Site icon আলাপী মন

চার দেয়ালের গোপন কথা

চার দেয়ালের গোপন কথা

-অমল দাস

 

কাবেরী একটু সোজাসাপটা মুখের উপরেই কাট্‌কাট্‌ কথা বলে দেয়, সামনের জন কি ভাবল তাতে তার পরোয়া নেই। সে নির্ভীক অন্যায়ের সাথে আপস করতে শেখেনি। কলেজের বখাটে ছেলেটি যখন প্রেম নিবেদন করেছিল আর প্রত্যাখ্যাত হয়ে বলেছিল ‘দেখে নেবো!’ সে তাকে এক অমৃতবানী শুনিয়ে এসেছিল- “তুই কি দেখবি! আমি তোকে দেখে নেবো! তোর বাড়িতে গিয়ে দেখে আসবো। আগে নিজেকে মানুষ তৈরি কর তারপর প্রস্তাব দে!”

এই রণং দেহি ভাব দেখে ছেলেটি আর কোন সাড়া দিতে পারেনি, চুপচাপ চলে গিয়েছিল সেদিন।

দুই বোন, বড় বোন রিমার বিয়ে হয়ে গেছে। কাবেরী ছোট থেকেই খুব চঞ্চল দুরন্ত। গাছে ওঠা, সাইকেল চালানো, খেলাধুলা এমনকি শরীর চর্চায়ও যথেষ্ট পটু। পড়াশুনাতেও সে পিছিয়ে নেই বছর দুই আগে বাংলায় মাস্টার্স পাস করেছে। চাকরীর চেষ্টা করছে চূড়ান্ত সফল হয়নি এখনো। চব্বিশ পরগনার চম্পাহাটিতে বাড়ি। বাবা মহাদেব জোয়ারদার একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, আর্থিক দিক থেকে বেশ সচ্ছল।

গত কয়েক দিন ধরে জোয়ারদার পরিবারে ছোট মেয়ের জন্য পাত্র দেখার ব্যবস্থা চলছে। মেয়ের এক প্রতিজ্ঞায় বড্ড চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল জোয়ারদার দম্পতির। কারণ বাবা মহাদেব জোয়ারদারকে পূর্বেই ফরমান জারি করে রেখেছে- “কোন পুরুষকে পণ আর উপঢৌকন দিয়ে যদি আমার বিয়ের বন্দোবস্ত করো তবে কিন্তু সে বিয়েতে আমি নেই। বরং সেই টাকা পয়সা আমায় দিয়ে দিও আমি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে নেবো। আর যাকে ভালো লাগবে তাকে বিয়ে করে ঘরে আনব।”

হ্যাঁ আনবে, পাত্র যদি বিয়ে করে মেয়ে নিয়ে যেতে পারে তবে পাত্রী কাউকে বিয়ে করলে তাকেও ঘরে নিয়ে আসবে এমনই তার চিন্তাধারা। মহাদেব দম্পতি জানে ছোট মেয়ে কাবেরী যদি জেদ ধরে তবে তার কাছে নত হওয়া ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন উপায় নেই। তাই অতি সাবধানী হয়ে পাত্র নির্বাচন করতে থাকে।

অবশেষে এক পাত্র নির্বাচন করা হল, গড়িয়াহাটে বাড়ি, সরকারী চাকুরীজীবী, নাম অনিমেষ পুরকায়স্থ, বয়স বছর বত্রিশ হবে। দেনাপাওনার কোন আব্দার নেই, মেয়ের বাবা যা ব্যবস্থা করবেন তাতেই রাজী। সেই মত মহাদেব বাবু খাট, বিছানা, আলমারি মেয়ের হাতে, কানে, গলায় স্বর্ণালঙ্কার ইত্যাদি ইত্যাদি দিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন। এতেও কন্যা বেঁকে বসেছে। বাবা কেন নিজে থেকে এত কিছু দেওয়ার কথা বলে এসেছে। পাত্র কিছুই চায়নি সেটাও সে ভালো নজরে দেখছে না। যদি বিয়ের পর অযথা দাবী দাওয়া করে বসে। যদি শ্বশুর শাশুড়ি সবাই মিলে অত্যাচার করে! তাই সে আগে থেকেই একটু সাবধানী। পরিবারের সকলে মিলে কাবেরীকে আশ্বাস দেয় তারা খোঁজ নিয়ে দেখেছে পাত্র ভালো সে যেন মিছিমিছি চিন্তা না করে। সেই মত সে বিয়েতে রাজী হয়।

