বুড়ো হবো যখন

বুড়ো হবো যখন

-অনোজ ব্যানার্জী

 

 

বুড়ো হবো যখন, সাদাচুল দাঁতহীন মুখে ফোকলা করুণ হাসিমেখে,
চলবো আলো আঁধারি জীবনের, পিছল পিছল অনিশ্চিত পথে।

বসে বসে করবো রোমন্থন ফেলে আসা স্নিগ্ধমধুর অতীতের কিছু ঘটনা,

কিছু স্বপ্নের ইতিহাস। বলবো কিছু গল্প, কিছু কিছু জীবন্ত বাস্তব ঘটনা,

কিছু রটনার খিড়কী- দরজার কাহিনী, হয়তো কোন চায়ের আড্ডাতে।

কিংবা কোন গেঁয়ো মজলিসে।
বুড়ো হবো যখন, আঁখির দৃষ্টির তেজ আসবে কুয়াশামাখা ঝাপসা হয়ে হয়ে। ছানিধরা চোখে চশমার ফাঁকে ফাঁকে দেখবো চেয়ে চেয়ে অপরের যৌবন,

সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধির ঝলমলে রূপ-রঙ,

যেমন করে দেখে ছোট্ট চড়ুই সুদৃশ্য নৃত্যরত ময়ূর।

যেমন করে মরুবালিকণা দেখে বিস্মিত চোখমেলে, সুন্দর সবুজ কোন ঝাউবন।
তখন.. জরাগ্রস্তবাসী অকেজো, অক্ষম, দুর্বল,

শরীরটা টেনে টেনে চলতে হবে খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে।
স্নেহের ধন ছেলেরা করবে চাকরী-বাকরী, করবে কোটিকোটি টাকা রোজগার।

অথচ হয়তো তখন ডাক দেবে বৃদ্ধাশ্রমের সেই অনিবার্য আড্ডাটা।

হয়তো হবে থাকতে চোখকান বুঁজে ভুলেভুলে নাতি নাতনীর ঈপ্সিত প্রিয় সঙ্গলাভ।
কিংবা হয়তো বা ছেলেরা থাকবে বাইরে বাইরে বৌ,ব্যাটা নিয়ে, পেতে কোন পৃথক সংসার।
বুড়োবুড়ীকে হবে থাকতে একা একা খেতে হবে,আপন আপন হাত পুড়িয়ে পুড়িয়ে।
বুড়ো হবো যখন, দেবে হাতছানি জীবনের ছুটি।

যাবে ভেঙে সব সুখ-শান্তির খুঁটি।

Loading

Leave A Comment