শব্দসন্ধান
-রুদ্র প্রসাদ
আঁকিবুকির ফাঁকে লুকানো কত মায়া,
পলে-অনুপলে বাহারের অনুপম কায়া!
আলোর খোঁজে উৎসাহ মুক্তবেগে ধায়,
নষ্ট আয়াস কৌতুকাবহে শূণ্যে মিলায়।
চমকে দমকে ভীত অন্তরে খাণ্ডবদাহন,
কল্পমায়ায় হরষে-বিষাদে মধুর সমাপন!
খামখেয়ালী আঁচড়ে গুমরায় কাতরতা,
অবহেলা দীর্ঘায়িত, হতশ্রী মৌনমুখরতা।
এলোমেলো ভাবনায় বয় ভাবহীন রেশ,
খটোমটোর মিছিলে প্রাণহীন অবশেষ!
বেড়াজালে আটকে হারিয়ে গেছে শব্দ,
খালি পাতা বলে ‘হ’ল তো কেমন জব্দ’।
যদিও বা আসে কখনো লয় আর ছন্দ,
খাগ রসকষহীন, কভু ছিল কিনা সন্দ!
আপনাতেই সুরাসুর, ভাবনারা বেয়াড়া,
মুখবন্ধ পেরিয়ে হ’তে চায় লাগামছাড়া।
মনের মাতন চাষার মতন, সঞ্চারী প্রাণ,
স্বপন আর জাগে কবে হ’তে আগুয়ান?
শতমুখী কত পথে বিচরণ পৃথিবী ’পরে,
দেখা ফিরে আসে যদি ভারে আর ভরে।
আনমনা মাথায় কাজ করে কোন বোধ?
সুযোগ বুঝে উঁকি দেয় অসীম অনুরোধ!
ভুলে ভরা সব হেঁয়ালি, জরাগ্রস্ত নিষেক,
নড়াচড়া ক্ষীণ, আকুতিনামায় অভিষেক।
দোদুল দোলে সেথা ভোলে নাকো ভবী,
আবছায়া মুকুরে ভাসে ক্লান্ত ছায়াছবি!
ব্যোমযান পরিহাসে হাসে, নতমুখী নায়,
মরা গাঙে বানের ডাক সুধা আঙিনায়।
হয়তো কখনো আবার আসর সাজবে,
মন কেমনের সুরেলা ওঠাপড়া বাজবে।
একলহমায় উড়ে যাবে কুটো আর খড়,
টলমল লেখনী তুলবে তৃষিত বুকে ঝড়।
বয়ান হবে অনুপুঙ্খে স্বতঃ সালতামামি,
নীরবতা সোচ্চারে দেবে বাঙ্ময় সেলামী।
সৃষ্টিসুখ আবেশীয় তানে বিভোর নিদান,
সফল হবে সামান্য কলমের শব্দসন্ধান।।