প্রেম ও পাইন গাছ
-অযান্ত্রিক
বসন্ত আর মাফলারের বড় মিল,যেমন প্রেম আর বিরহের,
উত্তুরে হাওয়া, শীতের পাইন গাছের সারা শরীর ছুঁয়ে,
যদিও বলে যায়,”তুমিতো প্রত্যাখ্যাত নও, তবু নির্লিপ্ত কেন?
তুমিও তো ভালোবাসো, মাটি, বাতাস আর বসন্ত”
এক ঝলক কুয়াশার হাসি, আর উত্তর আসে,
“কে বললো, তোমায় আমি নির্লিপ্ত, কে বললো আমি প্রেমিক নই,
ওই যে দূরে বসন্তের রোদ্দুরে গ্রাম, যেখানে দু’ চার ঘর সুখের বসতি,
যেখানে প্রতিদিন ক্লান্ত সূর্যেরা ফেরে, দিনের দুঃখগুলোকে ঘুম পাড়াতে,
ওই যে পাহাড়ের গায়ে,শীতের দিকে মুখ করা গীর্জা, ফুলের বাগান,
যেখানে রোজ এক প্রেমিক সময় আসে, তার প্রেমিকার সমাধিতে ফুল নিয়ে,
মাফলারে মুখ ঢেকে, শীতের নিঃস্বতা, রিক্ততা ছুঁতে পারে না তাকে।
সবাই তো নদী হতে পারেনা, বুকে পাথরের মত অতীত তাও অবিরাম ছুট,
সবাই তো ঝর্ণা হতে পারেনা, বার বার পরে যাওয়া, তবুও যৌবনা চলন।
সবাই তো মানুষ হতে পারেনা, ঠোকে গেলেই আঁধার প্রিয়তা।
অনেক মানুষ দেখছি ভিড়ের মতো, সবাই কিন্তু সেই ভাবে মানুষ নয়,
অনেকেরই শরীর হাড় রক্ত মাংসের ভিতরে একটা পাইন গাছ আছে,
ঋজু, সুঠাম, আকাশের দিকে তাকিয়ে, সয়ে যায় শীত গ্রীষ্ম বসন্ত।
তারা সাপ দেখলে দৌড়ে পালায় না, তারা সুন্দরী দেখলে হাসে না।
তাদের বুকের মধ্যে পাঁজরের খোপ, তাতে বোধ, প্রেম এর সাজানো আবাসন।
তারা বসন্ত এলে, প্রেমের নেশায় ভেসে যায়, কিন্তু ডুবে যায় না,
যেমন প্রতিবার শীতে সংসারী মন, নাক কানের দরজা আঁটে মাফলারে।
তারাও ভালোবাসে, তারাও বেঁচে থাকে প্রেমে, তারাও সাড়া দেয়,
শুধু আমার মতো ধীর, স্থিতধী, মাফলারি নিজস্বতায়, আটকে রাখে বিরহ।
আসলে প্রেম আর বিরহে বড় মিল, তাই দূর থেকে তাদেরও পাথর মনে হয়।