Site icon আলাপী মন

ফিরে পাওয়া

ফিরে পাওয়া
-বিশ্বদীপ মুখার্জী

 

 

একদিন ফোন করে সে আমায় বলল- ‘এই কাজটা আর ভাল লাগছে না। ইনকামের কোনো ঠিক নেই। কোনো মাসে বেশি হয় তো কোনো মাসে কিছুই হয়ে না। এ ভাবে চলা যা? তুমি কোনো এক ভাল কাজ জোগাড় করে দিতে পারবে?’

একটু সময় চেয়েছিলাম আমি। মাঝে ব্যস্ত হয়ে পড়াতে মনে পড়েনি তার কথা। দু’দিন পর আবার তার ফোন এলো- ‘কিছু পেলে?’
আমি খানিক চুপ থাকলাম, তারপর বললাম- ‘ভালো কিছু পাইনি রে। পেলে জানাবো।’

দায়সারা কথা এটা, জানি। পাপিয়া যে বেশ মন খারাপ করেই ফোনটা রাখলো, বুঝতে পারলাম। আমার নিজেরও খারাপ লাগলো। মেয়েটা আশা নিয়ে ফোন করেছিল। না, কিছু একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিতেই হবে তাকে।

পাপিয়ার সাথে আমার পরিচয়ের প্রায় ছ’বছর হল। স্নিগ্ধার মাধ্যমে পরিচয়। সে সময় আমার আর স্নিগ্ধার সম্পর্ক একেবারে শীর্ষে। পাপিয়া স্নিগ্ধার বোন। তার পিসির মেয়ে।
স্নিগ্ধার ও আমার সম্পর্কের ইতি ঘটেছে প্রায় দু’বছর হয়ে গেছে। কারণের দিকে ফিরে না তাকানোই ভালো। পুরনো স্মৃতি ঘেঁটে লাভ নেই। স্নিগ্ধার সাথে সম্পর্ক চুকে যাওয়ার পর পাপিয়ার সাথে খুব একটা কথা হতো না। মাঝে মাঝে ফেসবুকে হাই হ্যালো হতো, ক্রমে সেটাও বন্ধ হয়ে গেল।

প্রায় দু’মাস আগেকার কথা। নিজের এক বন্ধুর বিয়েতে আমি আসানসোল যাচ্ছিলাম। ভেবেছিলাম সকাল সকাল রওনা দেবো, কিন্তু সেটা সম্ভব হয়ে উঠল না। যে ট্রেনে আমি গেলাম সেটা হাওড়া থেকে বেলা বারোটায় ছাড়লো। ট্রেনে খুব একটা ভীড় ছিল না। জানালার পাশে একটা জায়গা দেখে আমি উপবেশন করলাম। খানিক পরেই আমার সামনের সিটে যে উপবিষ্ট হল তাকে দেখে আমি চমকে গেলাম। আমার সম্মুখে পাপিয়া। বহু দিন পর দেখা তার সাথে। পাপিয়াও যে এক নজর আমাকে দেখে বিস্মিত হয়েছিল সেটা বলাই বাহুল্য। তার বাড়ি দুর্গাপুরে, সেখানেই যাচ্ছিল সে। কিছু এদিক ওদিকের কথার পর পাপিয়া আমায় বললো- ‘জানো দীপদা, তোমার আর দিদির সম্পর্কটা ভেঙ্গে যাওয়ার মুখ্য কারণ আমি নিজেকেই মনে করি। বহুদিন ধরে অনেক মানসিক চাপে ছিলাম। দিদির কটু কথা কম শুনিনি।’

