ধর্মের বিড়ম্বনা
–রীণা চ্যাটার্জী
ক্ষণিকের যাত্রা পথে দেখলাম ধর্মের গুঁতো। কোথায় ধর্ম? খুঁজে পেলাম না, দেখলাম ধর্মের নামে হুড়োহুড়ি। কারো ব্যক্তিগত জীবনের আপৎকালীন সুবিধা পেতে অসুবিধা হলো, কোনো শিশু অনভ্যস্ত পরিবেশে অসহায় কান্নায় মুখর হলো- তবে এটা বলা উচিত নয়,কারণ- এগুলি তো কোনো অসুবিধাই নয়, ধর্মের নামে নাকি সব সইতে হয়। যতোই হোক কুম্ভ মেলা! শাহী স্নান! পুণ্যলোভী তীর্থযাত্রী বলে কথা! মানিয়ে নেওয়া আমাদের ধর্ম, আবশ্যকীয় কর্ম।
কিন্তু প্রতিবাদী মনের প্রশ্ন থেকেই যায়- একটি দ্রুতগামী দুরপাল্লার ট্রেনের দ্বিতীয় শ্রেণীর সংরক্ষিত কামরায় এই অযাচিত ভিড়ের দায়ভার সহ্য করার কতোটুকু দায়িত্ব ওই কামরার যাত্রীদের ছিল? রেল কর্তৃপক্ষ কিসের ভিত্তিতে তা ‘সংরক্ষিত’ বলে দাবী করে মূল্য ধার্য করলো? মূল্য নির্ধারিত করার পর সংরক্ষিত রাখার দায় কি তাদের নেই? এই পরিস্থিতি তো ‘জরুরী অবস্থা’ নয় সংবিধান মতে, তবে কেন কিনে নেওয়া এই স্বাধীনতার অধিকারটুকু অসম্মতিতে হস্তান্তরিত হলো? সংরক্ষণের মূল্য দেবার পর এ কেমন সংরক্ষণ– যেখানে কিছু অসৎ রেল পুলিশ কর্মীর বাঁ হাতের কারসাজি দিয়ে নিজের নিজের অর্থভাগ্য স্ফীত করে তোলেন অন্যের অসুবিধার বিনিময়ে? প্রশ্ন থেকেই যায় ওনারা কি জানতেন, ওই তীর্থযাত্রীদের মাঝে মিশে নেই ‘অন্য পথযাত্রী’ (সন্ত্রাসে দীক্ষিত যারা)! তাহলে নিরাপত্তা কিসের ভিত্তিতে? জানি এই প্রশ্নের মীমাংসা নেই, হবেও না। চলবে.. চলতে থাকবে। আমরা শুধু সাক্ষী থেকে যাবো সময়ের, পরিস্থিতির। আরো অবাক হয়ে যাই দলে দলে চলেছে পুণ্যের আশায়- অবগুণ্ঠনবতী, অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। গঙ্গা স্নানে পাপ স্খলন হবে– হোক গঙ্গা দূষিত, পরিবেশ দূষিত। ধর্মপ্রাণারা বলবেন সগৌরবে “একদিনে কিছু হয় না।” সেই বিখ্যাত গানের কলি আজ বড়ো উপযুক্ত “নৈতিকতার স্খলন দেখেও–মানবতার পতন দেখেও- নির্লজ্জ অলসভাবে বইছো কেন?… নিঃশব্দে নীরবে- ওগঙ্গা তুমি- ও গঙ্গা বইছো কেন” এই আর্তিটুকুই আজ আমাদের সহায়।
মন ছোঁয়া কিছু কলম, “নদী তুমি কার”, “ফিরে আসা”, “রোষের কারণ”, “আর্তনাদ”, “সৃষ্টি কল্প”, “সাঁকো”, “চেনা”, “অনুরণন”, “প্রলয়”, “ধ্বংসের মুখোমুখি”, “একতারা”, “কবি সম্মেলন” ইত্যাদি।
শুভ আগামীর শুভেচ্ছা ও শুভকামনা সকল স্বজন সাথী, সকল পাঠকবৃন্দকে ‘আলাপী মনে’-র পক্ষ থেকে।