বিয়ের দিন লোকজন আত্মীয় স্বজন উপস্থিত বেশ ভালোই সমস্ত কিছু চলছিল অগ্নিসাক্ষী রেখে সাতপাকের সময় কাবেরী বেঁকে বসে। তার দাবী সাত ফেরে নেওয়ার সময় পাত্র তার পিছনে ঘুরবে । বাড়ির সবাই বোঝানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি । সে ছাড়বার পাত্রী নয়, সব পাত্র পক্ষের মত হবে না কিছু তার মতও হবে । তার কথা “নিয়মটা তো ওভাবেই চলছে একটু এভাবে দেখা যাক না কেমন হয় । পাত্রের দেওয়া সিঁদুর নিয়ে যেমন আমি দায়বদ্ধ তেমনি পাত্রও আমার আঁচল ধরে ঘুরে দায়বদ্ধ হোক।”

পাত্র পক্ষের সবাই পাত্রীর আচরণে বিস্মিত। সকলের মধ্যেই একটা ছিঃ ছিঃ গুঞ্জন। বয়স-জ্যেষ্ঠ  লোকজন ধর্ম ভীরুতা দেখিয়েও লাভ হয়নি। শেষ মেশ অনিমেষের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। সে রাজী হয় সাত ফেরের সময় পিছনে পিছনে ঘুরবে। এই ঘটনা দুই পরিবারের পরিচিত আত্মীয়দের চায়ের আসরে ‘হট নিউজ’ হয়ে উঠেছিল। কেউ গেল গেল রব তুলছিল তো কেউ বাহ্‌বা দিয়েছিল কাবেরীর এই পদক্ষেপকে ।

বিয়ের এই ঘটনায় অনিমেষের একটু রাগ হয়। তবে তার থেকেও তার বন্ধুরা বেশী আহত। মেয়ের  জেদের কাছে কেন সে নত হল? ঠিক যেন মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশী। তাই সকলে মিলে অনিমেষকে ফুলশয্যার রাতে বিড়াল মারার যুক্তি দিল। অর্থাৎ এমন কিছু একটা করতে যাতে কাবেরীর মাথা একটু হলেও নত করা যায়। কিন্তু সে যে কি যন্ত্র তার কিছুই এখনও প্রকাশ ঘটেনি।

ছোট থেকে ওকে যারা চেনে তারাই জানে। ছোট বেলায় আম চুরি করার সময় বাড়ির মালিক তাড়াতে এলে ও উল্টে তাকে ইট নিয়ে তাড়া করত। ছিপ দিয়ে কারও পুকুরে মাছে ধরতে দেখে কেউ তাড়ালে পরক্ষণেই বড় জাল এনে ফেলে দিত পুকুরে । আর এই কর্মকাণ্ডের জন্য নালিশ শুনতে শুনতে বাবা মা’ও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল।

বউভাতের রাত পরিচিতরা সকলেই আসছেন আলাপ করছেন, ও দিকে খাওয়া দাওয়ারর পর্বও বেশ নিয়ম মত চলছে, কোন রকম কোন গোলযোগ নেই বিয়ের রাতের মত। তবে কেউ কেউ একটু উস্কানি মূলক কথাও বলছেন “মেয়ের বাড়ি কি কাণ্ডটাই না হয়েছিল! দেখ এখানে কত শান্ত ভাবে হোল, পরে এই মেয়ে কদ্দুর কি ঘটায় দেখো!”

