দুই মুঠো বালু
-রীণা চ্যাটার্জী
ক্লেদ রক্ত মাখা জন্মানোর উপলক্ষে, মুঠো
হাতে ধরা দুই মুঠো ভিজে বালু, নাভি সুতো
বেঁধে দেওয়া জন্মসূত্রে। কালের প্রয়োজনে
ভাগ্য রেখা, কর্ম রেখা দেবে দেখা ক্রমে দিনে।
প্রথম আলোর উন্মেষে আত্মহারা আকাঙ্খায়,
সব ভুলে যাই আশা ভরা শৈশবের তরুছায়ায়।
মাতৃ ক্রোড়ের পরম স্নেহের সেই একান্ত আশ্রয়ে
মায়াবী মেঘলা রোদ্দুর মেখে নিতে সারা গায়ে।
আহ্লাদী প্রাণে, দুধের ঘ্রাণে বন্দী বালু মুঠোয়
ভিজেই থেকে যায়.. শুধুই বিশ্বাসী নির্ভরতায়।
হাতছানি দিয়ে ডেকে গেল চঞ্চল কৈশোর
ছুটে গেলাম ধরে নিতে প্রথম কাকলি ভোর।
উঁকি দিয়ে দেখি অজান্তে মুঠো বালু রোদ্দুর
মেখে নিয়ে ঝকঝকে, বলে- শুরু হোক কর্মের।
ভালো লাগা, উৎসুকতা, কিছু সাথী বাল্যের
শীতল পাটি সযত্নে পাতি যোগটুকু সময়ের।
বেড়ে চলে দিন আগে, সূর্যের আনাগোনায়,
দুই মুঠোই যায়..খুলে যায় নিয়মের বাধ্যতায়।
ঝকঝকে বালু পাড়ে কর্ম-ভাগ্য মাতে ব্যস্ততায়,
যৌবনও এসে ধরে হাত তার উদ্দাম ঘোষণায়।
‘একান্ত-আপন’ খোঁজে ভালোবাসার ব্যঞ্জনায়
ফুলের বাসর সাজে জীবনের বালুকাবেলায়।
দ্রাঘিমা-অক্ষ, আহ্নিক-বার্ষিক সাথে মিলেমিশে,
সম্পর্ক, প্রিয়জনের আল্পনায় আঙিনা যেন হাসে।
তবু ও মনে অলক্ষ্যে কোথাও বিষাদের সুর ভাসে,
চাওয়া-পাওয়া সবটুকুই যে গণিতের আঁক কষে!
ইচ্ছে, স্বপ্ন, না বলা কথারা দিগন্তে গিয়েছে মিশে,
অভিজ্ঞতায় তপ্ত, ভিজে বালু শুষ্ক মরু হয় শেষে।
শৈশবের মিঠে রোদ আজ ধোঁয়াশার মতো লাগে,
মনে পড়ে সব, স্মৃতির চমকে দুই মুঠো খুলি আগে!
শুষ্ক ঝরঝরে হয়ে ভিজে বালু পড়ে এসে কোলে,
খালি হাতে আয়ুরেখা হেসে, সমাপ্তির সুরে দোলে।
কাব্যের মাধুরতায় এক অসাধারণ জীবন বোধ ব্যক্ত করেছেন।
ধন্যবাদ বন্ধু
দারুন শৈল্পিক ভাবনা
ধন্যবাদ ভাই
অসাধারণ।
ধন্যবাদ বন্ধু
অসাধারন লেখা, দারুন জীবনদর্শন, খুব সুন্দর উপলব্ধি।
ধন্যবাদ দিদি