“শুধু এক মুঠো ভাত চাই”
-রাজীব লোচন বালা
জানো কি প্রিয় ? আমরা জানি না গো !!!
হীন দরিদ্রের আবার- প্রিয় থাকে নাকি ?
এতো শুধু মাত্র কষ্ট কল্পনা ছাড়া আর বৈকি,
মাথার ওপর যার আকাশ হল ছাদ, অন্ধকার যাদের চার দেওয়াল
আমাদের তো ‘প্রিয়’ থাকতে নেই, ইচ্ছা বিবর্জিত হওয়া চাই।
জানো বিধাতা ! এখন মনে হয় ‘আমরা’ তোমার অমৃত সন্তান নই,
আমরা বস্তু জগতের দু-পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ, মূল- চালিকা শক্তি।
রাস্তার ধারে ধারে কত রঙ্গে-ভঙ্গে “মানুষে”র আনাগোনা,
আসেনি কেহই অনুকম্পার সহিত হাত বাড়িয়ে, শুধু শুনি ভাষণ।
বাবা বলেছিল, খোকারে আমরা যাযাবর আমাদের কোনো ইচ্ছা রাখতে নেই,
ছোটো মেয়ে, যখন দেখে মা-বাবা পরিবার কত আদর কত রঙ্গ বাহার_
তখন জানো বড্ড ইচ্ছে জাগে, হৃদয় আছে তো মোদের,
আমরাও ভাবতে বসি শেষ বিকালে ভোরের আলোর আশায় চেয়ে।
যখন যাই পথে, রকমারি ভাতের মিষ্টি গন্ধ নিংড়িয়ে নেয় ক্ষুধা
ড্রেনের আনাচে-কানাচে বেসামাল কত-শত প্রিয়! পড়ে থাকে।
ঝাঁপিয়ে পড়ি তার ওপর, উদাত্ত কন্ঠে আজ একবিংশ- শতকেও,
চিৎকার করি, খাদ্য চাই! খাদ্য চাই!! খাদ্য চাই!!! শুধু এক মুঠো ভাত চাই।
গলা- বুক- হৃদয় জ্বালা করে, উন্নয়ণ রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে,
না না না সইতে হবে তো তোরে, তুই তো প্রান্তিক ভিখারী__
যা দিবে নেব! যা খাওয়াবে খাব! মরবো কিন্তু কেন জানবো না,
প্রশ্ন করলে রাত-বিকালে আমায় পাবে ওই সুদূরে রেল- রাস্তার ওপরে।
তাই প্রিয়তে কবে চলে গেছে রে, মন্ডা-মিঠাই, চপ-কাকলেট
সুস্বাদু ভোজন সইবে না আর পেটে, তাই একটু ফ্যানওয়াল ভাত দিও,
জীবন কবিতায় ছন্দ আসে না, মাথা- মুন্ডু স্থির থাকে না__
মধ্য গহ্বর উত্তপ্ত হলে, চিৎকার ধ্বনি শাণিত তরবারি হয়ে,
ফিরে আসে আকাশ-পাতাল থেকে, লাগে আবার শূন্য বুকে।