ইচ্ছেপূরণ

ইচ্ছেপূরণ
-বিশ্বদীপ মুখার্জী

ব্যাগ গোছানোর পর্ব শেষের দিকে। এখন শুধু মাত্র একটি ব্যাগ বাকি আছে। বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছে একটা ট্রাক। প্যাকার্স অ্যান্ড মুভার্সের লোকেরা বাড়ির যাবতীয় আসবাব পত্র সেই ট্রাকে তুলে দেওয়ার উদ্যোগ করছে। অর্ণব বেরিয়েছে, গেছে বাজার। পথের জন্য কিছু খাবার কিনতে। নীলাঞ্জনা গত রাত থেকেই ব্যাগ গোছাতে ব্যস্ত। এবার মেদিনীপুর। বিগত ষোলো বছরে এই নিয়ে পাঁচ বার বদলী হলো অর্ণবের। এর আগে কৃষ্ণনগর, দুর্গাপুর, মালদা ঘোরা হয় গেছে নীলাঞ্জনার, অর্ণবের বদলীর সুবাদে। মালদা থেকে যখন অর্ণবের বদলী হয়, তখন নীলাঞ্জনার মনটা একটু ভালো হয়েছিল। হয়তো নতুন শহরের নামটা শুনে। নীলাঞ্জনা বহু দিন আগে গিয়েছিল মিরিক। কতো বয়স ছিলো তখন তার? খুব বেশি হলেও ষোলো কিম্বা সতেরো। প্রায় কুড়ি বছর পর আবার সে যাচ্ছিল মিরিক। ভেবেছিল, পুরনো স্মৃতি ফিরে পাবে। কিন্তু ফিরে পেলো কি?
বাইশ বছর বয়স ছিল নীলাঞ্জনার যখন তার বিয়ে হয় অর্ণবের সাথে। অনিচ্ছা সত্বেও তাকে করতে হয়েছিল বিয়ে। তার বাবা বলেছিলেন- ‘ভালো পাত্রের অভাব। এই অভাবের বাজারে ভালো পাত্র পেয়েছি। হাতছাড়া কি করা যায়? ছেলে ভালো পরিবারের। ব্যাংকে কাজ করে। অসম্ভব, এই পাত্রকে হাতছাড়া করা অসম্ভব!’
নীলাঞ্জনার জিদ প্রবল। কিন্তু নিজের বাবার অসুস্থতার সামনে নিজের জিদকে ধরে রাখতে পারলো না সে। জীবনের পথে এগোতে-এগোতে সে ভুলে গিয়েছিল নিজের ইচ্ছা, আকাঙ্খার কথা। পারিবারিক ঝামেলা, অশান্তির মাঝে নীলাঞ্জনা হারিয়ে ফেলেছিল নিজেকে। আজ শেষ ব্যাগটা গোছাতে গিয়ে আবার থেকে নিজেকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করলো সে। শেষ ব্যাগে আছে শুধু ডায়েরি। ডায়রির প্রতিটা পৃষ্ঠা নীলাঞ্জনার হাতের লেখায় সুসজ্জিত। মোট দশটা ডায়রি ছিলো, এখন বেঁচে আছে মাত্র ছ’টা। লেখা ছেড়ে দিয়েছিল নীলাঞ্জনা। লেখার মতো পরিস্থিতি ছিলো কি তার জীবনে? বিয়ের পর অর্ণব কোনও দিন শুনতে চায়নি তার লেখা কবিতা। যখনই নীলাঞ্জনা কবিতা শোনাতে গেছে, অর্ণবের একটি কথা সে শুনেছে – ‘ঘুম পাচ্ছে। পরে শুনবো।’
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই কোলে ছেলে এলো নীলাঞ্জনার। নিজের শখ, আহ্লাদ, ইচ্ছে সব বিসর্জন দিয়ে লেগে পড়লো সংসার ধর্মকে নিখুঁত ভাবে পালন করতে। তার একটি মাত্র স্বপ্ন ছিলো, ছেলেকে নিজের মতো করে মানুষ করা। ছেলেকে আঁকড়ে ধরে রাখতে অদ্ভুত তৃপ্তি পেতো সে। ভুলে যেত নিজের যাবতীয় যন্ত্রণার কথা। কিন্তু বেশি দিন ছেলেকে আঁকড়ে রাখতে পারলো কই নীলাঞ্জনা? তখন তারা দুর্গাপুরে ছিলো। এক রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে অর্ণব নীলাঞ্জনাকে বলল- ‘নীলা, আমাদের ছেলের ভবিষ্যৎটা এবার ভাবতে হবে। আমার বদলীর চাকরী সে তো তুমি দেখছই। আজ এখানে তো কাল ওখানে। বারবার ছেলের স্কুল যদি চেঞ্জ হয়, তাহলে ক্ষতি হবে ওর।’
‘তাহলে?’ ভয়ার্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো নীলাঞ্জনা।
‘আমি একটা উপায় ভেবেছি। ছেলেকে বোর্ডিংএ দিয়ে দিই। ছেলের মধ্যে ট্যালেন্ট আছে। মানুষ হয়ে বেরোবে সেখান থেকে।’ অর্ণব বলল।
অজান্তেই দু’ চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়েছিল নীলাঞ্জনার। সে জল হয়তো দেখতে পারেনি অর্ণব। নীলাঞ্জনাও বলতে পারেনি নিজের মনের কথা। সে বলতে পারেনি, যে তার জন্য বেঁচে থাকা দুস্কর হয়ে যাবে পাশে ছেলে না থাকলে।

