Site icon আলাপী মন

অলীক স্বপ্ন

অলীক স্বপ্ন 
-রাখী চক্রবর্তী

 

তৃষা–অনীক–মিলি  চরিত্র (তিন)

তৃষা— শুধু কি স্বপ্নেই তোমার আনাগোনা
বাস্তব এ বুঝি তুমি শুধুই কল্পনা

অনীক— বান্দা হাজির

তৃষা— আ..আ..রে তুমি, না না আপনি

অনীক— তুমিটাই ঠিক ছিল। আবার আপনি কেন? তা এই ভর দুপুরে, দীঘির পাড়ে, যদি ভুতে ধরে? ভুতে ভয় পাও না। হা হা হা

তৃষা—আমি বাচ্চা মেয়ে না কি যে ভুতে ভয় পাব।আর দিনের বেলায় ভুত কোথা থেকে আসবে ।

অনীক–তা না,,কিন্তু একা একা এখানে থাকাটা ঠিক না। তা বসে বসে বুঝি আমার কথা ভাবছিলে? হুম,, প্রেমে পড়তেই পারো আমার। গায়ের রঙটা যা একটু কালো। এমনিতে তো সুন্দর। আর ওই মাথার চুলগুলো না হয় কম। দু’দিন পর টাক পড়ে যাবে। তাতে কি, তোমার আর আমার মধ্যে চুলোচুলিটা হবে না। হা হা হা

তৃষা— খুব মজার মানুষ তো তুমি। তোমার কোন দুঃখ নেই তাই না।

অনীক— আমার জীবনে কে থাকবে না থাকবে সেটা আমি ঠিক করব। তাই দুঃখ আউট।

তৃষা— জানো ফেসবুকে তোমার ছবিটা জীবন্ত ছিল। আমি কথা বলতাম তোমার ছবির সাথে।মনে হত তুমি আমার জন্যই ফেসবুকে ছবিটা দিয়েছো

অনীক— ওহ তাই বলো।আমি ভাবলাম তুমি বলবে যে “আমার জন্যই তুমি জন্মেছো, আমাকে ছাড়া তুমি বাঁচবে না”

তৃষা— দূর, সবেতেই তোমার ইয়ার্কি

অনীক— ঐ, ঐ দ্যাখো দু’টো কবুতর কি সুন্দর গম খাচ্ছে। দ্যাখো, দ্যাখো

তৃষা— গম কেন? ধান ও তো হতে পারে।
অনীক— তুমি বললে না তো আমাকে ভালবাসো কি না?

তৃষা— বাসি তো

অনীক— না,না তুমি আমার কাছে আসার চেষ্টা করো না। আমি তোমার যোগ্য না। আমি নিজেকে ঠকাতে পারব কিন্তু তোমাকে না। তুমি খুব ভালো মেয়ে তৃষা। সন্ধ্যা নেমে এল। ঘরে যাও। দেখো পাখীরা নিজেদের ঘরে ফিরছে। আপনজনদের কাছে। তুমি ও যাও

তৃষা— না অনীক একবার বলো তুমি আমাকে ভালবাসো।

অনীক— আমি কাউকে ভালবাসতে পারি না।আমি কে তুমি তা জানো না। জানলে তুমি আমাকে ঘেন্না করবে।

তৃষা— তুমি খুব ভালো। তুমি ভদ্র সমাজে বাস করো। ভালো চাকরি করো। মানুষ হিসাবে তুমি ভালো। আর কিছু চাই না তো আমি।

অনীক— সব ফেক। সব ভুয়ো। ফেসবুকে সবসময় সত্য কথা চলে না তৃষা। আমি খুনি ।জেল থেকে জামিন পেলাম আজি। তাই তো…

তৃষার বন্ধু মিলি—

-এই তৃষা, কি একা একা বকবক করছিস। চল, বাড়ি চল। আমরা সবাই পুরো বাগানটা ভালো করে ঘুরলাম। আর তুই দীঘির জল দেখছিস। পারিস ও বটে। চল ওঠ

তৃষা—এই, অ…নীক কোথায় গেল? এইখানেই তো ছিল।
মিলি— এখানে কেউ নেই। তুই একাই বকবক করছিলিস। হয়তো অলীক স্বপ্ন দেখছিলিস তুই।নে ওঠ..বাড়ি যেতে হবে তো
তৃষা— মিলি দ্যাখ, ঐ যে পুলিশের ভ্যানটা যাচ্ছে,ওতে কি সবাই আসামি-খুনি,ডাকাত-চোর!

মিলি— তোর তাতে কি? তুই গাড়িতে ওঠ।

তৃষা গাড়িতে বসে জানলা দিয়ে দেখছে, একটা পুলিশের ভ্যানে অনীক বসে। ভ্যানটা একটু আস্তেই চলছে। অনীক…অনীক..
মিলি ঐ দ্যাখ অনীককে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। ‘অনীক’ ‘অনীক’ পুলিশ ভ্যান আস্তে আস্তে তার গতি বাড়ালো তৃষা জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে রাখল ধীরে ধীরে ভ্যানটা রাতের অন্ধকারে মিলিয়ে গেল।
অনীক আমি অপেক্ষা করব তোমার জন্য। তোমাকে ফিরতেই হবে। আমি যে তোমাকে বড্ড বেশি ভালবাসি,বড্ড বেশি।

Exit mobile version