কবিতা

কবিতা- দৈনিক

দৈনিক
-অযান্ত্রিক

তুমি হয়তো বুঝতেই পারবেনা,
যেহেতু হলুদ শহুরে আলোর বন্যায় সেভাবে ভাসোনি কোনোদিন।
যদিও ,তোমার শহর বড় প্রাচীন আর মানবিক,
আকাশের সাথে কথা বলা ইমারত,কালো দীর্ঘতম রাস্তায় সন্ধ্যা ক্ষণস্থায়ী।
দিনের কারখানার ছুটির বাঁশি বাঁজলে,ঝুপ করে ডুব দেয় সূর্য,
যেখানে পাশের আগ্রহী বাতিস্তম্ভ থেকে হলুদ আলোর মতো আলগোছে চুয়ে পরে রাত।
ঘামে ভেজা রুমালেরা কি আর করে ,হয় বাস ধরতে ছোটে অথবা ট্রেন।
আলো আধারী রাস্তা,ব্যাস্ত রেস্তরাঁর পাশে জেগে ওঠে চামড়ার বাজার,
বিক্রেতার চটুল অথচ সন্ত্রস্ত চাউনি খুঁজে যেতে থাকে ক্রেতা ,রাতের আস্তিনে।
খাঁকি টহলদারী গাড়ি জানিয়ে দিয়ে যায় বিধানের দাম,
ঠিক তক্ষুণি, শান্ত মুঠোফোন জেগে ওঠে জানতে চায়,
”কি গো আসছো কতক্ষণে,ফেরার সময় মেয়ে স্কুলের টিফিনের কিছু নিয়ে এসো”
আরশহুরে ব্যাস্ত বাস ট্রাম,সেই কথা গুলোকে ,পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে বলে যায়,
“এ শহরে তোমার কোনো বাড়ী নেই”

হলদেটে আশ্বাসে রাস্তার বাতিস্তম্ভ গুলো সায় দিয়ে বলে,
“ভয় পেও না,যতক্ষণ না তুমি এই শহর থেকে দূরে চলে যাচ্ছো,ততক্ষন এই সন্ধ্যে বেঁচে থাকবে”
আর আমরা,যারা রোজ প্রয়োজন ঘাড়ে করে জীবন পিষে তৃপ্তির তেল বার করি,
তারা সেই আশ্বাস ,বুকে করে দূরের কোনো ছোট্ট স্টেশনে গিয়ে নামি।
আর একটা মধ্যবিত্ত সাইকেল ,হাত ধরে নিয়ে যায় একটা দরজার সামনে,।
হয়তো তার ওপরেই অপেক্ষায় আছে ,জল ভর্তি একটা গ্লাস,
রাতের খাবার বুকে নিয়ে একটা থালা,ডালের বাটি,
উদগ্রীব দরজার কড়া যেনো বলে ,এসো আমায় ছুঁয়ে জানিয়ে দাও তুমি এসেছ ফিরে।
আর সেটা করতেই ,একটা শব্দ জানান দেয়,
“কে, খোকা এলি, এত দেরী হলো”

Loading

Leave A Comment

You cannot copy content of this page