বলতে চেয়েছিল অনেক কিছুই সে। কিন্তু যদি কেউ শোনার না থাকে, তাহলে মুখ থেকে বেরোনো বাক্য শূন্যে ভেসে নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলে। সেটাই হয়েছিল নীলাঞ্জনার সাথে। মিরিকে দু’টো ঘরের ছোট্ট একটা বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল অর্ণব। বিয়ের পর এই ‘ছোট্ট’ বাড়ি যেন কাল হয়ে উঠেছিল নীলাঞ্জনার জন্য। প্রতি মুহূর্তে মনে হতো কেউ যেন তার গলা টিপছে, শ্বাসরোধ হয়ে যাচ্ছে তার। নীলাঞ্জনার বাবার বাড়ি বিরাট। তার বাবা বলতেন – ‘আজকালকার এই সব ফ্ল্যাট হলো দেশলাইয়ের ডিবে। সেখানে আবার থাকা যায় নাকি?’
বিশাল বাড়ি থেকে অবশেষে ‘দেশলাইয়ের ডিবে’ তেই থাকতে হলো নীলাঞ্জনাকে।

মিরিকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণনা কলমের মাধ্যমে করা অন্তত আমার পক্ষে সম্ভব নয়। চারিদিক দিয়ে পাহাড়ে ঘেরা অদ্ভুত সুন্দর এক শহর মিরিক। অর্ণব যেখানে ভাড়া বাড়ি নিয়েছিল সেখান থেকে অল্প একটু দূরেই ছিল বেশ বড় দু’তলা এক বাড়ি। অর্ণবের ব্যাংক বেরিয়ে যাওয়ার পর নীলাঞ্জনা প্রায় বাজার যেত। বাজার যাওয়ার পথেই পড়তো সেই বড় বাড়িটা। বাড়িটার দিকে খানিক হাঁ করে তাকিয়ে থাকতো সে। দেখতো, দু’তলার বিশাল বারান্দাটাকে। হ্যাঁ, বারান্দা…. নীলাঞ্জনার বহু সুপ্ত ইচ্ছের মধ্যে একটা হলো, নিজের বাড়িতে যেন এক বড় বারান্দা হয়। বারান্দা চিরকাল তার প্রিয়। তার বাপের বাড়িতে ছিল বারান্দা। সেই বারান্দাতে বসেই নিজের প্রথম কবিতা লিখেছিল সে। সালটা ছিল ১৯৯২। সত্যজিৎ রায়ের অস্কার পাওয়ার উপলক্ষ্যে নিজের প্রথম কবিতা লিখেছিল নীলাঞ্জনা। সে সব ঘটনা এখন অতীত। এখন কোথায় বারান্দা আর কোথায়ই বা কবিতা? রোজ সেই বাড়িটার দিকে তাকিয়ে, হৃদয়ে ব্যাথার পাহাড় নিয়ে নিজের ছোট্ট বাসায় ফিরে আসে সে।