‘আমাদের ব্রেকআপের মধ্যে তুই কোত্থেকে এলি?’ আমি বিস্ময়ে জিজ্ঞেস করলাম।
‘তুমি জানো না পুরো ঘটনাটা। জানলে হয়তো জীবনে আমার মুখ দেখবে না। ঘটনাটা আমার বাবা মারা যাওয়ার কিছু দিন পিরে ঘটে। স্নিগ্ধাদির মা, মানে আমার মামী আমার বিরুদ্ধে আমার মায়ের কাছে কান ভাঙ্গানি দেয়। আমি নাকি কোলকাতাতে থেকে প্রচুর টাকা রোজগার করেছি, কিন্তু নিজের বাবার চিকিৎসার জন্য নাকি পর্যাপ্ত টাকা দিইনি। এরকম অনেক কথা। এক সময়ে আমার মাথা গরম হয়ে যায়। আমি নিজের হুঁশে ছিলাম না। আমার মামী নিজের মেয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাই মামীকে সে দিন ভুল প্রমাণ করার জন্য তোমাদের সম্পর্কের বিষয় আমি বলে দিলাম। তারপর শুরু হল কুরুক্ষেত্র। আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল আমার মামী।’

কথা শেষ করে পাপিয়া জানালার বাইরের দিকে তাকালো।
না, পাপিয়ার ওপর আমার রাগ হয়নি। সে সময়ে পাপিয়া যে পরিস্থিতিতে ছিল, মাথা গরম হওয়ারই কথা। 

‘তোর দোষ নয় পাপিয়া। দোষ পরিস্থিতির।’ আমি বললাম।

যাত্রা পথে আরও অনেক কথা হল তার সাথে। সম্পর্কের যে মিহিন সুতোটা ছিঁড়ে গিয়েছিল, সেটা পুনরায় জুড়তে আরম্ভ করলো। প্রায় কথা হতো পাপিয়ার সাথে। মাঝে মাঝে আমরা দেখাও করতাম। এক দিন পাপিয়া আমায় জিজ্ঞেস করল- ‘তুমি বিয়ে করবে না?’
‘জানি না রে। এখনও ঠিক করে উঠতে পারিনি বিয়ে করবো কি করবো না।’
‘এ আবার কেমন কথা? বিয়ে করবে কি না তাও ঠিক করোনি?’
আমি মাথা নাড়িয়ে না বললাম।
‘হে ভগবান! কেমন বিচিত্র মানুষ বাবা।’ হতাশ হয়ে পাপিয়া বললো।
খানিক চুপ হয়ে পাপিয়া আবার বলল- ‘সারা জীবন একলা থাকা যায় না। কারুর সঙ্গের দরকার পরে। আমি খুঁজে দেবো তোমার জন্য মেয়ে।’

পাপিয়ার মেয়ে খোঁজা এখনও হয়েনি। উল্টে আমাকে তার জন্য একটা কাজ খুঁজে দিতে বললো। আমি ডক্যুমেন্ট্রি ফিল্ম বানাই। নানাবিধ বিষয় নিয়ে বেশ কিছু ডক্যুমেন্ট্রি ফিল্ম আছে। কিছুদিন আগে আমার ক্যামেরাম্যান কাজ ছেড়ে দেয়। বেশ বিপদে পড়েছিলাম। হঠাৎ মাথায় এলো কেননা পাপিয়াকে দিয়ে এ কাজটা করানো যাক। সেও পার্ট টাইম জব খুঁজছে, এটা মন্দ কী? পাপিয়াকে বলতে সে রাজি হয়ে গেল। কিন্তু বললঝ- ‘আমি তো ক্যামেরা হ্যান্ডেল করতে পারি না।’
‘নো প্রোবলেম। আমার কাছে ক্যামেরা আছে। আমি শিখিয়ে দেবো।’ সমস্যার সমাধান হল।

খুব একটা মেহনত করতে হলো না পাপিয়াকে ক্যামেরা শেখাতে। প্রায় রোজ বিকেলেই আমরা গঙ্গার কোনো ঘাটে কিম্বা কোনো পার্কে দেখা করতাম। আমার কাছে থাকতো ক্যামেরা। পাপিয়াকে ক্যামেরা শেখাতাম। সেও খুব মনোযোগ দিয়ে শিখতো। নতুন কিছু শেখার তাগিদ ছিলো তার মধ্যে।