মহাদেব বাবু জামাই অনিমেষের হাত ধরে বলে ওঠেন- “বাবা মেয়ে তোমার হাতে দিলাম ওকে একটু খেয়াল রেখো। ও একটু স্পষ্টবাদী কিন্তু মনের দিক থেকে বেশ নরম। একটু মানিয়ে নিয়ে চলো এইটুকু দায়িত্ব তুমি নিও”।

অনিমেষও সেই মত শ্বশুর মশাইকে আশ্বাস দেয়- “আপনাকে চিন্তা করতে হবেনা ওর কোন অসুবিধা হবে না এখানে, আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন।”

কন্যা যাত্রীরা ফিরে আসবে তাই একে একে সকলেই কাবেরীর সাথে দেখা করে শুভরাত্রি জানিয়ে আসছে। দিদি রিমা বোনকে জড়িয়ে চোখের জল আর ধরে রাখতে পারলো না-“শান্ত হয়ে চলিস সবাইকে মানিয়ে নিস…..”।

বলতে বলতেই পিছন থেকে জামাই বাবু বলে উঠেন- “এতোক্ষণ তো ভালোই কাটল! বিছানায় যেন ঝড় না…. উঠে… সাবধান…. ”।

শ্যালিকা-জামাই বাবু বলে কথা, তাই একটু মশকরা করেই নিলেন।

ফুলশয্যার ঘরটি রজনীগন্ধা, গোলাপ আরও বাহারি ফুলেফুলে সজ্জিত হয়ে সুরভিত হয়ে উঠেছে। সদ্য ঘরে কমলা আকাশী, সাদা দিয়ে করা রঙের সাথে বেশ এক অপূর্বতা ধারণ করেছে। অনিমেষের বন্ধুরা বেশ কিছু আপেল আঙুর লেবু কলা ইত্যাদি ফলও ফুলের সাথে সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছে।

রাত একটা বদ্ধ ঘরে খাটের মাঝখানে বসে কাবেরী, আর পাশে পা ঝুলিয়ে পাত্র অনিমেষ। লাজুক ভাব দু’জনার মধ্যেই প্রকট হয়ে উঠেছে গভীর ভাবে। হয়তো কে আগ কে আগে এই ভাবনায় মগ্ন হয়ে আছে দু’জনাই। অবশেষে নীরবতার দেওয়াল ভেঙে কাবেরী বলে ওঠে “আপনার আয়োজনের কোন অসুবিধা হয়নি তো সব ঠিক আছে?”

এতক্ষনে অনিমেষের ঘাটে জল এসে দাঁড়াল, যেন বদ্ধ ঘরে সবে মাত্র অক্সিজেন সরবরাহ হল। সে জড়তা কাটিয়ে বলে উঠলো -“হুম, সব ঠিক আছে তোমার বাড়ির কারও কোন অসুবিধা, কেউ কিছু বলে নি তো?”

-“না না কেউ কিছু বলেনি আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন।”

দু’জন একে অপরের দিকে হালকা চাউনি দিতে থাকে। তারপর দু’জনেই লজ্জিত হয়ে ঠোঁটে মুচকি হাসি এনে মাথা নিচু করে দিল। কেউ কোন বাক্য খুঁজে পাচ্ছেনা! সব যেন রাতের আড়ালে ওদের একলা ছেড়ে পালিয়েছে।

কিছুক্ষণ মৌন থেকে নিস্তব্ধতা ভেঙে অনিমেষ বলে ওঠে-“তোমায় একটা কথা বলি কিছু মনে করো না প্লীজ…।, আচ্ছা তোমার জীবনে কেউ কি কখন ছিল না?”

-“না, ছিল না।”

– “তোমার মত সুন্দরীর জীবনে সত্যিই কেউ ছিল না? না কি আড়াল করছো?”

– “কেন আড়াল করবো? তাও আপনার কাছে!”

– “তার মানে তুমি ভার্জিন! সতীচ্ছদ ঠিকই আছে এখনো?”