দিনটা ছিল সোমবার। অর্ণবের নিজের কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পর নীলাঞ্জনা নিয়ম মতো যথাসময় বাজারের ব্যাগটা হাতে নিয়ে রওনা দিলো। সেই বড় বাড়িটার কাছে আসতেই সে দেখলো একটা অল্প বয়সী মেয়ে সেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাজারের রাস্তা ধরে এগিয়ে চললো। তার হাতেও বাজারের ব্যাগ। হয়তো নীলাঞ্জনা নিজেও জানে না কেন তার সেই অপরিচিতার সাথে আলাপ করার ইচ্ছে হলো। বাজারে কিছু কেনাকাটা করার পর ফেরার পথে সেই অপরিচিতার সাথে আলাপ করলো নীলাঞ্জনা। মেয়েটির নাম – তিয়াসা।
‘কিছু দিন ধরেই আপনাকে দেখছি। রোজ আপনি এই সময়ই বাজার আসেন। নতুন এসেছেন নাকি?’ নীলাঞ্জনাকে জিজ্ঞেস করলো তিয়াসা।
‘প্রায় দশ দিন হলো। আমার বর ট্রান্সফার হয়ে এখানে এসেছে। ব্যাংকে কাজ করে।’ নীলাঞ্জনা জবাব দিলো।
বেশি সময় লাগলো না তাদের মধ্যে আলাপটা জমে উঠতে।
অনেক ভাবনাচিন্তা করার পর সে রাতে নীলাঞ্জনা জানতে পারলো তিয়াসার সাথে যেচে আলাপ করার কারণ। সেই বারান্দা। হয়তো এতো দিন পর বারান্দা দেখে নীলাঞ্জনার সেখানে যাওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল। কিন্তু কাকে বলবে নিজের ইচ্ছের কথা সে? অকারণ তিয়াসার বাড়ি সে যেতে পারে না। তিয়াসা যত দিন না নিজে থেকে তাকে নিয়ে যায়, নীলাঞ্জনাকে অপেক্ষা করতেই হবে।

তিয়াসা যাওয়া আসা শুরু করলো নীলাঞ্জনার বাড়ি। কথায়-কথায় সে জানতে পারলো নীলাঞ্জনার কবিতা লেখার কথা। লাফিয়ে উঠল সে।
‘তুমি কবিতা লেখো নীলাঞ্জনা দি?’ কবিতার একটা ডায়েরি নীলাঞ্জনার উরুর ওপরে রাখা ছিল। সেটাকে নিজের হাতে নিয়ে তিয়াসা জিজ্ঞেস করলো।
‘লিখি না রে। লিখতাম এক সময়। জীবনটা নদীর স্রোতের মতো তিয়াসা। যেটা ফেলে দিবি, সেটাই ভেসে কোথায় চলে যাবে। কবিতাকে আমি জীবনের স্রোতে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলাম। সেটা এখন ভেসে বহু দূর চলে গেছে। এতো দূর যে আর ফিরে আসা সম্ভব নয়।’
দু’ একটা কবিতা পড়ে নিজের মনেই পাঠ করতে লাগলো তিয়াসা। তার কবিতা পাঠ এক মনে নীলাঞ্জনা শুনছিল। হঠাৎ নিজের কবিতা পাঠ থামিয়ে নীলাঞ্জনার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে তিয়াসা বলল- ‘আমার কবিতা পাঠ শুনছো? ওই যে তুমি বললে, জীবনের স্রোতে ভাসিয়ে দেওয়া। আমি তো তাই করেছি নীলাঞ্জনা দি। তুমি যেমন কবিতা লিখতে, আমি আবৃত্তি করতাম। আমার এক আবৃত্তি শুনবে?’
‘শুনবো।’
নীলাঞ্জনার লেখা কবিতার ডায়েরি থেকে একটা কবিতা বের করে আবৃত্তি করতে শুরু করলো তিয়াসা-