সে দিন হঠাৎ বিকেলে কালো মেঘ করে ঝড় উঠলো। কাল বৈশাখীর ঝড়। প্রিণ্সেপ ঘাটে ছিলাম আমরা। দু’জনেই ছুটে শেডের তলায় এলাম। ক্ষণেকের জন্য মনটা অন্যমনোস্ক হয়ে গিয়েছিল আমার। অজান্তেই কিছু পুরনো স্মৃতি চোখের সামনে ভেসে উঠলো। আমি আর স্নিগ্ধা ঘুরতে গিয়েছিলাম মাইথন ড্যাম। ঠিক এমন ভাবেই উঠেছিল ঝড় , শুরু হয়েছিল বৃষ্টি ….।

‘কী ভাবছো? কোথায় হারিয়ে গেলে?’ আমাকে ঝাঁকিয়ে জিজ্ঞেস করলো পাপিয়া।
আমি সংবিৎ ফিরে পেলাম।
‘ব্যাপারটা কী? কিছু পুরনো স্মৃতি মনে পড়লো নাকি?’ ঠোঁটে দুষ্টুমির হাঁসি নিয়ে পাপিয়া জিজ্ঞেস করলো।
উত্তরে আমি শুধু মৃদু হেসে দিলাম।
‘এটা কিন্তু ঠিক না। সাথে যে আছে তার কথা ভাবা উচিত।’ পাপিয়া বললো, ঈষৎ বানানো অভিমান নিয়ে।
‘রাগ কেন করছিস? তোর কথা তো সব সময় ভাবি।’
আমি বললাম।
‘ভাবো বুঝি?’ পাপিয়া গভীর দৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে জিজ্ঞেস করলো।
খানিক দৃষ্টি বিনিময়ের পর আমি চোখ সরিয়ে নিলাম। ঝড় আর বৃষ্টি শুরু করেছে তোলপাড়, এদিকে আমার হৃদয়েও কেমন এক তোলপাড় আরম্ভ হয়েছে। আমি কি কোনো ভুল পথে এগোচ্ছি? পাপিয়া নিজের গভীর দৃষ্টি দিয়ে কী বোঝাতে চায় আমায়?  না, আমি হয়তো ভুল বুঝেছি। পাপিয়ার দৃষ্টিতে কোনো গভীরতা নেই, রোজকার মতই সামান্য দৃষ্টি তার। নানাবিধ কথায় হৃদয়ের অন্তরে চলছিল তোলপাড়। হঠাৎ নিজের হাতে কারুর হাতের স্পর্শ পেলাম। পাপিয়ার হাত। আমার সামনে এসে দাঁড়ালো সে। চোখে চোখ রেখে বললো- ‘তুমি কি তার জায়গায় কাউকে রাখবে না ঠিক করেছ? এই দুনিয়াটা পরিবর্তনের ওপরেই টিকে আছে, দীপদা। তুমিও নিজেকে পাল্টাও। তোমার হৃদয়ে একটা স্থান এখন রিক্ত আছে, সেটাকে ভর্তি করো।’
আমি আস্তে করে নিজের হাত তার বাহু বন্ধন থেকে মুক্ত করালাম।
‘কাকে বাসাবো, পাপিয়া? কাকে বাসাবো সেই স্থানে? কেউ তো নেই আর।’ অন্যত্র তাকিয়ে বললাম আমি। জানি না কেন পাপিয়ার দিকে তাকাতে সাহস হচ্ছিল না আমার।
‘নিজের চোখ দিয়ে না, মন দিয়ে আশেপাশে দেখবার চেষ্টা করো। ঠিক দেখতে পেয়ে যাবে।’

বেশি কথা আর বাড়ালাম না। বেশ কিছুক্ষণ নির্বাক হয়ে দু’জনে বসে রইলাম। ঝড় থেমে গিয়েছিল। বৃষ্টিও ধরেছিল অল্প।
‘আমি বাড়ি যাবো। পৌঁছে দেবে?’ পাপিয়া জিজ্ঞেস করলো।

