কামার
– অমরেশ কুমার
কামার কামার ওহে কামার
তুমি নাইকো কারো কথা শোনার
তবে কেন বসিয়া রহ একা ঘরে
তিল তিল করে মরে মরে।
সারাদিন ঘরে বসিয়া ,
জ্বালিয়েছ আগুন , পিটিয়েছ লোহা
না দেখিয়াছ ঘুরে এ প্রকৃতির শোভা।
সারাটি জীবন ধরিয়া
ফেলিলে চোখ দিয়ে জল
কিছু কি পাইলে তারই ফল।
আগুনে পুড়িয়া, ঘামিয়া,
ঝলসাইয়া বানাইলে অস্ত্র
মোরণবান বানাইয়া তোমারই বুকে
বিঁধিছে তোমারই অস্ত্র।।
চাহিয়া দেখো হে কামার
সময় নাইকো আর তোমার;
বাঁধিতে হইবে কোমর, নামিতে হইবে জলে,
সমাজ ডুবিতেছে, বাঁধ ভাঙ্গিয়াছে
কেহ নাই সারিবার,
এখনও কি শুধু চাহিয়া দেখিবে,
হে কামার?
সব কারিগর ভাসিয়া গিয়াছে স্রোতে
শুধু তুমি আছো বাঁচিয়া !
এখনোও সারাইলে বাঁধ
বাঁচিবে সমাজ, বাঁচিবে মানুষ।
তুমিই এখন সবার ঊর্ধে
তুমিই পারো হে কামার,
রুখে দাঁড়াতে
যত সভ্য অমানুষের বিরুদ্ধে।।
তোমারই অস্ত্র দিয়া
যারা ভাঙিয়াছে বাঁধ
কেউ তারা কাছে নেই আছে
শত শত মাইল দূরে,
বহু উঁচু অট্টালিকার চূড়ায় চড়িয়া
গাহিতেছে গান নরম সুরে;
মাথা উঁচু করে, তাদেরি দিকে
চিৎকার করে বল হে কামার,
“বাঁধ ভাঙিয়াছে, বাঁধ জোড়া লাগিবে
লোহায় মরিচা পড়িলে, ইস্পাত আসিবে” ।।