“এমন করে সব কিছু উজাড় করে দেবো
ভাবিনি কখনও….
বুকের ভিতর শব্দরা এমন প্রজাপতির মত
পাখা মেলে দেবে স্বপ্নেও দেখিনি কখনও,
আমার যা দেওয়ার সব করেছি সম্পন্ন।
এবার তোমার পালা….
কেমন করে মিশে যাবে আমার সাথে,
কেমন করে ভালোবাসার মোহনা গড়বে….
যে সময় কখনও থমকে যায় না, সেও কি ভাবে
থমকাবে, চমকাবে, অবাক চোখে দেখবে….
তার হিসেব না হয় তুমি রাখো।
আমি শুধু এ সবের ঊর্ধ্বে যেতে চাই….
তোমার মনের ঈশান কোণের সব মেঘ
দূরীভূত হোক,
ফুটে উঠুক নতুন সূর্য হৃদয়ের সাগরের তীরে।”

তিয়াসার আবৃত্তি শেষ হওয়ার পরেও নীলাঞ্জনা মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে রইল তার দিকে।

তিয়াসা এক দিন নীলাঞ্জনাকে বলেছিল নিজের কাহিনী।
‘চার বছর হয়ে গেল আমাদের বিয়ের। গত দু’ বছর ধরে আমি নিজের বাপের বাড়িতে। মাঝে মাঝে ভাবি, আমি কোনও ভুল করে ফেললাম না তো? সত্যিই কি শুভ্রকে চিনতে ভুল করলাম আমি? বিয়ের আগে কি সব ছেলেরাই বড়-বড় কথা বলে? আমি কোনও দিন শুভ্রকে বলিনি যে নিজের মায়ের বিরুদ্ধে যেতে। তুমি বিশ্বাস করবে না নীলাঞ্জনাদি, শুভ্রর মা বোধহয় পৃথিবীর এক মাত্র মহিলা যে মেয়ে পছন্দ করে না। নিজের এক ছেলে, তাই তার ছেলেরও যেন ছেলেই হয়। আমার গর্ভে মেয়ে সন্তান থাকার কারণে যে দিন জোর করে আমার গর্ভপাত করানো হলো, সে দিন আমি আর সহ্য করিনি। সব ছেড়ে চলে এলাম এখানে।’
‘কিন্তু তারা বুঝলো কী করে যে তোমার গর্ভে কন্যা সন্তান আছে? এটা তো ইল্লিগাল।’ বিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করলো নীলাঞ্জনা।
কটাক্ষের মৃদু হাসি হেসে তিয়াসা বলল- ‘ওদের টাকার জোর আছে দি। টাকা দিয়ে সব হয়। আমার দুঃখ এখানেই যে আমাকে চলে আসতে দেখেও শুভ্র কিছু বলল না। আমি রোজ তার অপেক্ষা করি। আমার বিশ্বাস সে এক না এক দিন নিশ্চয়ই আসবে।’