সেই সন্ধ্যার পর থেকে দু’দিন কথা হয়েনি পাপিয়ার সাথে। এক বিচিত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল। স্নিগ্ধা যেতে যেতে আমার হৃদয়ে দিয়ে গিয়েছিল একরাশ ঘৃণা। সেই ঘৃণার পর্বতকে অল্প অল্প করে ভেঙ্গেছি। বিগত দু’বছরে গভীর ভাবে কোনো মেয়ের সাথে মেলামেশা করিনি। প্রথমত সুযোগ পাইনি, এবং দ্বিতীয় মন থেকে ইচ্ছা চলে গিয়েছিলো। হঠাৎ করে পাপিয়া আমার জীবনে এলো। পাপিয়া, স্নিগ্ধার বোন। কথাটা ভেবেও কেমন যেন লাগছে। স্নিগ্ধা জানতে পারলে কী ভাববে? ছেলেটা আর কোনো মেয়ে পেল না, শেষে আমারি বোন? স্নিগ্ধা কী মনে করবে সেটা ভেবে আমার কী লাভ? সেটা আমার চিন্তার বিষয় হবে কেন? কে স্নিগ্ধা? ছিল এক সময় সম্পর্ক। এখন তো সব শেষ। সে কী ভাবছে, না ভাবছে, আমি মাথা ঘামাবো কেন? পাপিয়ার কথা ঠিক যে আছে তার কথাই চিন্তা করা উচিত।

পাপিয়া কী চায় সেটা কি কোনো দিন মুখ ফুটে বলবে আমায়? হয়তো না। সে ইঙ্গিত দিয়েছে। সে ইঙ্গিত যদি আমি না বুঝতে পারি তাহলে এই পৃথিবীতে আমার থেকে বড় গবেট আর কেও হবে না। পাপিয়া যদি আমায় ভালোবেসে থাকে তাহলে তার ভালোবাসাকে সম্মান দেওয়া আমার কর্তব্য। পাপিয়াকে ফোন করবো ঠিক করলাম। বেশ কিছুক্ষণ রিং হওয়ার পর সে ফোন তুললো- ‘হ্যালো!’
আশেপাশে গাড়ি, বাস, ট্রাকের আওয়াজ পাচ্ছি।
‘কোথায় তুই?’ আমি জিজ্ঞেস করলাম।
‘অটোতে।’
‘যাচ্ছিস কোথায়?’
‘বাড়ি ‘
আমি চমকে উঠলাম।
‘হঠাৎ বাড়ি! সব ভাল তো?’
‘ভালো। এখানে ভালো লাগছিল না। তাই ভাবলাম বাড়ি যাই।’
‘ফিরবি কবে?’
পাপিয়া দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললো। শুনতে পেলাম।
‘জানি না।’
‘জানি না মানে? পাপিয়া, কিছু দিন পর আমাদের কাজে বেরোতে হবে। জানিস তো?’
‘জানি। তুমি বরং অন্য ক্যামেরাম্যান ….।’
‘তুই পাগল হয়ে গেছিস নাকি পাপিয়া?’ আমি প্রায় চিৎকার করেই বললাম- ‘অন্য ক্যামেরাম্যান যদি নেওয়ারই হতো তাহলে তোকে সঙ্গে নিতাম কেন?’
‘আমি তোমার পথে বাধা হতে চাই না, দীপদা। প্লিজ, ক্ষমা করো আমায়। আমি পারবো না নিজেকে সামলাতে। আমি জানি, এই দু’দিনে তুমি প্রচুর মানসিক যন্ত্রণা ভোগ করেছো। শুধু আমার জন্য। আমি ভুলে গিয়েছিলাম যে আমি স্নিগ্ধার বোন। সেই স্নিগ্ধা যাকে তুমি ঘৃণা করো। হাজার হোক, কোথাও না কোথাও গিয়ে আমাদের রক্ত তো এক। আই অ্যাম স্যরি দীপদা। ভুল করে ফেলেছিলাম আমি। আই অ্যাম ……।’ আর বলতে পারলো না পাপিয়া। কন্ঠরোধ হয়ে গিয়েছিল তার । ফোন কেটে দিল সে।
বেশ কয়েকবার আমি চেষ্টা করলাম, ফোন বন্ধ পেলাম তার।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল নেমে এসেছিল। কোনো দিনই বিকেলে গৃহবন্দী হয়ে থাকার আমার অভ্যেস নেই, কিন্তু আজ বেরোতে মন চাইলো না। মনে হচ্ছিল বুকের ওপর কেউ যেন বিশাল পাথর চাপিয়ে রেখে দিয়েছে। দম বন্ধ হয়ে আসছিল। পশ্চিমের জানালাটা খুলে দিলাম। ঘর ঠাণ্ডা হল। জানালার কাছে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখছিলাম। এতক্ষণে হয়তো পাপিয়া বাড়ি পৌঁছে গেছে। পাশের টেবিলে রাখা ক্যামেরার দিকে তাকালাম। পাপিয়ার হাতের স্পর্শ আছে এতে। পাপিয়ার চেহারা চোখের সামনে ভেসে উঠলো। সে হাসছে, কথা বলছে, কিছু ভাবছে সে, নানাবিধ মুখভঙ্গি তার। পাপিয়ার শেষ চেহারা মনে পড়লো। তাকে হোস্টেল ছাড়তে গিয়েছিলাম। অল্প অল্প বৃষ্টির মধ্যে দেখেছিলাম তাকে। তার দু’চোখ কোনো উত্তরের অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু আমি দিতে পারিনি উত্তর।

