নিঃশব্দ মরন
-দিপালী পাল
লাল লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল থোকা থোকা ফুটে আছে সবুজ পাতার গায়ে,
সাঁওতালী কিশোরী মেয়েটা সে ফুল কুড়িয়ে মালা বানিয়ে পরেছে গলায়!!
কালো রূপসী মেয়েটা ফুল ফুটলে খুব আনন্দ পায় চলে যায় গাছের কাছে–
পাশেই হলুদ রঙের ফুলে ভরা একখানা মিষ্টি রাধাচূড়া আছে।
মেয়েটা গাছে বসা পাখীদের সাথে বিড় বিড় করে কথা কয় ,
ও পাখী দেখতো কেমন লাগছে আমায়??
পাখীদের রাজা ওকে হেসে হেসে বলে,
এই মেয়ে এদিকে এসো দেখো আর ও কতো ফুল পড়ে আছে গাছের তলে!!
লাগাও না কেনো তোমার ঐ কোঁচকানো সুন্দর কালো কুচকুচে চুলের খোঁপায়!!
সাঁওতালী মেয়েটা একথা শুনে ভ্রু কোঁচকায়,
মন লাগেনা,উড়ু উড়ু উদাস হয়ে চোখ বোজে-
আকাশের দিগন্তে মুখ তুলে সারাক্ষন কি মাটিতে যেন খোঁজে,
গাছের নিচে মাটির বুকে লালকৃষ্ণচূড়া আর হলুদ রাধাচূড়া মিলে মিশে অপূর্ব সে রূপ,,
সেই ফুলে মেয়েটি সাজে অপরূপ সাজ,লালে হলুদে সেজেছে ফুলের সাজ!!
ফুল যেন ওর জন্য ফুটেছিল গাছে-
এমনি ভাবেই রোজ মেয়েটি গাছের ফুল তুলে সাজে,,
মেয়েটা খালি ভাবে এ ফুলেরা কেনো এত সুন্দর দেখতে??
ফুল আর পাখীদের সাথে তার নিবিড় বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে,
একদিন কতগুলো লোক হঠাৎ এসে সে সুন্দর ফুলে ভরা গাছ দুটোকে গোড়া থেকে কেটে দিয়ে গেল,
ইট বালি ফেলে দিয়ে গেল কিছুটা দূরে পাঁচিলের গায়ে,
সবাই বলা কওয়া করে একটা ফ্ল্যাট বাড়ি উঠবে নাকি এই জায়গায়!
মেয়েটা অঝোরে ভীষন কাঁদলো সেদিন,
তারপর থেকে,
একটা পাখীও সেখানে আসেনা,
আর সেই মেয়েটা?
নাঃ সে দিকে একদম আসেনা আর,
ফুল নেই,পাখীরা নেই,মানুষ নেই,
বাঁচা হলনা জীবন কে ভালবেসে সবার সাথে পাশাপাশি রাধাচূড়া আর কৃষ্ণচূড়ার।।