হঠাৎ এই অপ্রাসঙ্গিক অনৈতিক কথাটা হাসির ছলে বললেও খুবই কর্কশ লেগেছিল কাবেরীর। সেটা হয়তো অনিমেষ অনুভবই করতেই পারেনি।

কাবেরী একটু রেগেই বলল -“সে কথা আমি কখন বললাম?”

আবার মুচকি হাসতে হাসতে- “তুমি ভার্জিন অথচ সতীচ্ছদ ছিন্ন হয়ে গেছে তাহলে…. ?”

এই কথা কাবেরীকে আরও ক্ষুদ্ধ করেছিল সে একপ্রকার রেগেই বলে ওঠে “সতীচ্ছদ ছিন্ন হলেই  কুমারীত্ব নষ্ট হয় বুঝি? এই ধারণা নিয়ে আপনি বেঁচে আছেন, এই শিক্ষা আপনি কোথায় পেলেন? আপনি কারও সাথে সহবাস করেন নি কখন?”

-‘রাগ করোনা! একটু আস্তে বল বাইরে শুনতে পাবে।(একটু ভীত হয়ে )…… না আমি করিনি কখনো!”

-“প্রমাণ দিন!”

-“প্রমাণ!মানে?” চমকে উঠে বলে অনিমেষ।

কাবেরী যুদ্ধংদেহী ভাব নিয়ে –“মানে কিছুই না, আপনি দেখান আপনারটা ঠিক আছে কিনা দেখবো” ।

অনিমেষ লজ্জায় মাথা নত করলো, সারা শরীর থেকে ঘাম ঝরতে লাগল। এমন পরিস্থিতির জন্য সে কোনভাবেই তৈরি ছিল না। চিন্তায় পড়ে গেল কার পাল্লায় পড়েছি! কোন পাপে, কি জানতে, কি জিজ্ঞাসা করে বসলাম? আর এখন কি বিপদেই না পড়েছি! অনিমেষের এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা।

-“কি ভাবছেন ?… দেখান!” ঘোমটা মাথা থেকে ফেলে একটু মুডি ভাব নিয়ে বলে কাবেরী।

-“কি দেখে বুঝবে তুমি? বোঝার কোন উপায় আছে?” একটু ভীত শান্ত নমনীয় সুরে বলে ওঠে।

-“আছে অবশ্যই আছে, আপনারা পুরুষত্বের বড়াই করেন যে সম্পদ নিয়ে, তার বর্ধিত ত্বকের সঙ্গে যে উপ শিরাটি থাকে- আমি তো জানি সেটা সহবাসেই ছিন্ন হয়। দেখি আপনার সেটা ঠিক আছে কি না ! না কি আগেই দড়ি ছিঁড়ে সমুদ্রে জাহাজ ডুবিয়েছেন।

-“এটা কেমন কথা! ছিন্ন মানে তো এই নয় যে আমি ভার্জিনিটি নষ্ট করেছি বা জাহাজ ডুবিয়েছি । সে তো বহুকাল আগেই বাল্য কু-অভ্যাসের দোষে ছিন্ন হয়েছে।”

-“ও আচ্ছা! ছিন্ন! মানে আপনাদের বেলায় নয়……, শুধু আমাদের ক্ষেত্রেই হয়….? সেটা বাল্য কু-অভ্যাসে হয়েছে…., আর আমাদের সে অভ্যাস থাকতে নেই তাই তো ….? আমরা রক্তে মাংসে তৈরি নই তাই না?  আমাদের সাধ আহ্লাদ ইচ্ছা চাহিদা থাকতে নেই! থাকলেই সব শেষ। আপনারা দশ জনের সাথে শরীর ভাগ করলেও গঙ্গোত্রী গোমুখের পবিত্র জল! আর আমাদের মেয়েদের এক বারেই নর্দমার কীট। আমাদের হাজারো কারণ থাকে সতীচ্ছদ নষ্ট হওয়ার, তার মানে এই নয় ভার্জিনিটি শেষ । তবে আপনাদের ক্ষেত্রে কু-অভ্যাসে যদি না হয় তবে ওই একটাই পথ বাকি থাকে।”

