অপ্রেমিকা প্রেম
-সাত্বকী বসু
দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ, তার সবুজ গালিচায় একাকী আমি,
আকাশে আধফালি চাঁদ, মৃদু জোৎস্না মোহময়ী প্রকৃতি।
দূরে বাঁশগাছের ঝোপে ঘনায়মান অন্ধকারে জোনাকির জটলা।
কালচে নীল আকাশের বুক দিয়ে উড়ে যায় কোনো এক রাতচড়া পাখি।
প্রকৃতির রূপ প্রত্যক্ষ করতে করতে আচ্ছন্ন হয়ে যাই।
হঠাৎ সে আসে! হ্যাঁ, সে আসে। তার সেই উগ্র নেশা ধরানো গন্ধ!
তার কালচে নীল চোখ, উন্মুক্ত কেশ রাশি, নগ্ন পিঠ,
তার উপরে বিছিয়ে থাকে, সেই ঘন কেশ রাশি।
আমি নেশাতুর চোখে চাই তার পানে।
তার বুকে যৌবনের নেশা, আমার চোখে মোহের জাল,
তার ত্রিবেণী সঙ্গমে, আমার দেবতার অভিষেক স্নান,
তার পাহাড় চূড়া যখন আমার সমতলে মিশে যায় বারবার,
তখন প্রকৃতি চিৎকার করে বলে, সাবধান এ অপ্রেমিকার জাল! হুঁশিয়ার!
তার পাহাড়ের গভীরে আগুন ছিল, তার তেজ আমি সহ্য করতে পারিনি!
এক লহমায় নিঃশেষ হয়ে গেছে,আমার দেবতা আমার সমতল, আমার যৌবন অঙ্গার।
হ্যাঁ, সেদিন সেই হুঁশিয়ারি আমি অবজ্ঞা করেছি!
আজও সেই প্রকৃতির খুব কাছে আমি, আজও আকাশে সেই আধফালি চাঁদ!
তারা আজ অবজ্ঞার সুরে হেসে চলে হাঃ হাঃ শব্দে,
চারিপাশে ভ্যাপসা পচা দুর্গন্ধ, কোনো বন্য জানোয়ারের বিভীষিকাময় চিৎকার!
রাতচড়া পাখি আবার উড়ে যায়,আমার মাথার খুব কাছ ঘেঁষে।
যেন বলে, “কি রে আর কোনোদিন অপ্রেমিকাকে প্রেমের পাঠ দিবি?”
আমি হেসে উঠে চিৎকার করে বলি,
“আমি হলাম প্রেমিক পুরুষ, প্রেমের পাঠ দিতে আমি সদাই প্রস্তুত!”