লড়াই
-অমরেশ কুমার
লড়াই, লড়াই, লড়াই; এ কেবল ক্ষমতার লড়াই
মানুষ কাটিয়া, মানুষ মারিয়া করিছে এরা বড়াই।।
আবার উঠিয়াছে ডাক, করিতে হইবে লড়াই;
দেখো এইবার, কত মানুষ প্রাণ হারায়।
সন্তান কাড়িয়া, ফেলিয়া দিবে ছুড়িয়া
পারিবেনা মা, আনিতে কুড়িয়া ।
কত ঘর বাড়ি দাউদাউ করিয়া পুড়িবে
দেখিতে হইবে দূরে নির্বাক হয়ে দাঁড়াইয়ে
আত্মীয় স্বজনেরা যাইবে ঝলসে জ্বলিয়া
মৃতদেহ পড়িয়া রহিবে পচিয়া গলিয়া।।
কতদিন? আর কতদিন?
এ মৃত্যুর লড়াই চলিবে সংসারে
মৃত্যুভয় তাড়াইয়া বেড়াইবে মানুষকে বারেবারে।
যাদের জন্য লড়াইয়ে পড়িছ তুমি মারা
অসহায়ে পাইবে না তুমি ডাকিয়া তাদের সাড়া;
তবু! কেন এ বৃথা মিছা লড়াই চালায়ে
নিজ ঘরে মৃত্যুকে ডাকিতেছ পূজার ডালা সাজায়ে,
ভুলিওনা, কত পূর্বপুরুষেরা দিয়াছে রক্ত —
বুক চিড়িয়া
কিন্তু, এরা দিতেছে কি সে মূল্য? রাখিছে কি মনে ?
দস্যু এরা, দানব এরা, অসৎ-এর এরা ভক্ত —
নিয়াছে রক্ত ঢোক গিলিয়া।
নিজ স্বার্থে, ক্ষমতার অপব্যবহারে
এরা নিজের সন্তানকে মারে;
তুমি ক্ষুদ্র, তুমি তুচ্ছ, নাহি কোনো দাম তোমা
লড়াইয়ের বশে ছাড়িবেনা, করিবেনা তোমায় ক্ষমা।
কেন? তবে কেন? তুমি করিছ এমন লড়াই?
এরা তো শুধু করিতেছে রাজ-ক্ষমতার বড়াই ।।
চাহিয়া দেখো তুমি, মারিছ যাহার বুকে গুলি
অন্ধকারে, কাটিছ যাহার গলার নলী;
যে বা পাঠাইল তোমায়, হাতে দিয়া ছুরি
কাজ শেষে, ফেলিয়া দিয়া, ছুঁড়িবে তোমায় নুড়ি ।
রাতের অন্ধকারে, নিলে যাহার নাড়ী ছিঁড়ে
জন্মকালে একই সাথে আসিয়াছিলে ভূমিষ্টতলে
মা, হাসিয়া বলিয়াছিল,
“মোর ঘরে আসিয়াছে, দু’ টুকরো হীরে”।
ভাবিলেনা তুমি, ভাবিলে যুদ্ধে জয় করিয়াছি আমি।
হইলো শেষ, তোমারি স্বার্থ-ক্ষমতার লড়াই,
হইলো শুরু, মায়ের অন্তরের লড়াই।
ওরে মূর্খ ! ওরা স্বার্থান্বেষী লোভী মানুষ
জানে শুধু লড়াই, জানেনা বাঁচাইতে মানুষ ।
মনে রেখো করিবার আগে লড়াই
এ বিশ্বের শান্তি রহিয়াছে তোমারই হাতে বজায়।
কত শিশু রহিয়াছে অনাহারে,
যুদ্ধ নিয়াছে তাদের পিতা কেড়ে
ফেলিওনা মেরে, নিও না মায়ের সুখ কেড়ে।
আপন আমি, আপন তুমি,
আপন মোর এ বিশ্ব ভূমি;
তবে কেন করিতেছ যুদ্ধ? কী হইবে মিছে এ লড়াই
যে যুদ্ধে অসহায় মানুষ প্রাণ হারায়।
পরোক্ষ ভাবে বেশ কিছু জিনিস কে তুলে ধরেছ। সুন্দর।