যে যায় লঙ্কায়,সেই হয় রাবণ
-রেহানা দেবনাথ
রাজশ্রী কালো কাঁচ লাগানো গাড়ীতে সাইরেন বাজিয়ে ছুটে চলেছে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।তার গাড়ীর আগে পিছে পুলিশ সুরক্ষা বাহিনীর খান আটেক গাড়ী চলেছে।তার যাবার পথটি ফাঁকা !সে যে দেশের মন্ত্রী হয়েছে তাই সমস্ত দেশ ঘুরে জনগনের সুবিধা অসুবিধার কথা তাকে জানতে হবে, তাদের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিতে হবে! শিল্পপতি ও বিত্তবানদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তাদের মন রাখতে।
রাজশ্রীর মনে পড়ে গেল যখন সে একজন সাধারণ মানুষ ছিল তখন ট্র্যাফিক জ্যাম করে কোনো মন্ত্রী গেলে তার উদ্দেশ্যে কত কটু কথা বলেছে নিজের অসুবিধার জন্য!পথ চলতি মানুষজনের, গাড়ি চালকের গালাগালি,উপদেশ নানা কথাও তার কানে ভেসে আসত।
আজও নিশ্চয় অনেক রাজশ্রী তার মতো ওই ভীড় থেকে একই কাজ করছে…কথাটা ভাবতেই রাজশ্রীর বিবেক তাকে অপরাধী ভাবতে শুরু করে।মন্ত্রী হবার পরই সে চেষ্টা করেছিল সাধারণ মানুষের মত যাতায়াত করার কিন্তু বাধ সাধে অন্য মন্ত্রীরা।তারা এই সুযোগ সুবিধা ত্যাগ করতে পারবে না।
রাজশ্রী যে পলিটিশিয়ান তাই সে নিজেকে ওদের ছাঁচে গড়ে নেয়!না হলে মন্ত্রী থেকে সাধারণ নেত্রী তে ফিরে আসতে তার বেশী সময় লাগবে না!!তাতে না নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করতে পারবে না দশের!
হঠাৎ গাড়ি ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে গেল রাজশ্রী দেখতে পায় কিছু লোকজনকে পুলিশ লাঠিচার্জ করছে।কিছুক্ষণ পর সিকুরিটি অফিসার এসে জানায় পথ অবরোধের জন্য বিরোধীদলের চক্রান্তে লোকজন ঝামেলা করছে।আপনার নিরাপত্তার কারণে অন্য পথ দিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
চলন্ত গাড়ী থেকে রাজশ্রী দেখতে পেলো রাস্তায় ফেলে পুলিশ মারছে তাতে অনেকে চোট পাচ্ছে।রাজনৈতিক স্বার্থে এই ছোটো ছোটো সমস্যাগুলোকে দেখেও না দেখার ভান করার শিক্ষা দিয়েছে তার রাজনৈতিক গুরু, দলীয় সাথীরা ও নোংরা রাজনীতি তাই নিজের বিবেকের টুঁটি চেপে ধরে নিজের লক্ষ্যের পথে চলে যায় রাজশ্রী।