উত্তর সূরীদের উদ্দেশ্যে চিঠি
-সত্যেন্দ্রনাথ পাইন
আমার লক্ষ্য অনেকদূর- পৌঁছতে পারবে কি না জানি না। তোমরা যারা আসছ তারা শপথ নিয়েই তবে আসবে। গতানুগতিকতায় আমার ঘৃনা।মানবতার শ্রেষ্ঠধাপে ওঠার আগে দৃঢ় প্রত্যয় চাই।তার জন্য যেকোনো মুল্য দিতে আমি প্রস্তুত-তোমরাও প্রস্তুত থেকো।চারিদিকে নানান বাধা বিপত্তি আর প্রলোভনের হাতছানি। লাঞ্ছনা অপমান ঘৃণা এখন আমার রোজকার খাদ্যতালিকা।মাঝে মাঝে মনের বিভ্রান্তিও যে ঘটেনা তা নয়। তবু তোমরা যারা আমার আদর্শকে সামনে রেখে এগিয়ে চলেছ তাদের কথা ভেবেই মনকে শক্ত করেছি।এসো, আমার দেখা স্বপ্নের নাদেখা সূর্যটাকে পূব আকাশে জ্বালিয়ে দাও। সামাজিক ব্যভিচার কুসংস্কার কে শিখণ্ডির মত সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিও না। তাদেরকে যুদ্ধে পরাজিত করে এগিয়ে চল। নাহলে ওরা আবার বাধা দেবে। ওদের থেকে সাবধান। আর্থ-সামাজিকতা, আতিথেয়তা জীর্ণ কাপড়ের টুকরোর মতো কার্ণিশে ঝুলছে।সযত্নে ওদেরকে শরীরের মধ্যে নাও।মানবতায় ভেজাল দিও না।সুনামের জন্য ভিক্ষা কোরোনা। কলঙ্ক আসবেই। চন্দ্রের কিরণের স্নিগ্ধতা থাকলেও কলঙ্ক চিরকালীন।ভয় পেয়ো না। বিপদের মুখোমুখি দাঁড়াও।ভিক্ষার ঝুলি পরিত্যাগ কর।
অহংকারী বলে বিদ্রুপ আসবে।আসুক। অনুসরণ থামিয়ে দিওনা। দেশ মাতৃকা আমার, অনেক দিন হল শয্যাশায়ী। রোগমুক্তির জন্য উপযুক্ত ওষুধ,পদ্য, পানীয় প্রয়োজন। সম্পত্তির লোভে অনেকেই উঁকি দিচ্ছে। ওদের ভীড় ঠেলে মায়ের শয্যা পাশে এসে দাঁড়াও। মাকে অভয় দাও।মা সুস্থ হলেই তোমরাও সুস্থ হবে। আমি তোমাদের জন্য অপেক্ষা করব। নৌকোর পাটাতনে পা দিলেই আমি ছুটি নেব- ভেবো না।
ধীরে ধীরে নয়; হাওয়ার উল্টোদিকে ঝড়ের বেগে আস্তে হবে।এমন দিন হয়তো বেশি ক্ষণ পাবে না। মাকে সেবা করার এই-ই প্রকৃত সময়।সততা, সদাচার আর একনিষ্ঠ আত্ম- বলিদান দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হও। আমি তোমাদের পাশে পাশেই থাকবো চিরদিন। জয় মানবতার জয়, জয় সত্যের জয়।।
ইতি
সত্যান্বেষী।