নিজের মনের কথা কোনও দিন কাউকে খুলে বলতে পারেনি নীলাঞ্জনা। এই কিছু দিনে তিয়াসার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠা সত্বেও সে এটা বলতে পারেনি যে, তিয়াসার বারান্দাতে সে এক বার হলেও যেতে চায়। সে বারান্দায় গিয়ে দেখতে চায় সূর্যোদয় অথবা সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য। পাহাড় যে ওর বড় প্রিয়। পাহাড়ের পিছন থেকে উদয়ের ও অস্তের সূর্য দেখতে যে ওর ভীষণ ভালো লাগে। অচিরেই মনের ভিতর কিছু শব্দরা দাপাদাপি করে সৃষ্টি করে ফেলে এক নতুন কবিতার। যখনই নীলাঞ্জনা তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যায়, সেই বারান্দাটা যেন হাত ছানি দিয়ে ডাকে তাকে।
হঠাৎ এক দিন তিয়াসার বাড়ি যাওয়ার সুযোগ হলো নীলাঞ্জনার। তিয়াসা এসে নীলাঞ্জনাকে বলল – ‘সামনের বুধবার আমার জন্মদিন নীলাঞ্জনা দি। যবে থেকে জীবনে এমন ঘটনা ঘটেছে, জন্মদিন পালন করা ছেড়ে দিয়েছি। এবারও কাউকে ডাকছি না। শুধু তুমি। তোমার সাথে মনের মিল পেয়েছি নীলাঞ্জনাদি।’

নীলাঞ্জনার উৎসাহের অন্ত নেই। অর্ণবের ব্যাংক বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকেই মনের ভেতর যেন অদ্ভুত ব্যাকুলতার সৃষ্টি হয়েছে। আজ বহু দিন, বহু বছর পর সে কোনও এক বারান্দায় পা রাখবে। তাহলে কি আজ দীর্ঘদিন পর নতুন কবিতার সৃজন করতে পারবে সে? সূর্যোদয়টা আর দেখা হলো না, কিন্তু সূর্যাস্ত দেখার প্রবল ইচ্ছে আছে তার মনে। মনের খুশিতে গুনগুন করে গান গাইতে-গাইতে সে তৈরি হচ্ছিল ঠিক সে সময় তিয়াসার গলার আওয়াজ শুনতে পেলো সে। তিয়াসা দরজা পেটাচ্ছে আর বলছে – ‘নীলাঞ্জনাদি, দরজা খোলো। এক ভালো খবর আছে।’
নীলাঞ্জনা দৌড়ে গিয়ে তৎক্ষণাৎ দরজা খুলতেই তিয়াসা তাকে জড়িয়ে ধরে বলল- ‘সে এসেছে নীলাঞ্জনাদি, সে এসেছে। আজ সকালেই এসেছে আমাকে নিতে। আমি তোমায় বলেছিলাম না, যে আমার বিশ্বাস সে এক না এক দিন ফিরে আসবেই। আমার বিশ্বাসে কোনও ভুল ছিল না দি, কোনও ভুল ছিল না। কিছুক্ষণ পরেই আমি বেরিয়ে যাবো দি।’
খবরটা সত্যি খুব আনন্দের। কিন্তু নীলাঞ্জনার মনের আনন্দ হলো কি? হলো। সে ভালোবাসত তিয়াসাকে। তিয়াসার খুশি তে সে আনন্দিত হবে না সেটা কি হয়? কিন্তু মনের ভেতর কোথাও না কোথাও বিষাদের কালো রেখা নিজের দাগ কেটেই দিলো। আর হয়তো এ জীবনকালে কোনও দিন কোনও বারান্দায় যাওয়া হবে না। কোনও দিন হয়তো আর কবিতার সৃষ্টি হবে না।

জানালার দিকে এক দৃষ্টে চেয়েছিল নীলাঞ্জনা। হঠাৎ নিজের কাঁধে কারো স্পর্শ পেয়ে সংবিৎ ফিরে পেলো। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল পিছনে দাঁড়িয়ে আছে অর্নব। নীলাঞ্জনার কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে গিয়ে বলল – ‘তোমাকে একটা কথা তো বলাই হয়নি। এবার যে ভাড়া বাড়িতে আমরা যাবো, সেটা দু’তলায়। আর সেখানে বারান্দা আছে।’

সমাপ্ত।

গল্পে উল্লেখিত কবিতাটির জন্য কবি পারমিতা ভট্টাচার্য কে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Loading

Leave A Comment