কবিতা

বৃদ্ধাবাসের বাতায়নে মা

বৃদ্ধাবাসের বাতায়নে মা
-শচীদুলাল পাল

 

 

আমি এক মা ঠাঁই বৃদ্ধাবাসই 
জানালায় দেখি শুধু নীলাকাশ।
দিন ফুরায় রাত্রি নামে সকাল হয়।
থাকতেও না থাকার মর্মবেদনা কারে কয়।
মুছে গেছে অক্ষম বৃদ্ধার নয়ন জল।
এখন আমি এক পাথর নিশ্চল।
জানালার রড একমুঠো আকাশ।
অতীতের স্মৃতিচারণ হা হুতাশ।
বনেদী বাড়ীর রূপসী কন্যা ছিলাম সর্বগুণাধার।
শিক্ষিত স্বামী শশুর শাশুড়ি সচ্ছল পরিবার।
জননী আমি এক পুত্র এক কন্যা।
সবাই বলেছিল ভাগ্যেও অনন্যা।
আদরে সোহাগে পুত্র কন্যা যতন।।
অসুখে বিসুখে রাত্রি জাগরণ।
প্রানাপেক্ষা প্রিয় ছিল পুত্র কন্যা।
এক পলও চলত না মা বিনা।
প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে মাকে ডাকা।
স্কুলে হাসপাতালে সর্বদা মায়ের পাশে থাকা।
সব সুযোগ দিয়ে করেছি উচ্চশিক্ষিত।
বাবা মায়ের অবদানে আজ উচ্চপদস্থ।
আকস্মিক হার্ট এটাকে প্রয়াত স্বামী।
একলা সংসার সামলেছি আমি।
কন্যা জামাই নাতনি আমেরিকায়।
বছর দশেক অপেক্ষায় আসার আশায়।
হঠাৎ একদিন খেয়ালে ছেলে বেচল বাড়ি গাছ গাছালি।
স্ত্রৈণ ছেলের কথায় স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি হলো খালি
সুন্দরী বিলাসী বউ বিশাল ফ্লাট
আছে এক নাতি।
সেখানে মায়ের নেই স্থান একরত্তি।
তাই ছেলে বউ-এর আদেশে আবাস বৃদ্ধাবাস।
আজ একাকীত্বের সাথী শুধু আকাশ।

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page