টালখাওয়া বর্তমান
-চিন্ময় মহান্তী
অনুরাধা ভালো আছো ?
শরতের শিশির গায়ে মেখে যে শিউলি কুঁড়িটা ফুটে উঠেছিল-
আজ অস্তিত্বের প্রলেপটুকুও নেই তার দেহে ,
আসলে দেহটাই তো তার বিলীন হয়ে গেছে !
গাছটা আছে- ফিবছর শিউলিও ফোটে, কিন্তু
সেই শিউলিটা আজো আর ফোটেনি,
অদ্বিতীয় কিম্বা অদ্বিতীয়া।
প্রভাত রবির রক্তিম ঔজ্জ্ব্যল্ল্যে যে অলি চেয়েছিল
সে মধুপ আজো অন্বেষণ করে, আপন ভ্রমে।
হতাশার ঘোলাজলে অহরহ খাবি খায় চুনোমাছ
তারপর একসময় স্তব্ধ হয়ে যায় সমস্ত লম্ফঝম্ফ,
রাতের চাঁদ নিয়ত ভাসে ঘোলাজলের প্রতিটি ঢেউয়ে
স্বচ্ছতার অভাবে সে অদৃশ্য থেকে যায় রেটিনায় ।
ভালো থাকার জল ধরানো হয় মনের শরীর জুড়ে
বসন্ত বয়ে যায় কোকিলের কুহু তরঙ্গে,
গাতিমান মাঝে পাষাণ চেয়ে রয় ভ্যালভ্যালে চোখে।
আশার কিনারে টলমলে বৈঠার কাছিতে টান লাগে
বান ডাকে আঁখি নদী- অনুরাধাকে ভাবনার জল স্রোতে,
একসময় জল শুকিয়ে গাঙ হয় শুখা !
তখনও বালুর বুকে চিকচিক করে জ্যোৎস্নার পরশ।
শিমুল তুলোর বাতাসে ভেসে বেড়ানোর মতোই
মুখচ্ছবিটা ভাসতে থাকে মন জানালার নিঝুমতা ছুঁয়ে ,
অনুরাধা হয়তো তখন সোনার কাঠির পরশে
ঘুম স্বপ্নে আকাশ মেঘে ডানা মেলে দেয় ভবিষ্যতের পথে।
একটা বর্তমান দিনগোনে অনাগত ভবিষ্যতের আশায়
ধ্রুব সত্যও মানতে গিয়ে হোঁচট খায় টালখাওয়া বর্তমান,
অনুরাধা আর আসবে না- এ যেন মেনে নিতে পারে না
নবীনার ডাকে ঘুম চোখে চেয়ে বর্তমান বিড়বিড় করে-
সময় কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যায় বর্তমান তা জানে না ।