‘ঠক্ – ঠক্।’দরজায় টোকা দিল কেউ।
‘কে?’ জিজ্ঞেস করলাম। বেশ বিরক্ত হলাম। একান্তে থাকার ইচ্ছে ছিল। জবাব পেলাম না। পুনঃরায় টোকা। চকিতে মেজাজ গরম হয়ে গেল আমার।
‘কে জিজ্ঞেস করছি, কোনো জবাব নেই কেন?’ দরজা খুলতে খুলতে কথাগুলো প্রায় ঝেঁঝিয়ে বললাম। দরজা খুলে আমি থ । আমার সামনে পাপিয়া দাঁড়িয়ে। পিঠে একটা ব্যাগ, এবং বাঁ হাতে একটা ট্রলি। চোখ দু’টো ঈষৎ ফোলা। দরজার সামনে থেকে সরে গিয়ে তার ভেতরে ঢুকবার জায়গা বানালাম। ভেতরে ঢুকে এক কোণায় ব্যাগ গুলো রেখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো- ‘মাঝ পথে কাজ ফেলে আমি যাই না। যখন কথা দিয়েছি কাজে তোমার সাথে থাকবো, তখন নিজের কথা রাখবো আমি।’

কথা শেষ করে পাপিয়া মাটির দিকে তাকিয়ে রইলো। অজান্তেই আমার দু’চোখ জলে ভরে এলো। শরীরে যেন এক নতুন প্রাণের সঞ্চার হলো।
‘তুই কোলকাতা ছাড়বি না, পাপিয়া। আমাদের এক সাথে অনেক কাজ করতে হবে। আমি একলা কি করে পারবো, আমি একলা থাকবোই বা কি করে? সারা জীবন কি একলা থাকা যায়?’
আমার কথা শেষ হতেই পাপিয়া ঘাড় উঠিয়ে তাকালো আমার দিকে। তারও দু’চোখ ভরে এলো অশ্রুবিন্দুতে। আমি ওর কাছে গিয়ে মুছে দিলাম তার অশ্রু। সে নিজের মাথা গুঁজে দিলো আমার বুকে।

সমাপ্ত ।

Exit mobile version