Site icon আলাপী মন

অশালীনতা

অশালীনতা
-রাণা চ্যাটার্জী

 

“ইস ছ্যা ছ্যা, কি লজ্জা গো দিদি, এই এত্ত বড় দাড়ি গোঁফ বেরোনো ছেলেগুলো কিনা মাধ্যমিক দিচ্ছে, তার ওপর পরীক্ষাকক্ষে গার্ড দিতে গিয়ে কি নোংরা নোংরা কমেন্ট আমাদের দেখে..ইশ কি সব ভাষা! শুনে আমার মাথা, কান গরম হয়ে যাচ্ছে কি বলবো”

– “সেকিরে টুম্পা,তোর সাথেও এমন কিছু হয়েছে!”

পাশ থেকে পলি ফুটকি কেটে পড়লো, “আর গরম! আর দু’টো দিন জয় মা বলে কাটলে বাঁচি, যেভাবে যৌনতা মিশিয়ে মন্তব্য ছুঁড়ছে, কাকে কি কথা বলছি সে হুঁশ পর্যন্ত নেই গো!”

ঈশিতা টানা গার্ড দিয়ে চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিচ্ছিল, এসে বললো, “জানো আজ কি হয়েছে, বাপরে, লজ্জায় মরি আমি! একটা ছেলে অনেকক্ষণ টুকলি করছে দেখে, খুব রাগ ধরতেই সামনে গিয়ে বললাম- কি হচ্ছে এসব? বলে কি জানো?” সকলের কৌতূহলী মুখ উপলব্ধি করে ঈশিতা বলতে লাগলো,”আমায় ড্যাব ড্যাব চোখে যেন গিলতে আসা চোখে বলে কিনা- ভাবছি সামনেরটা দেখে লিখব না পেছনটা!” ইশ কি মুখের ভাষা গো, তা বলে দিদিমনিদের সাথেও নোংরামি! নিবেদিতা গার্লসে মাধ্যমিকে আশে পাশের দু’টো মার্কামারা বয়েজ স্কুলের সিট পড়েছে, বুঝতে নিশ্চয় অসুবিধা হচ্ছে না, সেই প্রসঙ্গে এই সব কথার অবতারনা।

পল্লবী ম্যাম ও ততক্ষণে পরীক্ষা শেষ করে, আলোচনায় যোগ দিতে দৌড়ে এসে বললো, “জানো কাল করিডোরে দু’জন ছাত্র নিজের মধ্যে কি কথা বলতে বলতে যাচ্ছে,”শালা, গার্লস স্কুলে কতগুলো সেক্সি মাল রয়েছে দেখেছিস!” আর একজন প্রত্যুত্তরে কি বিশ্রী গালি দিয়ে বলে কিনা, “পাশ তো করবো না,সামনের বছর আবার আসবো এখানে দেখিস শা..!”

সকলের বড় শোভাদি কিছু বলতে যাচ্ছিল, হেড দিদিমনির দায়িত্বে থাকা অপরুপাদি বয়েস স্কুলে ফোন করে অনুরোধ করলেন কাল থেকে যেন দু’ তিন জন বয়েজ টিচার এই নিবেদিতা গার্লসে গার্ড দিতে আসে।

গতকাল পরীক্ষা নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় ভিড় বাসেও টুম্পা, পলি, ঈশিতারা খুব বাজে ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। সকলেই বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও পরীক্ষা দিতে আসা উশৃঙ্খল ছাত্রগুলো ঠেলাঠেলি আর কি সব কটূক্তি!আজকাল যা দিনকাল, প্রতিবাদ করবে কি, কখন একা পেয়ে অঘটন ঘটাবে এই আশঙ্কায় দিন কাটানো- বোবা কালার শত্রু নেই আচরণে।

Exit mobile version