একুশে এক লজ্জার দিন…
-কৃষ্ণ বর্মন
একুশে গর্বের নয়
একুশে এক লজ্জার দিন।
আমার ভীষন লজ্জা হয়
সারা বছর যারা প্রতিদিন উন্মুক্ত করে ভাষার আব্রু
তাঁদের গায়ে মিথ্যে ভাষা প্রেমের পোষাক দেখে।
একুশের একুশ হওয়াতে যাদের কোনো অবদান নেই
এমনকি একুশের উত্তরসূরীর পরিচয় যারা
ভুলে থাকে সজ্ঞানে সচেতনভাবে
তাঁরা যখন অমর একুশকে আমার একুশ বলে দাবী করে
আমি তখন লজ্জিত হই।
আমি লজ্জায় লাল হয়ে যাই
প্রভাতফেরীর সাথে হাঁটতে হাঁটতে আমার ছোটো বেলার
বাংলা মাধ্যমের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দরজা
চিরকালের মত বন্ধ দেখে।
আমার বাংলার বুকেও রেলের কামরায়
হিন্দী আর ইংরেজীতে ঘোষনা শুনতে শুনতে যেতে
আমার লজ্জার পরিমান আরও বেড়ে যায়।
প্রতিদিন যখন আমার ছেলেই সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফেরার পর
“গুড ইভিনিং ড্যাডি” বলে স্বাগত জানায়
তখন আমার লজ্জাকে লুকানোর কোনো জায়গা খুঁজে পাই না।
এই আমিকেই আবার একুশের সকালে
পাড়ার মোড়ে কিংবা বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে
একুশের কথা বলতে হলে
আমি ভিতরে ভিতরে লজ্জায় শেষ হয়ে যাই
অথচ মুখ ফুটে প্রকাশ করিনা না
কারণ আমি নিজে যা বলি
অনেক সময় আমি নিজেই তা বিশ্বাস করিনা।
একুশে আমার কাছে তাই গর্বের নয়
একুশে এক লজ্জার দিন।