোথা যাবো সখী ?
সে যে আনিয়াছে ঘরে
নতুন ময়ূরাক্ষী ;
অগ্নিকে রাখিয়া সাক্ষী
মোর স্বামী মোর ঘরে
তুলিয়াছে রাজলক্ষ্মী ।
সখী , ভুলিয়া যা সব কথা
ভুলিয়া যা সব ব্যাথা ,
কি বা হইবে রাখিয়া মনে
শুদু , স্মৃতি হয়ে ভাসিবে
চোখের দু’কোনে ।
কি ভাবে ভুলিব তারে আমি
সে যে আমায় স্বামী
কত কাল একি সাতে
ছিলাম দু’জনে
ভাঙ্গন ধরিল সম্পর্কে
লোকমুখ-গুঞ্জনে ;
সখী ! সেতো পাইয়াছে
নুতন জীবন সাথী
কিন্তু , মোর চোখে ভেসে ওঠে
তারি ছবি রাতিভীতি ।।