কবিতা

পৃথিবীর কষ্ট

পৃথিবীর কষ্ট
-তোফায়েল আহমেদ

 

পৃথিবী বিশাল জলরাশির উপর দাঁড়িয়ে আছে
পাহাড় পর্বতের পায়ায়,
আঠারো হাজার সৃষ্টির লালন পালনে উপকার
করছে, পরম মমতা ধারায়।

 

মায়ের সম পৃথিবী, সৃষ্টির সকল সন্তানের আপন
মাটির কোমল শরীর নিয়ে,
বিলিয়ে যায় দেহ- প্রাণ, বিনিময় কিছু নাহি চায়,
উজার করা অবারিত ভালোবাসা দিয়ে।

 

তার দেহ কেটে ফসল ফলাই,ফসলে জীবন বাঁচে
বুকে রয়েছে স্নিগ্ধ সমারোহ সবুজের,
পৃথিবীর শরীর টুকরো টুকরো করে তপ্ত আগুনে
পুড়ে ইট তৈরী করে ইমারত হয় আবাসের।

 

তার বুকে ঘর বানিয়ে যাপন নিত্য নৃত্য করি উল্লাস
পরের উপর বাহাদুরি ক্রয় বিক্রয়,
অথচ তার উপর বোমা মেরে রক্তাক্ত করি হিংসাকে
উড়াই,দম্ভের রাজত্ব করি,কিন্তু নাহি সদয়।

 

সন্ধ্যা হলে তার বুকে ঘুমিয়ে দিবা ক্লান্তি দূর করি
প্রভাত হলে জাগি,চরণ দেমাগ দলিতে ঘুরাই,
পৃথিবীর কোলে জন্ম নিয়ে তাকেই করি অত্যাচার!
অবসানে অগনিত সৃষ্টি তারই অতলে পায় ঠাঁই।

 

প্রকৃতি থেকে বনজ ফলজ ভেষজ বিশুদ্ধ নিঃশ্বাস
ছায়া,ফুল জীবন ধারণে পাই,
সাজানো প্রকৃতিকে নষ্ট করি,সংরক্ষণ যত্ন নাহি করি,
নিরব রক্তক্ষরণে তাকে কাঁদিয়ে যাই।

 

পৃথিবীর মন প্রাণ আছে,ব্যথায় সে কষ্ট পায়,

চিৎকারে কখনো ঝড় তুফানে বিদ্রোহী হয় স্বজনায়,
বৃষ্টির সাথে কান্না করে বন্যায় ভাসায়,

মায়ের লালন কোমলতায় ফিরে যায় সন্তানের মায়ায়।

 

অচিনে চেনেনা তাকে,নির্বোধের চেতন বোধ পলাতক,

জীবনের দম্ভ মোহ লোভ স্বার্থের অহমিকায়,
পৃথিবী সৃষ্টির আপন মম,পরম আত্মীয়,উপকারী বন্ধু,
তাকে কষ্ট না দিয়ে সোহাগে যত্ন করি কৃতজ্ঞ মহিমায়।

 

সৃষ্টির সেরা মানুষ জাতি,বিধাতার শ্রেষ্ট উপহার,

বিবেক জ্ঞান ইচ্ছায় স্বাধীন জীবন যাপন করে হচ্ছি পথ ভ্রষ্ট,
পৃথিবীর বয়স অজানা,বৃদ্ধ হলেও দৃষ্টিতে তরুণ,

মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণী তার ক্ষতি করেনা,ইহা পৃথিবীর কষ্ট।

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page