কথা বেশ সশব্দেই হয়েছিল বাইরে থেকে কেউ শুনছিল কি না বোঝার উপায় নেই।

এর পর একটু থেমে গম্ভীর হয়ে আবার বলে ওঠে, আপনি যে মানসিকতা দেখালেন তাতে আর আপনার সাথে থাকা যাবেনা ।

কাবেরী ফোনটা হাতে নিয়ে… আমি ক্যাব ডাকছি এখনই বেরিয়ে যাবো। আর সারা জীবন আপনি কৈফিয়ত দিতে থাকবেন কেন বৌ বেরিয়ে গেল ফুলশয্যার রাতে ।

কাবেরী বিছনা থেকে নেমে দাঁড়াতেই অনিমেষ প্রবল অস্বস্তির মধ্যে পড়লো। কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না, এমন প্রসঙ্গ তুলে সেও লজ্জিত। আর এই রাতে যদি সত্যি সত্যিই ও বেরিয়ে চলে যায়! তাহলে সমাজে আর মুখ দেখানোর কোন উপায় থাকবে না। অতএব যা হোক করে কাবেরীকে শান্ত করতে হবে। অনিমেষ কান ধরে, নাক ধরে ক্ষমা চাইতে লাগল- “কাবেরী প্লীজ রাগ করোনা আমার ভুল হয়েছে, এই রাতে তুমি কোন আর অঘটন করোনা প্লীজ……………!”

অনিমেষের এই কাকুতি মিনতি বেশ ভালোই উপভোগ করছে কাবেরী। মনে মনে সে হাসছে ওর অসহায়তা দেখে। কিভাবে একজন শিক্ষিত পুরুষ লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠছে এবং করুণ সুরে আবেদন নিবেদনের মাধ্যমে অনুশোচনা প্রকাশ করছে। কাবেরী কোন রকম সাড়া না দেওয়ায় অনিমেষ আকস্মাৎ  সামনে ঝুকে পায়ে ধরে মাফ চাইতে গেলে কাবেরী অসম্ভব লজ্জিত হয়ে পড়ে।

সে তৎক্ষণাৎ অনিমেষের হাত দুটো ধরে ফেলে – “এ আপনি কি করছেন? আপনি তো আমায় আরও লজ্জিত করে তুলবেন দেখছি! আমি কোথাও যাচ্ছি না! প্লীজ আপনি শান্ত হন… ভয় পাবেন না.. উঠে দাঁড়ান!” অনিমেষ উঠে দাঁড়াতেই “আমার দিকে তাকান, আমায় দেখুন.. একটু মজা করলাম আপনার সাথে, যাতে এই রাতটা আমাদের স্মরণীয় হয়ে থাকে।”

লজ্জা ও গ্লানিতে অনিমেষের সাড়া শরীরে চোরা ঘাম বইছিল, কাবেরীর নরম সুরে তা কিছুটা স্তিমিত হয়, সেই মুহূর্তটা অনিমেষের নাক মুখে বিনত বিনম্র ভাব ফুটে ওঠে।

কাবেরী অনিমেষকে একটা প্রণাম করে জড়িয়ে ধরে বলে ওঠে, “আপনি বড্ড ভালো মানুষ, যাদের পাল্লায় পড়ে আমাকে নত করতে চেয়েছিলেন- তাদের সকালে বুক ফুলিয়ে বলবেন বিড়ালটা আপনি মেরেই ফেলেছেন। অনিমেষের জড়তা হয়তো তখনও কাটেনি সে নির্বোধ বালকের ন্যায় কাবেরীর বাহুডোরে নিশ্চল ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে।

কাবেরী একটি চুমু দিয়ে অনিমেষকে ছেড়ে দিয়ে বিছনায় শুয়ে বলে ওঠে- “এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে রাত রাগ করে চলে যাবে, রাতেরও তো কিছু ইচ্ছা অনিচ্ছা আছে! আমাদেরও তো এগোতে হবে…..!”

Exit mobile version