একান্তে তোমার জন্য
-কাজল দাস
তোমার যখন মন খারাপের মেঘ জমেছে
কান্না পাচ্ছে- ভীষণ রকম কান্না পাচ্ছে
তোমার জন্য গান ধরবে আহ্লাদে
“ভালবাসার রাজপ্রাসাদে”- মান্না দে।
তোমার যখন প্রেমে পড়ার বয়স এলো
ভাবছ মিছেই ভাবনাগুলো এলোমেলো
কথার নদী হারায় যদি অন্তরে
পুলক বাবু প্রেম শেখাবে মন্ত্র- রে।
তোমার যখন উদাস মাটির ভাবনা জমে
নক্ষত্রের রাত নামে গো দূর গহনে
ছুঁড়েই ফেল মনের যত দ্বিধাদ্বন্দ
এই বাংলার রূপ দেখাবে জীবনানন্দ।
তোমার যখন ঘর কুড়নো রাগ ঘিরেছে
ভালবাসার বিষয় মাঝে ঝুল জমেছে
তাকিয়ে দেখ- আকাশ বাতাস নদী পাহাড়
-পেড়িয়ে একটা দেশ এঁকেছে গুলজার।
তোমার যখন স্মৃতির পাতায় নীরবতা
ছবির মত পড়ছে মনে অনেক কথা
বলি শোনো- মিছেই কর দুঃখ খালি
“চুপকে চুপকে”-গান শোনাবে গুলাম আলি।
তোমার যখন বিরহ মূখর মন উদাসী
করুণ সুরে ঝরায় ব্যাথা বনের বাঁশি
তোমার জন্যই বিরহ মাঝে ফোটাতে ফুল
নার্গিস বনে দাঁড়িয়ে আছেন নজরুল।
তোমার যখন উন্মাদনার সাধ জেগেছে
মনের ভেতর অজানা এক রং লেগেছে
রঙ বাহারী অচেনা ঐ মনের ভিতর
চেনা সুরে তার ছুঁয়েছে রবি শংকর।
তোমার যখন রাত কাটেনা উত্তেজনায়
না বলা সব কথার ভিড়ে ভোর হয়ে যায়
যদি শূণ্য খাঁচায় গুমরে মরে তোমার হিয়া
কোমল রাগে ভরবে হৃদয়- চৌরাসিয়া।
তোমার যখন বাউল বাউল উদাস লাগে
মন চলে যায় সব ছাড়িয়ে সুখ-বিবাগে
গোপন ব্যথায় ঢাকবে যখন কাজল আখি
মনের মানুষ খুঁজে দেবে লালন ফকির।
তোমার যখন একলা থাকা বিষাদ হবে
একলা তুমি কাঁদবে বসে খুব নীরবে
স্বপ্ন ধূসর জীবন আর- রঙ তুলি পেন
তোমার জন্য আঁকবে আকাশ ফিদা হোসেন।
তোমার যখন বাসর ঘরে জ্বলবে আলো
ফুলের গন্ধে নেশায় দু’-চোখ ঢলোঢলো
কঠিন সুখে গলবে যখন নরম শিলা
নহবৎ- এ থাকবে জেগে বিসমিল্লা।
তোমার যখন মিছিল গড়া দিনে রাতে
আগুন জ্বলা শিশুর হাসি লবন ভাতে
হাতের ওপর নিশান যখন ক্লান্ত হবে
জানি তখন আমার কথাই মনে রবে।