হৃদয়ের চিঠি
-সুমিতা পয়ড়্যা
হে প্রিয়তম আমার,
তোমার শেষ চিঠিটা আজ আর নেই।
কি লিখেছিলেন !
তাও আজ স্মৃতির অতল গভীরে,
দিশেহারা আকুল হৃদয়—-
ভাবানুবেগকে স্থান দেয় না।
আমি বাঁচব হে ঐশ্বর্য বান
তোমার জন্য বাঁচব!
এক পৃথিবী সম আমার ভালোবাসা
তোমার জন্যই রাখব।
তোমার মলিন স্মৃতির অন্তরালে
আমি শুধু ভালোবাসাই খুঁজব।
শুধু তুমি জেনো:
বৃথা হবে না আমার ভালোবাসা।
হে আমার প্রিয়তম,
তোমার স্পর্শ আমাকে আগুনে নিমজ্জিত করে,
আমি ও ছুঁয়েছি বহুবার ভালোবাসার পরশে।
চড়াই-উৎরাই,উত্থান-পতনে আন্দোলন,
ফুলের দোলায় আন্দোলন,
বালুকাচরে ঝড়ের আন্দোলন-
তা ভোলবার নয়,ভুলি নি ।
আমি তোমাকেই চাই:
আমার প্রিয়তম,হে বন্ধু আমার
আমি চেয়ে আছি,তাকিয়ে আছি—-
তোমার গানের কলি
আমার বুকের দুরন্ত কলরব;
তোমার ওষ্ঠাধর কম্পিত হলে
আমার কম্পন উচ্চারিত হয় বজ্রকণ্ঠে !
অনেক বেঁচে থাকার আশা।
প্রিয়তম,
কেমন আছ তুমি?
একরাশ উষ্ণতায়—-
যৌবনের দুত্যি কি এখনও আছে !
জানতে চাই,জানতে ইচ্ছে করে !
তোমার সুন্দর গভীরতা সুখে কেমন আছ তুমি?
প্রিয়তম আমার,
সব দমন করে রেখেছি এতদিন;
তোমার সর্বস্বতায় চুম্বকের আকর্ষণ
আর কোথাও তেমনটি নেই বলেই জানি।
কিভাবে তোমাকে ভালোবেসে ফেললাম,
যন্ত্রণার নীরব অপেক্ষায় শুধু বেঁচে থাকা
ভালোবাসায় এত যে কষ্ট–তা জানব কেমনে !
নিয়ম করে ভেবেচিন্তে তো ভালোবাসি নি।
অস্ফুট কথাতে ডানা ঝাপটায় হৃদয় মাঝে।
সুন্দরের পূজারী,
রূপের রাজা তুমি,গুণেরও বটে,
স্বপ্ন হাতে চলেছিলাম পাহাড় চূড়ায়;
এতটাই দূরত্ব যে পৌঁছাতেই পারলাম না।
কত সহজে বিবেকহীন হয়ে সুখী হতেও চেয়েছিলাম।
হোলাম কোথায় !হয় বা কেমনে!
অভিশাপের দিগন্তঘেরা,
চিঠির দুবোর্ধ্য ভাষা না বুঝতে পারাটা ক্ষমা করে দিও।
ঘুমের মধ্যেই তুমি তুমি করে হঠাৎ জেগে ওঠা !
তোমাকে লিখব বলেই লিখলাম—
তোমার পুরানো সেই দিনের কথাগুলো আজ আর স্মৃতির অধরে অধরা।
তবু তোমার দিকে তাকিয়ে,
জেগে উঠেছি এক পৃথিবী ভালোবাসায়;
এক অনন্য সুন্দর আশায়—–
নোনা জলের ঝাপসায় আর কষ্ট হয় না।
দুঃখ-সুখের জীবন মাঝে কষ্টের সুখ খুঁজে পাই।
সব প্রাপ্তি মানুষের জীবনে থাকে না,
তাই হয়ত,ভালোবেসেও সব হারালাম !
তুমিই বল;ভালোবাসার মূল্য বোঝে কজন !
এই বোধ জন্ম নেয় কত হৃদয়ের মাঝে ?
ভালোবাসার নীড়ে স্বপ্নের ভালোবাসা আসে;
মাঝে মাঝে তোমার আগল দেওয়া বাহুপাশে,
অনেক কষ্ট,বিবেকের নীল স্বপ্ন শূণ্যে ভাসে।
বিবেকটাকে অবশ করে ছুটে চলি তোমার কাছে।
শোনো না,
লিখব না লিখব না করে কত কী যে লিখলাম!
সবচেয়ে সুন্দর পৃথিবীর মাঝে
আকর্ষণ-বিকর্ষণ যাই থাক
ভালোবাসার সুখ যে কতখানি তুমি এতটা নাও বুঝতে পার !
ভালোবাসা দিয়েছি অনেক খানি—-
শত কষ্টেও কত না সুখ !
একচিলতে স্বপ্নগুলো হয়ত পূর্ণ হল না,হবেও না !
তাতে কি !নদীর স্রোতের মত বইতে তো পারি,পারি তো !
হে প্রিয়তম আমার,
বিবেকের দংশনে বাঁচো তুমি,
পৃথিবীর কাছে ঋণী—
না এলেই ভাল হত মানুষে উপনীত;
তবু তোমার কাছেই আমার হৃদয়।
শাশ্বত কষ্টের পারাবারে এসো না,ভুলেই থাক;
সুখের মাঝে সুখই দেখ,সুখে থাক।
ইতি— তোমার সেই প্রথম দেখার ক্ষণিক হৃদয়।